Image description

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রবিবার মধ্য গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আগে কখনো অভিযান না চালানো এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে আসন্ন পদক্ষেপ নেবে বলে সতর্ক করেছে তারা। 

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদরাই এক্সে বলেছেন, ‘দেইর এল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দা ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অবিলম্বে সরে যাওয়া উচিত। ইসরায়েল দেইর এল বালাহর আশেপাশে অভিযান সম্প্রসারিত করছে।

নিজেদের নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণে ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের আল-মাওয়াসি এলাকার দিকে সরে যান।’

২২ মাস ধরে চলা যুদ্ধে, উপকূলীয় অঞ্চলের বিশাল অংশ জুড়ে বারবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সরে যাওয়ার নির্দেশে গাজার প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অন্তত একবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ জানুয়ারিতে বলেছিল, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উপর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারগুলো বলেছে, তারা আশঙ্কা করছে, ইসরায়েলি হামলার সম্প্রসারণ তাদের প্রিয়জনদের ক্ষতি করতে পারে।

একটি প্রচারণা গোষ্ঠীর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, তারা ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে জরুরিভাবে ইসরায়েলি নাগরিক ও পরিবারগুলোকে যুদ্ধ পরিকল্পনা কী ও এটি কীভাবে গাজায় অপহৃতদের সুরক্ষা দিবে তা ব্যাখ্যা করার আহ্বান জানিয়েছে।

গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা রবিবার এএফপিকে জানিয়েছে, রাতভর ইসরায়েলি হামলায় গাজা শহর ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশে কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছে। 

ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিরা গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও ১০ জন জিম্মির মুক্তির জন্য গত দুই সপ্তাহ ধরে পরোক্ষ আলোচনা চালিয়েছে। 

২০২৩ সালে হামাসের হামলার সময় গৃহীত ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে ৪৯ জন এখনো গাজায় বন্দী রয়েছে।

 
যার মধ্যে ২৭ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

ইসরায়েলের অর্থনৈতিক কেন্দ্র তেল আবিবে শনিবার জিম্মিদের পরিবার সমাবেশ করে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বন্দীদের ফিরিয়ে আনা ও যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানায়।

এদিকে, একটি সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় স্থল অভিযান জোরদার করেছে। সেখানে তারা ডজন ডজন সন্ত্রাসী হত্যা করেছে ও শত শত সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে দিয়েছে। বলা হয়েছে, প্রায় ২০ মিটার ভূগর্ভস্থ ২.৭ কিলোমিটার এলাকায় সন্ত্রাসী সুড়ঙ্গ খুঁজে বের করে ভেঙে ফেলা হয়েছে।

সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির এক পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। অন্যদিকে হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮ হাজার ৬৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

 

সূত্র : এএফপি