
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে তফসিল সংক্রান্ত চূড়ান্ত সভায় বসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রবিবার (২০ জুলাই) সকালে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সভা শুরু হয়েছে। এতে নিরপেক্ষ ছয় কেন্দ্রে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।
নির্বাচন কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রভোস্ট কমিটি, ডিনস কমিটিসহ সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের এতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সভায় জানানো হয়, কেন্দ্রীয়ভাবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ভোটগ্রহণ হবে। সেগুলোর মেধ্যে রয়েছে-
১. কার্জন হল কেন্দ্র (পরীক্ষার হল): (ক) ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল, (খ) অমর একুশে হল, (গ) ফজলুল হক হল।
২. শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র: (ক) জগন্নাথ হল, (খ) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, (গ) সলিমুল্লাহ মুসলিম হল।
৩. ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র: (ক) রোকেয়া হল, (খ) শামসুন নাহার হল, (গ) কবি সুফিয়া কামাল হল ।
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব কেন্দ্র: (ক) বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল, (খ) শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল।
৫. সিনেট ভবন কেন্দ্র (এলামনাই ফ্লোর, সেমিনার কক্ষ, ডাইনিং রুম): (ক) স্যার এ এফ রহমান হল, (খ) হাজী মুহম্মদ মহসীন হল, (গ) বিজয় একাত্তর হল।
৬. উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র: (ক) সূর্যসেন হল, (খ) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, (গ) শেখ মুজিবুর রহমান হল, (ঘ) কবি জসীম উদ্দীন হল।
এবার ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সকল ছাত্রছাত্রীদের অন্তর্ভুক্ত করা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের যেসব শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তারা আসন্ন ডাকসু বা হল ইউনিয়ন নির্বাচনে ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার যোগ্য নন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ডাকসু সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা রাখে।
প্রশ্ন উঠতে পারে, সিন্ডিকেট কি ৪(খ) ও ১৪(ক) ধারা সংশোধন করে মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করা শিক্ষার্থীদের আবার নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ঘোষণা করতে পারে কি না? এর উত্তর হলো, না। প্রশাসনিক আইনের নীতিমতে, এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা সিন্ডিকেটের নেই।
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে গত জুন মাস থেকে ৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় ১৮২ টি সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে লাইটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। মহসিন হল, এফএইচ হল, লাইব্রেরীসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লাইট লাগানো হয়েছে। প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের ভিজিলেন্স বাড়ানো হয়েছে। বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩৮ । ২৪/৭ ভিত্তিতে তারা কাজ করছে। নিরাপত্তা গেটগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ থাকছে। পুলিশের স্ট্যাটিক ফোর্স রাখা হয়েছে।
ক্যাম্পাসের প্রবেশ পথগুলোতে সেনাবাহিনীর টহল বাড়ানো হয়েছে। কবি সুফিয়া কামাল হল, মৈত্রী হলের দিকে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভাসমান দোকান উচ্ছেদ এবং ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় মাদকসহ সকল অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়মিত উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে নিয়মিত বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
ছাত্রলীগের বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে জানানো হয়, তথ্যানুসন্ধ্যান কমিটির তদন্তের আলোকে ১২৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আরো অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।প্রথম দফায় ২৫ জুন পর্যন্ত মাত্র ৬টি অভিযোগ পড়েছে।
এরপর অভিযোগ জমাদানের জন্য ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। শাহবাগ থানায় ২ টি মামলায় তিন শতাধিক অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ ছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল পর্যায়ে ছাত্র লীগের বিভিন্ন কমিটির অভিযুক্তদের চিহ্নিত ও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।