
সচল থাকতে হলে মজবুত হাড় দরকার। হাড়ের সমস্যা বিভিন্ন রকম হতে পারে। এর মধ্যে হাড় ক্ষয় বা হাড় নরম হয়ে যাওয়া অন্যতম। এর কারণ পুষ্টির অভাব।
হাড়ের গঠন ও সুস্থতার জন্য কয়েকটি পুষ্টি উপাদান খুব জরুরি, যা আমাদের জানা জরুরি। শৈশব থেকে এসব পুষ্টি উপাদান যথেষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করলে হাড় হবে মজবুত ও ঘন।

ক্যালসিয়াম
আমাদের হাড়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম। এটি আমাদের হাড়ের ঘনত্বের ৭০ শতাংশ বহন করে।
ফসফরাস
ফসফরাস ক্যালসিয়ামের সঙ্গে বন্ধন করে হাইড্রক্সি এপেটাইট গঠন করে হাড়ের ম্যাট্রিক্স তৈরিতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি
ভিটামিন ডি অন্ত্রনালি থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ করতে সাহায্য করে। এতে শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের পরিমাণ বেড়ে যায়। এই দুটি উপাদান হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক। ভিটামিন ডির অভাবে হাড়ের বিভিন্ন রোগ যেমন অস্টিওম্যালাসিয়া, শিশুদের রিকেটস নামক রোগ হয়। এমনকি পরবর্তী সময়ে এ সমস্যা থেকে অস্টিওপোরোসিস পর্যন্ত হতে পারে, যেখানে হাড় ভঙ্গুর হয়ে ফ্র্যাকচার হয়ে যায়।
ম্যাগনেশিয়াম
ম্যাগনেশিয়াম হাড়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ক্যালসিয়ামের বিপাক প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। এ ছাড়া ভিটামিন ডি–কে সক্রিয় ও শরীর উপযোগী করার জন্যও ম্যাগনেশিয়াম প্রয়োজন।
জিংক
জিংক হাড়ের কোষগুলো নতুন করে পুনর্গঠন করে। এ ছাড়া হাড়ের ক্ষত হওয়া বিভিন্ন কোষকে আগের অবস্থায় নেওয়ার চেষ্টা করে জিংক। কোলাজেন হাড়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, এটিও তৈরিতে সাহায্য করে জিংক।

কোথায় পাবেন এসব পুষ্টি উপাদান
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়াম বেশি পরিমাণে থাকে। পাতাযুক্ত শাকসবজি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। রেড মিট বা লাল মাংস খেতে অনেকেই ভয় পান। তবে লাল মাংসে প্রচুর ফসফরাস ও জিংক থাকে। যাঁদের লাল মাংসে সমস্যা নেই, তাঁরা পরিমিত খেতে পারেন। মাছ ও মাছের তেলে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান থাকে। মাছ ও মাছের কাঁটা থাকে ফসফরাস।
মাছের তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। অনেকে মাছের তেল খেতে পারেন না। কিন্তু মাছের তেলে অনেক রকমের ভিটামিন ও স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল থাকে, যা আমাদের শরীরের জন্য জরুরি। শস্যজাত খাবার যেমন আটা, রুটি, বার্লিতেও হাড়ের ঘনত্ব বাড়ানোর পুষ্টি উপাদান থাকে।
তবে মনে রাখতে হবে যে অনেক ক্ষেত্রে শুধু পুষ্টিকর খাবার খেয়ে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে।
ডা. সাইফ হোসেন খান, মেডিসিন কনসালট্যান্ট, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ধানমন্ডি, ঢাকা