ইন্ডিয়া ও বিএনপি সম্পর্কে শঙ্কা ও সম্ভাবনা - ছবি : নয়া দিগন্ত
একটি দেশের সাথে অন্য একটি দেশের সম্পর্ক থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু একটি দেশের সাথে অন্য একটি দেশের বিশেষ দলের সম্পর্ক কাম্য নয়। এ সম্পর্ক অবৈধ, অন্যায্য, অপ্রীতিকর ও অবমাননাকর। তবুও বাংলাদেশের মানুষের চরম অস্বস্তি থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ ও ইন্ডিয়ার মধ্যে এহেন সম্পর্কটি গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক নিয়ে আগে একটু রাখঢাক, চক্ষুলজ্জা থাকলেও এবার সেটাও উঠে গেছে।
সাবেক এক প্রেসিডেন্টের শয্যাসঙ্গিনী কেউ কেউ গর্ব করে বলতেন, আমি তো কোনো ফকিরের সাথে বিছানায় যাইনি- খোদ প্রেসিডেন্টের বিছানায় গিয়েছি। কোনো দেশের সাথে সম্পর্ক নিয়ে একটি দলের ভাবখানা এমন বেহায়া-বেশরম-বেতমিজ রমণীর মতো হওয়া কাম্য নয়।
প্রায়ই শোনা যায়, ‘অমুক নেতা-নেত্রী’ এই দেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু করতে পারেন না। যা হোক, বিখ্যাত কমেডিয়ান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই কৌতুকের কথা মনে পড়ে যায়। মক্কেল এসে একেকটা খারাপ সংবাদ দেয়, আর উকিল সাহেব আশ্বস্ত করে বলেন, চিন্তা কইরো না- আমি তো আছিই। আমার ওপর ভরসা করো।’ কিছু দিন পর এসে জানায়- ‘উকিল সাব, আপনার ওপর ভরসা করতে করতেই তো ফাঁসির হুকুম হইয়া গেল।’ তখনো সেই উকিল একইভাবে আশ্বস্ত করে- ভগবানের নাম নিয়া ঝুইলা পড়ো। আমি তো আছিই।
তেমনি এ দেশের রাজনীতিও ঝুইলা গেছে। সস্তা আবেগ, মিথ্যা অহং এবং আত্মপ্রবঞ্চনায় ভরপুর হয়ে পড়েছে আমাদের বৈদেশিক নীতি। প্রেয়সীর গালের তিলের জন্য আমরা আমাদের সমরখন্দ ও বোখারা বিলিয়ে দেয়ার মতো হাতেম তাই হয়ে পড়েছি।
আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভূরাজনৈতিক সুবিধাগুলো মনে হচ্ছে On Sale- এ দেয়া হয়ে গেছে। যে যত বেশি সুবিধা দিতে পারবে, দেশের স্বার্থ যে যত জলাঞ্জলি দিতে পারবে, যেন তার হাতেই ক্ষমতা থাকবে। এ ক্ষমতা জনগণের হাত থেকে সরে গেছে, অথচ সংবিধান মোতাবেক তা হওয়ার কথা ছিল না।
এ দেয়ার মানসিকতা এমন জায়গায় চলে গেছে যে, এর সাথে আর কেউ প্রতিযোগিতা করতে পারবে না। Come on. Come on - who will give more? আমাদের কানে এখন ক্ষমতার ফেরিওয়ালার এহেন আহ্বান ধ্বনিত হচ্ছে।
সব কিছু বিলিয়ে দেয়ার মানসিকতা যারা অর্জন করতে সক্ষম হবে-শুধু তারাই এ দেশে রাজনীতি করতে পারবেন? তারাই কি ক্ষমতায় যেতে পারবেন?
এ অবস্থায় বিএনপি ইন্ডিয়ার সাথে যোগাযোগের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তার দিকে দেশবাসীর সতর্ক দৃষ্টি থাকাই স্বাভাবিক। দলটির কয়েকজন নেতা ইন্ডিয়ার কিছু থিংকট্যাংক, মিডিয়ার সাথে দেখা করতে গেলে বিষয়টি সবার নজরে পড়ে।
আশা করব, ওপরের বিছানার উদাহরণটি মুরব্বিস্থানীয় শ্রুদ্ধেয় ব্যক্তিদের জন্য অস্বস্তির কারণ হবে না। সঙ্গতকারণেই দেশবাসীর জিজ্ঞাসা- এর মাধ্যমে একদল প্রতিপক্ষ অন্য দলকে সেই মখমলের বিছানা থেকে নামাতে চাচ্ছে, নাকি নিজেরাও সেই একই বিছানায় উঠতে চাচ্ছে?
কারণ, লাখো মানুষের জীবন এবং অসংখ্য মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে-এ রকম অপপ্রয়াসে তার যবনিকাপাত ঘটতে পারে। এখানে বিছানার মালিককে দোষ দিয়ে লাভ হবে না। মূল দোষটি হবে অবৈধ আরোহণকারীর।
এ অবস্থায় বিএনপির সামনে এখন দু’টি রাস্তা ভেসে উঠেছে বলে ধরে নেয়া যায়। প্রথম ও সহজ রাস্তাটি হলো, নিজেরাও সেই মখমলের বিছানায় উঠে বসা এবং বিছানার মালিকের খায়েশ পূর্ণ করা। দ্বিতীয় রাস্তাটি হলো, জনগণকে সাথে নিয়ে অপরজনকে সেই মখমলের বিছানা থেকে টেনে নামানো। সাথে সাথে বিছানার মালিককেও এর অন্যায্যতা এবং ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবহিত করা; যে জুজুর ভয় দেখিয়ে বিছানার মালিককে প্রলুব্ধ কিংবা বিভ্রান্ত করা হয়েছে সে সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সেই ভুল ধারণা ভাঙানো।
এখন বিএনপি কিংবা এর কোনো খণ্ডাংশ প্রথম কাজটি করলে যেমন নিন্দা জুটবে, তেমনি দ্বিতীয় কাজটি করলে শুধু বাংলাদেশ নয়Ñ পুরো উপমহাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে খালেস নিয়তে ইন্ডিয়া এক পা এগিয়ে এলে, এ দেশের জনগণ দুই পা এগিয়ে যাবে।
পিপল টু পিপল কিংবা জনগণের সাথে জনগণের সংযোগের ক্ষেত্রে শুধু লিপ সার্ভিস দিলেই হবে না; এ ক্ষেত্রে আসলেই কিছু কাজ করা দরকার। নানা খুদ-কুঁড়া ছিটিয়ে এ দেশে কিছু বুদ্ধিজীবী বা সুশীলসমাজ সৃষ্টি করা হয়েছে। শিকড়চ্যুত এ শ্রেণীটি দেশের জনগণের বোধ ও বিশ্বাস ধারণ করে না। সাধারণ মানুষের চিন্তা-চেতনা-ক্ষোভ-হতাশা-আনন্দ-বেদনা থেকে তারা যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছেন। তাদেরকে সাময়িকভাবে অ্যাসেট মনে হলেও চূড়ান্ত বিচারে তারা মালিকের জন্য লায়াবিলিটিজ। পিপল টু পিপল পর্যায়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এরাই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দেশের মানুষের প্রকৃত ভাবনাটি পড়শি ও তার জনগণ তাদের কারণেই জানতে পারে না।
ইন্ডিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কটি তারাই জটিল করে তুলেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে-ইন্ডিয়াও বিষয়টি কিছুটা হলেও আঁচ করতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ মন্তব্য- ‘ইন্ডিয়াকে যা দিয়েছি তা কখনোই ভুলতে পারবে না। এ কথাটি মনে হচ্ছে এক ধরনের হতাশাজাত। কোথা থেকে কোনো সুতা কেটে যাওয়ার আলামত বলে মনে হচ্ছে। বিএনপির তরুণ নেতৃত্বের ওই উদ্যোগ সরকারকে আরো ভয় পাইয়ে দিয়েছে।
ফলে যথারীতি উদ্যোগটিকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এখানেও সবচেয়ে মতলববাজি প্রচারণায় নেমে গেছে কোনো কোনো পত্রিকা। তারা লিখেছেন, বিএনপির মধ্যে এখনো পরিবর্তনের কোনো আভাস দেখতে পায়নি ইন্ডিয়া। এ কথা বলে বিএনপিকে ইন্ডিয়ার বি-টিম হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে এবং পুরো বিষয়টি নিয়ে জনগণকে একটা গোলকধাঁধায় ফেলার প্রয়াস চলছে।
বিএনপির সেই প্রতিনিধিদলের তিন নেতার মধ্যে সবচেয়ে তরুণ নেতা বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিশেষ উপদেষ্টা হুমায়ূন কবির। তার মন্তব্য নিয়েই বেশি সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ কিসিমের ‘কিছু’ পেলেই মিডিয়া হইচই শুরু করে দেয়। এসব প্রপাগান্ডা মিডিয়া একা করে না, বিএনপির একটা অংশকেও নিজেদের সাথে এ কাজে শরিক করে নেয়।
অনেকেই বলেন, আগামী দিনের বিএনপির মধ্যে যে পরিবর্তন আসবে, সেই আলামত দেখতে পাচ্ছি না। তাদের জ্ঞাতার্থে বলছি, তারেক রহমান বেশ কিছু তরুণ ও শিক্ষিত ছেলেকে নিয়ে নতুনভাবে সামনের দিনের নেতৃত্ব সাজাবেন-এ রকম একটা ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। আলোচিত হুমায়ূন কবিরও ক্যামব্রিজের লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসপডুয়া।
তাদেরকে নিয়ে বিএনপির পুরনো নেতৃত্বের অস্বস্তি প্রকাশ করা ঠিক মনে হয় না বরং প্রবীণদের অভিজ্ঞতা ও নতুনদের আধুনিক চিন্তা-ভাবনার সমন্বয়ের মাধ্যমেই আগামী দিনের বিএনপির উদয় হতে পারে। শুধু রাস্তায় ফাইট করার সময় বোধহয় শেষ হয়ে গেছে। এখন বুদ্ধি বা কৌশলের ফাইট শুরু। প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার জায়গাগুলোকে দুর্বল বা অকেজো করে দেয়াও একটি বড় কৌশল হতে পারে।
আওয়ামী লীগ এ দেশের রাজনীতিকে যে জটিল অবস্থায় ঠেলে দিয়েছে, সেখান থেকে তাকে বের করে আনাই সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। বিএনপির তরুণ নেতৃত্ব পিপল টু পিপল কন্টাক্টের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার ওপর অহেতুক সন্দেহ আরোপ করা ঠিক হবে না। এর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি ছড়ানো অনুচিত। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, যেন জাতীয়তাবাদের মূল স্পিরিট থেকে বের হয়ে সহজ রাস্তা বেছে না নেয়া হয়। এ কথাটি বোঝাতেই প্রেসিডেন্সিয়াল বিছানার উদাহরণ টেনে এনেছি।
বাংলাদেশের মিডিয়ায় হইচই শোনার পরে সরাসরি হুমায়ূন কবিরকে ফোন করি। তিনি জানান, তাদের মন্তব্যগুলো বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছিল। এরপর দ্য হিন্দু পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সম্পাদকের কাছে প্রতিবাদ জানানো হলে সেই আর্টিক্যালটি সংশোধন এবং বিতর্কিত শব্দগুলো অপসারণ করা হয়। এ ব্যাপারে তিনি ওই সাংবাদিককে যে প্রতিবাদপত্রটি লিখেছিলেন তাতে বিএনপির মূল বক্তব্য ও উদ্দেশ্য ফুটে উঠেছে। চিঠিটির বঙ্গানুবাদ নিম্নরূপ : “আশা করি, আমার এই মেইলটি তোমাকে সুস্থ হিসেবেই দেখতে পাবে। তুমি ৮ জুন তারিখে দ্য হিন্দু পত্রিকায় ‘সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করে বিএনপি’ এ শিরোনামে যে কলামটি লিখেছ এবং তাতে আমাকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করে যা লিখেছ, সে বিষয়ে কয়েকবার ফোনে জানানোর পরেও কোনো সংশোধনী চোখে পড়ছে না। প্রথমত, বহুলপ্রচারিত এ পত্রিকার পাঠকদের কাছে আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। আমি কখনোই বলিনি যে, বিএনপির আগের মেয়াদের কাজগুলো বিভ্রান্তিকর ও বোকামিপূর্ণ ছিল। এ শব্দগুলো কখনোই আমি কিংবা আমার সহকর্মী জনাব খসরু, যিনি প্রধান মুখপাত্র হিসেবে তোমার সাথে সেই সাক্ষাৎকারে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, দুইজনের কেউই এটা উচ্চারণ করিনি। আমি উল্লেখ করেছিলাম, (বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার মধ্যকার) সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল উভয় পক্ষ পারস্পরিক কিছু খারাপ স্মৃতি দ্বারা তাড়িত হওয়ার কারণে। সেই বাজে স্মৃতি থেকে আরো বাজে সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসতে দেয়া উচিত হবে না। দু’টি দেশেই রয়েছে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক তরুণ জনশক্তি। এ তারুণ্যের স্রোতকে পথ করে দিতে আমাদেরকে আর পেছনে নয়Ñ ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থায়ী শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের পানে এগিয়ে যেতে হবে। আমি এবং জনাব খসরু তোমার সাথে আরো উল্লেখ করেছি, কিভাবে আওয়ামী লীগ এতদিন ইন্ডিয়ার সরকারকে বিভ্রান্ত ও বোকা বানিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগের দেয়া ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইন্ডিয়ার সরকার যেসব পলিসি গ্রহণ করেছেÑ সেগুলোর ইতি টানা দরকার। আওয়ামী লীগের পরিবেশিত তথ্যগুলো সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। আমরা আশা করব, ইন্ডিয়ার মিডিয়া আমাদেরকে সঠিকভাবে তুলে ধরবে। দ্বিতীয়ত, মি. খসরু এবং আমি তোমার সাথে আলাপচারিতায় কখনোই উল্লেখ করিনি যে, আমরা অবাধ ও মুক্ত নির্বাচনের জন্য ইন্ডিয়ার সহযোগিতা চাই। বরং বলেছি, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাÑ অন্যান্য গণতান্ত্রিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ইন্ডিয়া আমাদের গণতন্ত্রের পক্ষে তথা অবাধ, মুক্ত ও সবার অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের পক্ষে নৈতিক অবস্থান গ্রহণ করবে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ইন্ডিয়ার হস্তক্ষেপ স্পষ্ট হয়েছিল এবং তাতে জনগণের ধারণা জন্মেছিল যে, ইন্ডিয়া সেই নির্বাচন সংঘটিত করতে আওয়ামী লীগকে অন্যায়ভাবে সহযোগিতা করেছিল। আশা করব, তুমি যথাশিগগির সম্ভব আমার বক্তব্যগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরবে। এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য তোমাকে অগ্রিম ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
বিএনপির এ বক্তব্যগুলো এতদিন ইন্ডিয়ার জনগণের কাছে সেভাবে পৌঁছেনি। ইচ্ছে করেই একটি প্রতিবন্ধকতা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। এ প্রতিবন্ধকতা ভাঙার উদ্যোগ অবশ্য প্রশংসনীয়। আমরা জানি, ইউরোপের দেশগুলো শত শত বছর পারস্পরিক যুদ্ধবিগ্রহ করে কাটিয়েছে। এখন তারা পুরনো শত্রুতার অসারতা বুঝতে পেরে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে চলেছে। তাদের পূর্বপুরুষেরা যা করেছেন তার সবই সঠিক ছিল- সেই ইগো ধরে থাকলে সে অবস্থা থেকে উত্তরণ কখনোই সম্ভব হতো না।
এখানে স্নায়ুযুদ্ধের উদাহরণটিও টানা যেতে পারে। স্নায়ুযুদ্ধকালীন রাজনীতি নির্ধারিত হয়েছে সেই সময়কে সামনে নিয়েই। সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে আমেরিকা ও রাশিয়ার নিজ নিজ রাজনীতি সঠিক ছিল। তেমনি বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার আশি বা নব্বই দশকের রাজনীতি নির্ধারিত হয়েছে সেই সময়কে সামনে নিয়েই। নিজ নিজ দেশের প্রেক্ষাপটে নিজ নিজ রাজনীতি সঠিক ছিল। কিন্তু আজ যদি স্নায়ুযুদ্ধ কিংবা একটি যুগের রাজনীতি থেকে উত্তরণের কথা বলা হয়Ñ তখন সেই সময়ের কোনো মহান ব্যক্তিত্বকে খাটো করা হয় না।
শহীদ জিয়াউর রহমান নিজেই যুগের এই পিঞ্জর ভাঙার ডাক দিয়েছিলেন। উপমহাদেশে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ জিয়াই সার্কের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আজ যদি নতুনভাবে এ উত্তরণের ডাক আসে, তাহলে সেটি জিয়ার দেখিয়ে যাওয়া পথেই হয়েছে। এখানে শহীদ জিয়া খাটো হননি, বরং তার রেখে যাওয়া যুগের পিঞ্জর ভাঙার স্পিরিটই বিজয়ী হয়েছে। কাজেই নিজের রাজনীতি ছেড়ে বাইরে যাওয়ার সুযোগ বিএনপির নেই। তার প্রয়োজনও নেই।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন