আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম আজ থেকে আশি-নব্বই বছর আগে ‘সাহেব ও মোসাহেব’ নামে একটি কবিতা লিখেছিলেন। সাহেব যেটাই বলেন, মোসাহেব তার ওপরই প্রশংসা শুরু করে দেয়। এমনকি সাহেবের মুখের কথা টেনে এনে বলে, ‘হুজুরের কথা শুনেই বুঝেছি বাহাহা বাহাহা বাহাহা!’
এই নাছোড়বান্দার হাত থেকে বাঁচার জন্য বলে, ‘জাগিয়া দেখিনু, জুটিয়াছে যত হনুমান আর অপদেব’। এই গালি খেয়েও ক্লান্ত ও ক্ষান্ত হয় না, হুজুরের চোখ, যাবে কোথা বাবা, প্রণামিয়া কয় মোসাহেব!
ওই কবিতায় মোসাহেবির যে চমৎকার চিত্র আঁকা হয়েছে- তার চেয়েও নাছোড়বান্দা মোসাহেব বা চাটার দলের অভ্যুদয় ঘটেছে এই দেশে। এই ‘হনুমান আর অপদেব’কুল শাসক শ্রেণীকে শুধু জনগণ থেকেই বিচ্ছিন্ন করেনি- সব বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটা পরাবাস্তব বা কল্পনার জগতে পৌঁছে দিয়েছে। মিথ্যা প্রশংসা ও কল্পনার ফানুস উড়িয়ে নিজেদের রাজাকে ন্যাংটা বানিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। রাজার গায়ে পোশাক নেই, অথচ মোসাহেব বলছে, কী চমৎকার পোশাক রাজা মশাইয়ের গায়ে!
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে সরকারকে এমন ন্যাংটা করে হাঁটাচ্ছে এই ‘হনুমান আর অপদেব’-এর দল। এরা সরকারকে বোঝাচ্ছে, এই আন্দোলনের পেছনে আছে জামায়াত-শিবির। বিএনপি-জামায়াত পেছন থেকে ফুঁ দিচ্ছে। পাঠক একবার চিন্তা করুন, আজ যদি বিএনপি ক্ষমতায় এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকত! তখন শুধু এই ফুঁ নয়- মহান ঝড় বইয়ে দিত।
স্বাধীনতার পরপর একই হনুমান আর অপদেবের দল চেটে সব খেয়ে দেশটিকে তলাবিহীন ঝুড়ি বানিয়ে ফেলেছিল। এখন আবার নতুন করে সেই চাটা কর্ম শুরু হয়েছে। জাতির অর্থনীতি, রাজনীতি, প্রশাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা সব চেটে এরা সাবাড় করে ফেলেছে। দেশের মানচিত্র, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বও এদের লালায়িত জিহ্বার নিচে পড়ে গেছে।
উপরে উদ্ধৃত কবিতার মতো সরকারপ্রধান যা করেন, তাতেই প্রশংসার বন্যা বইয়ে দেয়া হয়। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী অনেকটা গোস্বা করে কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারপর এই ঘোষণার পর ছাত্রলীগ আনন্দ মিছিল বের করে এবং প্রধানমন্ত্রীকে মাদার অব এডুকেশন উপাধি দেয়। আবার ‘কোটা পদ্ধতি বহাল থাকবে’ প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এ কথা বের হওয়ার সাথে সাথেই আগের আনন্দ মিছিলের কথা ভুলে এই আন্দোলনের নেতানেত্রীদের পিটিয়ে ভর্তা বানিয়ে ফেলে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে নির্দেশের দরকার পড়েনি। চোখের ভ্রূ একটুখানি নাড়াতেই পুলিশ লীগ, ছাত্রলীগ, ভিসি লীগ, প্রক্টর লীগ, সাংবাদিক লীগ নিজ নিজ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। লগি-বৈঠা, চাপাতির পর এবার হাতে নিয়েছে হাতুড়ি। দেশের মানুষ ভয়ার্ত চোখে দেখেছে, কিভাবে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিঠের পাঁজরের হাড্ডি ভাঙা হয়েছে।
