কুকুর নাকি বিড়াল, কে বেশি চৌকস?
07 December 2017, Thursday
বিড়ালের চেয়ে কুকুর বেশি চৌকস হওয়ার যোগ্যতা রাখে। প্রাণীদের মস্তিষ্কের আবেগ, চিন্তা ও আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী নিউরনের উপর গবেষণার পর এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন গবেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিলে অবস্থিত ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, কুকুরের মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কর্টেক্স অংশে উপস্থিত কর্টিকাল নিউরনের সংখ্যা বিড়ালের তুলনায় দ্বিগুণ। সেরেব্রাল কর্টেক্স হচ্ছে মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ। এ অংশটিই প্রাণীদের চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা, আচরণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কুকুরের সেরেব্রাল কর্টেক্সে গড়ে ৫৩ কোটি কর্টিকাল নিউরন থাকে। আর বিড়ালের কর্টিকাল নিউরনের সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি। মানুষের মস্তিষ্কের এ অংশে থাকে প্রায় ১৬ হাজার কোটি কর্টিকাল নিউরন।
এর আগে বিভিন্ন প্রাণীর উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গবেষকরা জানতে পেরেছেন, মস্তিষ্কের আকৃতি প্রাণীদের বুদ্ধিমত্তায় কোনো প্রভাব ফেলে না। বুদ্ধিমত্তাকে প্রভাবিত করে এর মধ্যে উপস্থিত নিউরনের সংখ্যা। আর সেরেব্রাল কর্টেক্সের নিউরনগুলো প্রাণীদের চিন্তা শক্তি, পরিকল্পনা, আচরণ ইত্যাদিকে প্রভাবিত করে থাকে।
গবেষকদলের প্রধান হারকুলানো হাউজেল বলেন, ‘সেরেব্রাল কর্টেক্সে উপস্থিত নিউরনের সংখ্যা প্রাণীদের বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়। কর্টিকাল নিউরনের সংখ্যা বেশি হওয়া মানে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বেশি হওয়া। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে প্রাণীরা ধীরে ধীরে লাভ করে এ ক্ষমতা।
সব মিলিয়ে মোট আটটি প্রাণীর মস্তিষ্কের উপর গবেষণা চালানো হয়। প্রাণীগুলো হলো খরগোশ, বেজি, রেকুন, বিড়াল, কুকুর, হায়েনা, সিংহ ও ভালুক।
দেখা গেছে, কুকুরের মস্তিষ্কের তুলনায় ভালুকের মস্তিষ্ক প্রায় তিন গুণ বড়। কিন্তু কুকুরের মস্তিষ্কে কর্টিকাল নিউরনের সংখ্যা ভালুকের চেয়ে বেশি।
মস্তিষ্কের আকৃতির অনুপাতে কর্টিকাল নিউরনের সংখ্যা হিসেব করলে সবচেয়ে এগিয়ে আছে রেকুন। রেকুনের মস্তিষ্কের আকৃতি প্রায় বিড়ালের মস্তিষ্কের সমান। কিন্তু এতে উপস্থিত নিউরনের সংখ্যা দ্বিগুণ।
গবেষকরা জানান, বুদ্ধিমত্তা একটি সূক্ষ্ম ও বিষয়তান্ত্রিক পরিমাপ। গবেষণার ফলাফল একথা সরাসরি বলছে না যে, কুকুরের বুদ্ধি বিড়ালের চেয়ে বেশি। বরং বলা হচ্ছে, বিড়ালের চেয়ে বেশি বুদ্ধি ধারণ করার মতো জৈবিক ক্ষমতা কুকুরের আছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন