মৃত্যু সত্যের কাছে আত্মসমর্পণের বিষয় - ফাইল ছবি
কোভিড-১৯ নিয়ে আজো মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তার পরও এটা বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে, বিশ্বের প্রায় ১৩০টির মতো দেশ যেখানে এখনো টিকা নিয়ে ভাবতে পারছে না, সেখানে আমরা টিকা পেয়েছি। ভারতের অনুদানে আমরা প্রথম টিকা পেলাম, এ জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানাতেই হবে।
তবে ভারত বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দিচ্ছে না, যদিও মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসার সাথে অনেকেই তিস্তার পানি পাওয়ার আশা করেছিলেন। এমনকি আমাদের সরকারও আশাবাদী ছিল, বাস্তবে তিস্তা চুক্তি মোদির সফরে হচ্ছে না, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারতের ঢাকাস্থ হাইকমিশনার। ইতোমধ্যে ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঢাকা সফর করে গেছে।
এক দিকে করোনার টিকা দিয়ে ভারত বদান্যতা প্রদর্শন করল, অন্য দিকে তিস্তার পানি দেয়ার বেলায় তারা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। তারা বলছেন, মমতা ব্যানার্জির সরকার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় থাকলে তারা তিস্তার পানি দেবেন না। সামনের নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এ দেশকে পানি দেয়া সম্ভব হবে। এ জন্য তারা ভারতীয় সংবিধানের দোহাইও দিচ্ছেন। কথা হলো, তিস্তার পানি আমাদের জীবন-মরণ সমস্যা। বারবার বিভিন্ন লেখায় তা লিখেছি। ভারত সবসময় দ্বিমুখী নীতি অনুসরণ করে থাকে। এটা তো বাস্তব সত্য যে, ভারত তদানীন্তন পাকিস্তান নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ছিল। তারা সে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে একটা অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ খুঁজছিল। বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ‘পাকিস্তানপ্রীতি’ সম্পর্কে ভারতের অজানা ছিল না। এর পরও ভারত তার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। এখন প্রমাণিত, আগরতলা ‘ষড়যন্ত্র’ মামলা মূলত সত্য ছিল। কিন্তু জনগণের চাপে এটা ‘ষড়যন্ত্র’ হয়ে যায়। বহুলালোচিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়লে এর প্রমাণ মিলবে। পরে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাও বলেছেন আগরতলা ‘ষড়যন্ত্র’ মামলা ষড়যন্ত্র ছিল না, দেশকে পাকিস্তানিদের দখলমুক্ত করার জন্য এটা ছিল একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার অবকাশ এখানে নেই। কারণ এ বিষয়ে অতীতে অনেক আলোচনা হয়েছে; ভবিষ্যতেও অনেক প্রকাশনা আসবে। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। সবসময় ‘আল ঠেলাঠেলি’ ও সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। তা ছাড়া মিয়ানমার ইস্যুতেও ভারত আমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেনি।
আমরা আসামের অনুপ চেটিয়াকে ফেরত পাঠালাম; কিন্তু ভারত এখনো আমাদের অনেক লোককে ফেরত দিচ্ছে না। বিশেষ করে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দীন আহমেদকে। তাকে বাংলাদেশ সরকার ওপারে পাচার করে দেয়। তাকে সে দেশে ভবঘুরের মতো খুজে পেয়ে পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়, অথচ এ জন্য ভারত একমাত্র দায়ী নয়। কারণ বাংলাদেশ সরকার তাকে জোর করে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে ভারতের সীমান্ত দিয়ে পুশ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সালাহউদ্দীন একসময় আওয়ামী লীগবিরোধী একটি শক্ত অবস্থান নিয়ে বিএনপির গুলশান কার্যালয় থেকে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং করতেন। তিনি একসময় সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। পরে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দিয়ে তুখোড় বক্তব্য দিতে থাকলে তাকে একসময় আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের মানুষ যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত, তারা ভাবলেন ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমদের মতো সালাহউদ্দীনও গুম হয়ে গেছেন। বেশ ক’দিন পর সালাহউদ্দীনের খবর বেরুল ভারতের একটি স্থানীয় পত্রিকায়। তখন বাংলাদেশের মানুষ আশ্বস্ত হলো এই ভেবে, যাক, সালাহউদ্দীন জীবিত আছেন, অন্তত তার খোঁজটা পাওয়া গেছে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের গোয়েন্দারা বিষয়টা পূর্বাপর অবগত ছিলেন। এখনো ভারত জানে, তাকে ভোগান্তিতেই রাখতে হবে। কারণ বিএনপি ভারতের চোখে ‘ভারতপন্থী’ নয়, তাই তারা তাকে ছেড়ে দেয়ার গরজ দেখাচ্ছেন না। বিষয়টা একেবারে পরিষ্কার। এটা যে উভয় দেশের গোয়েন্দাদের জানা মতেই হয়েছে ও বর্তমানের অবস্থাও তারা জানেন তাতে সন্দেহ নেই। ভারত আরো জানে বাংলাদেশের বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের অবস্থান। তাই সালাহউদ্দীন মামলা থেকে খালাস পেলেও দ্রুত দেশে ফেরত আসতে পারবেন না।
মিয়ানমারের প্রসঙ্গ যখন উঠলই তখন আরো দুটো কথা বলে রাখা ভালো। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে সে দেশে সামরিক জান্তার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, জনবিক্ষোভ অং সান সু চির পক্ষে জোরদার হচ্ছে। ব্যাংক ব্যবস্থা অচল হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছে। আমরা সু চির বিষয়টা নিয়ে কোনো দুর্বলতায় ভুগি না। কারণ সু চির রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তেমন কোনো ভূমিকা নেই। বরং সামরিক সরকারকে আন্তর্জাতিক ফোরামে সমর্থন জুগিয়েছেন। তার পরও আমরা চাই মিয়ানমারের জনগণ গণতন্ত্র ফিরে পাক; সেখানকার জনগণের ক্ষোভে-বিক্ষোভে তাই আমাদের সমর্থন আছে এবং থাকবে। এখন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা মন্দের ভালো। ভারতের অবস্থাও দ্বিমুখী নীতির আলোকেই চলবে। বাংলাদেশ বিষয়টা অবহিত। কারণ ভারতের স্বার্থ মিয়ানমারে যেমন আছে তেমনটি বাংলাদেশের ব্যাপারেও আছে। তবুও আমরা চাই- সামরিক স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক।
শুরু করেছিলাম, কোভিড নিয়ে। এখন শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকরা টিকা পাবেন। তারপর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে। এর সম্ভাব্য তারিখ মে মাসের শেষাংশে। তত দিনে রোজা ও ঈদ শেষ হয়ে যাবে। তবে সরকারি ভাষ্যে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা হচ্ছে না। হয়তো, ভবিষ্যৎ অজানা বলেই সময় আরো ঘনিয়ে এলে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হবে। সরকার আশা করে, তত দিনে দেশের পরিস্থিতি আরো উন্নত হবে এবং কোভিডও একটা জিরো লাইনে এসে যাবে।
অন্য দিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি বুঝতে সফরে গেলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে শত্রুতা নয়’। তাই ভারতের অবস্থা বুঝেও আমরা বন্ধু ভাবি, মিয়ানমারকেও শত্রু বিবেচনা করি না। তাই রোহিঙ্গা ইস্যুর মতো এতটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়েও, মিয়ানমারের সাথে উসকানির মুখেও বাংলাদেশ আমদানি-রফতানি বন্ধ করেনি। মিয়ানমার সীমান্ত সিলগালা করে দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তাই আমেরিকায় বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বাংলাদেশ নিয়ে তাদের কী ভাবনা তা বোঝার দায় আছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার রয়েছে, যদিও মাঝে মধ্যে ইসলামোফোবিয়া, কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার মতো ঘটনা ঘটে যায়। তার পরও যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার একটা মানদণ্ড দাঁড় করাতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশে মানবাধিকার কোথায়? পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ অস্ত্রের ভাষায় কথা বলবে। মেজর অব: সিনহা হত্যার পর সবাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- আর এ ধরনের ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ হবে না। অথচ গত সপ্তাহে আবার দেশে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে গেল। তা হলে মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকার পালনের প্রতিশ্রুতির অর্থ কী দাঁড়াল? বাংলাদেশের মানুষ মানবাধিকার থেকে শুধু বঞ্চিত হচ্ছে না; ‘মানবাধিকার’ বিষয়টি বাংলাদেশে একটি প্রহসনে পরিণত হয়ে আছে। তাই মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি নয় শুধু, বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ একসাথে কাজ করবে- এ ধরনের স্ববিরোধী বক্তব্য দেয়া বড় মাপের অসত্য উক্তি ছাড়া আর কী হতে পারে!
গত সপ্তাহ ছিল ‘বিডিআর হত্যা দিবস’। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের মাত্র অল্প ক’দিনের মাথায় বিডিআর হত্যার ঘটনা ঘটে গেল। শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সাথে কথা বলে ভাবলেন তিনি বুঝি ‘শান্তির দূত’। বাস্তবে একটি তদন্ত পর্যন্ত হলো না। অথচ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি ছিল। যে তদন্ত হলো সেটি পুলিশি তদন্ত। যা হওয়ার হলো! একটা বিচারও হলো। রাজধানীর বকশিবাজার এলাকায় মাঠে ক্যাম্প করে এই বিচারপ্রক্রিয়া চলল। অথচ বিডিআর বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনী অগ্রসর হতে চাইল, সরকার অনুমতি দিলো না। বিডিআর ছিল প্যারা মিলিটারির পদমর্যাদায়, তাই সেনাবাহিনী ছিল বিডিআরের সহযোদ্ধা। সেই বিদ্রোহে যে ক’জন প্রাণ হারালেন তারা ছিলেন সেনাবাহিনীর চৌকস কর্মকর্তা। যারা কিনা ‘বাংলা ভাইয়ের’ উত্থান ঠেকিয়েছিলেন।
আর সরকার শায়খ আবদুর রহমানকে সিলেট থেকে গ্রেফতার করে পুরো জাতির বাহবা কুড়িয়েছিল। আমার জানা মতে, আলজাজিরা বিডিআর বিদ্রোহ নিয়েও একটি এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট করার কথা ছিল। সেই আলজাজিরা এখন বাংলাদেশে প্রদর্শনের ব্যবস্থাটাই বন্ধ করে দেয়া হলো। যে দেশে আলজাজিরার মতো একটি আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে, সেই দেশে অন্যান্য প্রিন্টিং ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কী ধরনের চাপে আছে এবং কেমন সেলফ সেন্সরশিপ অনুসরণ করতে হচ্ছে তা কি আর কাউকে বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন পড়ে? তবে যত দূর জানি, আলজাজিরা অবশ্যই বাংলাদেশের বাইরে যেহেতু নিষিদ্ধ নয়, তখন প্রকৃত ঘটনা একদিন না একদিন প্রচারিত হবে। বাংলাদেশের মানুষও ইউটিউবের মাধ্যমে জেনে যাবে। সত্যের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে যে, তা প্রকাশিত হবেই।
বিডিআর বিদ্রোহ আমাদের শুধু সেনাবাহিনীর কিছু চৌকস অফিসারের প্রাণ কেড়ে নেয়নি; আমাদের জাতীয় একটি প্যারা মিলিটারি বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে ভারতের অনুকরণে বিজিবি করা হয়েছে। যা শুধু অবমূল্যায়নই নয়, জাতির জন্য ক্ষতিকরও। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে বিখ্যাত রৌমারী হামলা খ্যাত মেজর অব: জেনারেল ফজলুর রহমান যিনি বিডিআর-এর প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। (ব্যক্তিগতভাবে আমার পরিচিত মানুষ। একসময় একটি চ্যানেলে টকশো উপস্থাপন করতাম।) তাকে অনুরোধ করেছিলাম বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে কথা বলতে, রাজি হননি। লিখতে অনুরোধ করেছিলাম। তাতেও রাজি হননি। সর্বশেষ তিনি কোথায় আছেন, কী অবস্থায় আছেন, জানি না।
মৃত্যু অনিবার্য। তাই মৃত্যু মানেই শোকের। আমরা সবাই জানি, জন্ম-মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে হয় না; আসমানে হয়। আসমান মানে আল্লাহ, জন্ম-মৃত্যুর ফয়সালা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হাতে। এ জন্যই বলি, পৃথিবীতে কোনো নাস্তিক নেই। কারণ তারাও মারা যান এবং মৃত্যু রোধ করার শক্তি কোনো মানুষের নেই। পবিত্র কুরআন এ জন্যই বলেছে ‘কুল্লু নাফসিন জায়েকাতুল মাউত।’
তবে স্বজনহারা মানুষ ব্যথিত হয়। যে ব্যথিত হয়, সেও যে একদিন মারা যাবে সেটি ভুলে থাকে। মৃত্যুভীতি থাকলে মানুষ ধন-দৌলত নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করত না। খ্যাতির মোহে ও ক্ষমতার লোভে পাপ-পুণ্য ভুলে থাকত না। এত পাপে মানুষ জড়াত না। তার পরও কোনো কোনো মৃত্যু মানুষকে কষ্ট দেয়। সম্প্রতি মারা গেলেন অনেক খ্যাতিমান মানুষ। সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ও এনটিভির শহীদ ভাই মারা যাওয়ার পর কষ্ট পেয়েছিলাম। কারণ দু’জনের সাথেই পরিচিতিটা নিবিড় ছিল। মিজান মৃত্যুর ক’মাস আগে ফোন করে একটা তথ্য চেয়েছিলেন। শহীদ ভাইয়ের সাথে প্রেস ক্লাবে গেলেই দেখা হতো। অতি সম্প্রতি মারা গেলেন সৈয়দ আবুল মকসুদ ও খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। দু’জনই বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। ইব্রাহিম খালেদকে দিয়ে সরকার একটি তদন্ত কমিশন করিয়েছিল। সেই তদন্ত রিপোর্ট কোনো দিন আলোর মুখ দেখতে দেয়নি সরকার। অথচ তিনি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। সৈয়দ আবুল মকসুদকে ভাবা হতো বুদ্ধিজীবী হিসেবে। তিনি নাকি গান্ধীবাদী ছিলেন। তবে সবসময় কাফনের মতো দু’টি সাদা কাপড় পরে থাকতেন। অনেকটা হাজী সাহেবদের ইহরামের মতো। একটি চাদরের মতো পরতেন, অন্যটি গায় দিয়ে থাকতেন। তাদের দু’জনকেই জানতাম। মানুষ মৃত্যুর পর আমরা যে দোয়াটি পড়ি সেটির অর্থ- ‘আল্লাহর কাছ থেকে আসে আবার আল্লাহর কাছে ফিরে যায়।’ কবর জিয়ারতের দোয়ায় বলা হয়ে থাকে- আপনি চলে গেলেন আমরা আসছি।
কলামটি শুরু করেছিলাম কোভিড দিয়ে। শেষ করলাম মৃত্যু দিয়ে। উপসংহারে বলব, পৃথিবীর সব মানুষ সুখী হোক, সৎ হোক, মানবিক হোক, তাহলে কোভিডভীতি থাকবে না। মানুষ চিকিৎসা নেবে কিন্তু এটাকে সুন্নাহ ভেবে। তবেই আমাদের ভোটের নামে দুরাচারীদের দৌরাত্ম্য থাকবে না। বিচারের নামে প্রহসন হবে না। মানবাধিকারের নামে বাণিজ্য হবে না। সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতির সয়লাব থাকবে না। আসুন, ঈশ্বর বলি, গড বলি আর আল্লাহ বলি- একজন সৃষ্টিকর্তাকে সব কিছুর নিয়ন্তা ভাবি।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন