Image description

জুলাই-আগস্টের বিপ্লব বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৩০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শাস্তি নির্ধারণ কমিটি করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। 

এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে বহিষ্কৃত শিক্ষকদের পক্ষ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন তাদের ঘনিষ্ঠ কিছু শিক্ষার্থী। 

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে আইন বিভাগের বহিষ্কৃত দুই শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহজাহান মণ্ডল ও অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলের পক্ষে প্রশাসন ভবন চত্বরে মানববন্ধন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিবের কার্যালয়ে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এছাড়াও ইংরেজি, আল ফিকহ অ্যান্ড ল এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত শিক্ষকদের পক্ষে আন্দোলনের পরিকল্পনা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, বহিষ্কৃত ফ্যাসিবাদী শিক্ষকরা নিজেদের রক্ষায় শিক্ষার্থীদের সুকৌশলে ব্যবহার করছেন। একইসঙ্গে বিভাগগুলোর সুবিধাভোগী কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থী নবীনদের ভয়-ভীতি ও বিভ্রান্তির মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যানারে আন্দোলনে নামাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগ এখনো ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে সমালোচনা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আহাবুর রহমান অনিক নামে এক শিক্ষার্থী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জাতির বৃহত্তম স্বার্থ তাদের কাছে কিছুই না। ২০০০ শহীদের রক্ত তারা বিভাগের ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য বিকিয়ে দিচ্ছে। সামনের সারিতে ‘আর নয় হেলা ফেলা, এইবার হবে ফাইনাল খেলা’ এই কথা কারা বলেছিল? কিভাবে এদের হয়ে মাফ চাইতে আসে এরা বুঝি না, ভাই!’

এদিকে ইংরেজি বিভাগের বহিষ্কৃত শিক্ষকদের ঘনিষ্ঠ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাশরাফি জিম, ঔশিক আশরাফি ও তানজিলুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আল-ফিকহ অ্যান্ড ল বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নুর-ই-শাহজাদী ঝিনুক, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অলোক দেবনাথ ও রাজিয়া সুলতানাসহ কয়েকজন ওই বিভাগের বহিষ্কৃত শিক্ষকের পক্ষে আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন বলেও সূত্রে জানা গেছে। 

 

গত বছরের ৪ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলনের বিরোধিতা করে মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক সংগঠন ‘শাপলা ফোরাম’। এ মিছিলে আন্দোলনরত বিভাগগুলোর বহিষ্কৃত শিক্ষকদের অনেকে অংশ নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ওই সমাবেশে তারা শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে জুলাই আন্দোলনকারীদের নৈরাজ্যকারী হিসেবে আখ্যা দেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা আরও একটি কমিটি গঠন করবো। সেই কমিটি বিবেচনা করবে কাকে কতটুকু শাস্তি দেওয়া যায়। তবে ফ্যাসিস্টের প্রশ্নে কোন ছাড় হবে না।