ছাত্রলীগের এসব ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডে জঙ্গিপনা না দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরং কোটা আন্দোলনের সাথে জঙ্গিবাদের মিল খুঁজে পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানেন-ই না যে, তার বাড়ির আঙিনার সম্মুখে এ রকম একটা আন্দোলন চলছে। প্রক্টরের মতোই ঘুমুচ্ছেন জাফর ইকবালের পৌরহিত্যে দেশের তথাকথিত সুশীলসমাজ। তাদের সম্মুখে বড় কাজ এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা। যে ছেলেটি হাতুড়ি দিয়ে অন্য ছেলেকে পেটাল সে এখন মুক্তভাবে তার এই কীর্তির কথা বলে সাক্ষাৎকার দিয়ে বেড়াচ্ছে আর আহত নুরুকে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে, এগুলো জাফর ইকবালদের ঘোষিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষেই যাচ্ছে। এই সম্প্রীতিকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছাতে এখন দেশের সবাইকে একসাথে পূজা করতে হবে, এক সাথে ঈদ করতে হবে। পৃথিবীর কোথাও জাফর ইকবালের এই অভিনব ফর্মুলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আসেনি। এদের মূল মতলব রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করা, প্রকৃত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এদের টার্গেট নয়।
প্লিজ, দয়া করে এই অধমকে ভুল বুঝবেন না। আমি চাই মুসলমানরা যে উদ্দীপনায় এ দেশে ঈদ করবে, একই উদ্দীপনায় হিন্দুরা তাদের পূজা করবে এবং অন্যরা নিজ নিজ উপাসনা করবে। আমি কারো ধর্মীয় স্বকীয়তা বিনষ্টের পক্ষে নই। ধর্মের এই মিশ্রণে সম্রাট আকবর থেকে শুরু করে এই জাফরদের মতলব আছে, এতে মানবতার কোনো কল্যাণ নেই। এই মতলববাজরা হিন্দু-মুসলিম কারোরই শুভাকাঙ্ক্ষী নয়। এরা মানবতার টানে নয়, অন্য মতলবে কাজ করে। মানবতার প্রতি টান থাকলে এরা আজ নুরুদের পক্ষে দাঁড়াত।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুকে প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত ক্যামেরার সামনে আক্রমণ করা হয়েছে, এগুলোর ভিডিও প্রমাণ ইউটিউবে রয়েছে। আক্রমণকারীদের চেহারা, নামধাম ও পদবি সবাই জেনে গেছে। এত কিছুর পরও ছাত্রলীগকে দায়মুক্ত করার মিশনে নেমে গেছেন আওয়ামী ঘরানার নানা বুদ্ধিজীবীরা। টকশোতে এদের কথন শুনে জাতির অন্তরে মহা মন্থন শুরু হয়ে গেছে। একজন মানুষ কতটুকু নির্লজ্জ ও বিবেকহীন হতে পারে- কোটা আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের সাফাই গাওয়ার মাধ্যমে এদের চেহারায় তা ফুটে উঠেছে।
মজার ব্যাপার হলো, টিভি চ্যানেলগুলো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টকশোগুলোতে এদেরই কথা বলতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
মোটামুটি সত্য কথা বলেন বা বলতে চেষ্টা করেন এমন কাউকে এই ক’দিন টকশোগুলোতে খুব বেশি দেখা যায়নি। কাজেই এই ‘হনুমান আর অপদেব’রা কোথায় কোথায় বসে কী কী সুতোর ঘুঁটি টানছেন তা মালুম করতে জাতির কোনো কষ্ট হচ্ছে না।
আজ সব জায়গার নিয়ন্ত্রণ এই হনুমান আর অপদেবদের হাতে চলে গেছে। এ দেশের প্রশাসন ও আইন পরিষদ সবই এই হনুমান ও অপদেবদের দখলে। অর্থাৎ আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ এবং বিচার বিভাগ এ তিনটি স্তম্ভই ধসে পড়েছে। এই অপদেব ও হনুমানদের মেরুদণ্ডের অস্তিত্ব নিয়ে জনগণের সন্দেহ দেখা দিলে কেউ কেউ শার্ট খুলে আনকা গ্রাম্য ভঙ্গিতে সাংবাদিকদের মেরুদণ্ড দেখিয়েছে।
রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ আক্রান্ত হওয়ার পর রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদপত্র বা মিডিয়া। সেখানেও এই অপদেব ও হনুমানেরা হানা দিয়েছে। সাংবাদিকতা জগতে মুষ্টিমেয় নিজেদের জীবনকে বিপন্ন করে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে। কিন্তু মিডিয়ার একটা বড় অংশ ইনিয়েবিনিয়ে জনসাধারণকে বর্তমান অবস্থার সাথে অভ্যস্ত করে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। মূলত এদের প্রশ্রয় ও মোসাহেবিপনাতেই এ দেশে ফ্যাসিবাদ ও একদলীয় বাকশাল কায়েম হয়ে গেছে। মিডিয়া জগতের এই অপদেব ও হনুমানেরা একটা আজব চেতনায় জাতিকে অবচেতন করে ফেলেছে।
কোটা সিস্টেম আসলে বর্তমান অবৈধ সরকারের জীবনকৌটার মতো। কাজেই এই রাক্ষস কখনোই নিজে নিজের জীবনকৌটাকে ধ্বংস বা বিলুপ্ত করবে না। আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছাত্রসমাজকে এ কথাটি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এক নম্বর শত্রু এই ফ্যাসিবাদী রাক্ষস। একজন প্রতিবন্ধীকে সহজেই চেনা যায়, একজন নারীকেও পুরুষ থেকে আলাদা করা যায়, একজন সংখ্যালঘুকে সংখ্যাগুরু থেকে আলাদা করা যায়, কিন্তু একজন রাজাকারের সন্তান বা নাতি থেকে প্রকৃত মুক্তযোদ্ধার সন্তান বা নাতি থেকে আলাদা করা কঠিন। নিজের পাপ ঢাকার জন্য অনেক রাজাকার বা চৌকির তলার যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধের সনদ সংগ্রহের যে আগ্রহ বা তাগিদ ছিল, সেই আগ্রহ বা তাগিদ অনেক আত্মসম্মানসম্পন্ন মুক্তিযাদ্ধার ছিল না। তা ছাড়া, এ দেশের কিছু রাজনৈতিক দল মুক্তিযাদ্ধা বানানোর মেশিন বনে গেছে। এক দিকে রাজাকার ঢোকালে এই মেশিনের অপর দিক থেকে মুক্তিযাদ্ধা বেরিয়ে আসে। যে রাজাকার জনরোষ বা পাবলিকের ভয়ে নিজের সনদটি দেখাতে পারেননি, আড়ালে আবডালে রেখেছেন এখন তার নাতি বা পুতির পক্ষে সেই কাজটি অনেক সহজ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে রাজাকারদের বংশগত জিনগুলোও খুবই সিদ্ধহস্ত, এদের ঘ্রাণশক্তিও প্রবল। একাত্তরে পাক বাহিনীর কাছ থেকে যেভাবে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন, বর্তমান নাপাক বাহিনীর কাছ থেকেও একই মওকা গ্রহণ করছেন।
১৯৭১ সালে যারা জন্মভূমির স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তারা কখনোই এরূপ একটি বিকলাঙ্গ রাষ্ট্রের কথা চিন্তা করে এ কাজটি করেননি। যারা এই জাতির ফাদারিং করেছে তাদেরকে এভাবে যুগের পর যুগ ধরে করুণা বা দয়ার পাত্র হিসেবে দেখানো তাদের প্রতি অসম্মান বা অবমাননার নামান্তর। সব মুক্তিযোদ্ধার জন্য এ ধরনের সহায়তার প্রয়োজন নেই। বরং পঙ্গু, বৃদ্ধ ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধা কিংবা তাদের স্ত্রীদের জন্য কেইস বাই কেইস সহযোগিতা বেশি জরুরি।
রাষ্ট্রের প্রথম তিনটি স্তম্ভ অর্থাৎ নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ প্রায় ধ্বংসের মুখে উপনীত হয়েছে। আমরা দেখেছি কিভাবে নির্বাহী বিভাগের মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলা হয়েছে। আইন পরিষদ পুরোপুরি সার্কাসের মঞ্চ হয়ে পড়েছে। তথাকথিত বিরোধীদলীয় নেত্রী তার দলের মন্ত্রীদের বরখাস্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর দরখাস্ত পেশ করেছিলেন। এই সংসদ নিয়ে কোনোরূপ আলোচনা অর্থহীন।
বিচার বিভাগের অবস্থা আরো করুণ হয়ে পড়েছে। সরকারের মনের একটি খায়েশও অপূর্ণ রাখা হয়নি। অথচ কাগজ-কলমে বিচার বিভাগ পূর্ণ স্বাধীন। এই স্বাধীনতার সামান্য প্রয়োগ করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতিকে জান নিয়ে বিদেশে পালাতে হয়েছে। বিএনপির পরবর্তী নেতা তারেক রহমানকে একটি মামলায় বেকসুর খালাস দেয়ার অপরাধে আরেক বিচারককে দেশ ছাড়তে হয়েছে। কাজেই দেশে থাকতে হলে কাকে কী করতে হবে সেই গাইডলাইন সব জায়গায় পৌঁছে গেছে।
একটি কথা বিজ্ঞাপনের মতো প্রচার করা হয় যে, বাংলাদেশ নাকি বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে পড়েছে।
অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান উন্নয়নের গোপন সূত্র জানতে চান। এটা যেন বিজ্ঞাপনের সেই ভাষার হুবহু প্রয়োগ, ভাবি আপনার হাতে কী জাদু আছে?
কোনো কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান উন্নয়নের এই ফর্মুলা জানতে চেয়েছেন, এদের দু-একজনের নাম জানালে এই জাতির বড়ই উপকার হতো। এ প্রশ্নটি কোনো সাংবাদিকের মনে কেন উদয় হয় না!
সঙ্গত কারণেই অর্থমন্ত্রী দেশে কোনো গরিব মানুষ দেখতে পান না। গত ১০ বছরে দ্রব্যমূল্য বাড়েনি বলেও উদ্ভট দাবি করেছেন। আল্লাহ এই জাতিকে সত্যি কিছু আজব চিজ উপহার দিয়েছেন, তন্মধ্যে এই অর্থমন্ত্রী একটি। তিনি শেয়ারবাজারের ৩০ লাখ বিনিয়োগকারী যারা সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন, তাদেরকে ফটকাবাজ বলে গালি দিয়েছিলেন। হলমার্ক চার হাজার কোটি টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে তুলে নিলে তিনি এটাকে পিনাট বলেছিলেন। তার অর্থমন্ত্রিত্বকালীন সময়ে সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, এক লাখ কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে লুট হয়েছে, এক লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৮০০ কোটি টাকা চুরি হয়েছে, কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও এ লোকটি যে ভঙ্গিতে হাসেন, তা দেখে জাতির পিত্তি জ্বলে ওঠে।
দেশের ব্যাংক খালি হয়ে যাচ্ছে। হাজার কিংবা লাখ কোটি টাকার নিচে এই লুটপাটের কোনো অঙ্ক নেই। এত কিছু করার পরও এই হনুমান আর অপদেবরা বহালতবিয়তে আছেন, উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন- এটার গোপন রহস্য অনেকেই জানতে চাইতে পারেন। মালয়েশিয়ার নাজিব বিপদে পড়েছেন- তারা এখনো পড়েননি। কাজেই এত অকাজ করেও বহালতবিয়তে টিকে থাকার এই গোপন ফর্মুলা জানতে চাইতেই পারেন!
প্রশাসন থেকে বিএনপি-জামায়াত তাড়াতে গিয়ে হনুমান আর অপদেবতা দিয়ে প্রশাসন ভরে ফেলা হয়েছে। এরা আওয়ামী লীগের অ্যাসেট হয়নি, বরং লায়াবিলিটিজ হয়ে পড়েছে।
চৌদ্দগোষ্ঠীর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের কেউ থাকলে ছোটখাটো সরকারি চাকরি দেয়া হতো না। এত কিছুর পর এখনো নাকি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বসানোর নিমিত্তে সরকারপন্থী কোনো যুতসই কর্মকর্তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!
বৈধ ও অনৈতিক সুবিধা দিয়ে কখনোই সত্যিকারের আনুগত্য কেনা যায় না। এই সুবিধা পাওয়া নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট থাকে না। সবাই তার ওপরে পাওয়া সুবিধাভোগীদের দিকে নজর দেয়, তুলনা করে, ঈর্ষা করে। টপ টু বটম সবার মধ্যেই অতৃপ্তি কাজ করে। যে এক কোটি পেয়েছে সে দেখে দুই কোটিকে, যে দুই কোটি পেয়েছে সে দেখে তিন কোটিকে, তিন কোটি দেখে চার কোটিকে...। যখন ঝুঁকি নেয়ার সময় আসে তখন অর্জিত সম্পদ নিরাপদে ভোগের তাগিদ সৃষ্টি হয়ে যায়। জনরোষের উত্তাপও পেতে থাকে। অন্য কিছু না বুঝলেও কখন ভাগতে হবে বা পিছুটান দিতে হবে, সে কথাটি এই হনুমান আর অপদেবরা ভালোই বুঝে বলে মনে হয়। মনে হচ্ছে, সেই সময় দ্রুত ঘনিয়ে আসছে। এক বাতাসেই এই হনুমান আর অপদেবরা বিদায় হবে।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন