দুপুর সাড়ে ১২টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের জগন্নাথ হলের বিপরীত দিকের ডাস্টবিনের সামনে একটি খালি রিকশা। অদূরেই ডাস্টবিনের ময়লার মাঝে কি যেন খুঁজতেছেন এক যুবক। কিছুক্ষণ পর পর কিছু একটা এনে রিকশার সামনে রাখছেন। ভর দুপুরে চালকবিহীন রিকশা দেখে পথচারীদের দুই-একজন উচ্চস্বরে রিকশাটা কার, রিকশার মালিক কে? -বলে চিৎকার করছিলেন।
পথচারীদের হাকডাক শুনে পুরোনো লোহা, ডিব্বা, বোতল আর টিন হাতে সেই যুবক (যিনি কিছুক্ষণ আগে ডাস্টবিন থেকে এসব কুড়াচ্ছিলেন) দৌড়ে আসেন। রিকশাটি তার বলে জানান। জানান, তার নাম কামাল মিয়া।
কৌতুহলবশত এ প্রতিবেদক ডাস্টবিনে ভাঙারি কুড়ানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, সে পেশায় একজন রিকশাচালক। গত ১০-১২ বছর ধরে রিকশা চালালেও এর আগে বহু বছর রাস্তায় ভাঙারি কুড়িয়েছেন।
কামাল হেসে বলেন, ‘আমি টু ইন ওয়ান। রিকশা চালানোর ফাঁকে ফাঁকে ভাঙরি পণ্য কুড়িয়ে তা চানখারপুলে স্থানীয় আনন্দবাজারে কেজি দরে বিক্রি করি। ভাঙারি ১৮ থেকে ২০ টাকা আর কাগজ ১৫ টাকা কেজি দর।’
কামাল আরও জানান, সকাল বেলা চানখারপুলের গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে চানখারপুল ও বকশিবাজার ঘুরে এসেছেন। কোনো যাত্রী পাননি। হঠাৎ করে এখানে এসে ডাস্টবিনে বেশ কিছু ভাঙারি পণ্য চোখে পড়ে। পুরোনো অভ্যাস মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। টাকার নেশায় রিকশা গাছের নিচে রেখে ভাঙারি পণ্য কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
সে জানান, ভাঙারি আইটেম সবাই ভালো করে চিনে না। ছোটবেলা থেকেই এ কাজে থাকায় ময়লা দেখেই বুঝতে পারি সেখানে ভাঙারি পণ্য আছে কিনা। এছাড়া রিকশা চালানো ও ভাঙারি কুড়ানো দুটো কাজেই আনন্দ পাই।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন