রজব তাইয়েব এরদোগান ও বাদশাহ সালমান
ভিন্নমতাবলম্বীদের গুপ্তহত্যার ঘটনা বিভিন্ন দেশে ঘটে থাকে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এসব ঘটনা ঘটলেও তা কখনো স্বীকার করা হয় না। শুধু দেশের ভেতরে নয়, অন্য দেশেও ঘাতক পাঠিয়ে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধবাদীদের হত্যার ঘটনা নতুন নয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্রিটেনে এ ধরনের একটি হত্যাচেষ্টা হয়েছে। রাশিয়ার ভিন্নমতাবলম্বী, সাবেক গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ইউলিয়াকে নার্ভ এজেন্ট বা স্নায়ুকে আঘাতকারী রাসায়নিক দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ব্রিটেনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা (জিআরইউ) এ ঘটনার সাথে জড়িত। রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার দুই সদস্যের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছিল, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন। এ নিয়ে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করলেও হত্যাচেষ্টার দায় রাশিয়া স্বীকার করেনি।
গুপ্তহত্যার ক্ষেত্রে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র কুখ্যাতিও বিশ্বজোড়া। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব দ্যাগ হ্যামারশোল্ড ১৯৬১ সালে জাম্বিয়ায় রহস্যজনক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। সিআইএ, ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এবং বেলজিয়ান মাইনিং কোম্পানির যৌথ পরিকল্পনায় তাকে হত্যা করা হয় বলে মনে করা হয়। এমনকি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডি হত্যার সাথেও সিআইএ’র সম্পৃক্ততা নিয়ে জোর গুজব রয়েছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন দেশে সিআইএ’র গুপ্তহত্যার বহু নজির রয়েছে। কিন্তু কখনো তা স্বীকার করা হয়নি।
রাষ্ট্রীয় নির্দেশে গুপ্তহত্যার ঘটনা স্বীকার করা শুধু গোয়েন্দা ব্যর্থতা নয়, যেকোনো দেশের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে জর্দানের আম্মানে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হামাস নেতা খালেদ মিশালের কানে স্প্রে করে বিষ প্রয়োগ করেছিল ইসরাইলি গোয়েন্দারা। মিশালের দেহরক্ষী বিষয়টি দেখে ফেলেন। এরপর আটক করা হয়েছিল ইসরাইলি গোয়েন্দাকে।
জর্দানের বাদশাহ হোসেন এ খবর পেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কাছে কয়েকটি দাবি জানালেন। বললেন, মিশালকে যে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে, এর প্রতিকারের ওষুধ পাঠাতে হবে এবং বিষটির ধরন সম্পর্কে জানাতে হবে। হোসেন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘হামাস নেতা মিশাল যদি মারা যান, তাহলে জর্দান ও ইসরাইলের মধ্যে যে শান্তিচুক্তি রয়েছে, সেটারও মৃত্যু ঘটবে।’ অর্থাৎ জর্দান সে চুক্তি আর বহাল রাখবে না। ফলে জর্দান, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সংগ্রাম শুরু হয়ে যায়। তখন পর্দার নেপথ্যে চলছিল নানা পর্যায়ে আলোচনা। ইসরাইলের কট্টর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে তখনকার মোসাদ প্রধান ড্যানি ইয়াতোম ছিলেন মিশাল-বধ মিশনের নাটের গুরু। ঘটনাক্রমে তিনিই মিশালকে বাঁচাতে প্রতিষেধক নিয়ে জর্দান ছুটে গিয়েছিলেন। আসলে, যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। এভাবে বেঁচে যান খালেদ মিশাল। দুর্ধর্ষ এই গোয়েন্দা সংস্থার ইতিহাসে এটি একটি বড় ব্যর্থতা।
এবার, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কন্স্যুলেটে সৌদি নাগরিক ও ভিন্নমতাবলম্বী প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার দায় স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে সৌদি আরব। এ জন্য চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে সৌদি আরবকে। ২ অক্টোবর খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি আরব তা বারবার জোর দিয়ে অস্বীকার করে আসছিল। দুই সপ্তাহের বেশি সময় পর ২০ অক্টোবর দেশটি স্বীকার করে, ‘কন্স্যুলেটের ভেতরেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।’ এখন পর্যন্ত তার লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নিজ দেশের নাগরিককে বিদেশে নিজ দূতাবাসে হত্যা করে লাশ গায়েবের এই ঘটনা গুপ্তহত্যার একটি বিরল ও বোকামিপূর্ণ কাজ বলে ইতিহাসে বিবেচিত হবে।
সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ একটি স্কোয়াড এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। ফিরকাত আল নিমর বা টাইগার স্কোয়াড নামে পরিচিত গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ এই ইউনিট সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হয়- এমন খবর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। ইতোমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ ব্যক্তিকে আটক করার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি সরকার। এ ঘটনায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মিডিয়া উপদেষ্টা সউদ আল কাহতানি এবং গোয়েন্দা বিভাগের দ্বিতীয় প্রধান ব্যক্তি মেজর জেনারেল আহমেদ আল আসারিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজপরিবারের বাইরের এই দু’জনকে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের ‘দুই হাত’ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এদের অপসারণের মধ্য দিয়ে ক্রাউন প্রিন্সের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে তিনি খাশোগি হত্যার দায় এড়াতে পারবেন কি না, তা বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি এ ঘটনার নগ্ন সত্য তুলে ধরবেন। এর পরপরই সিআইএ’র প্রধান গিনা হ্যাসপেল ইস্তাম্বুল ছুটে আসেন। জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক ও সৌদি আরবের মধ্যে আলোচনা চলছে। সিআইএ প্রধানের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের অডিও এবং ভিডিও তুলে দেয়া হয়েছে। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। সিআইএ’র সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে এ ঘটনার ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনারের নিয়ন্ত্রণ খর্ব হবে। কুশনার সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। এখন যুক্তরাষ্ট্রের এ স্টাবলিশমেন্ট এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করবে। ইতোমধ্যে বাহরাইনে প্রতিরক্ষা বিষয়ক এক সম্মেলনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস বলেছেন, খাশোগির হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করেছে।
এ খুনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র আরো পদক্ষেপ নিতে পারে। তিনি বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইতোমধ্যে কিছু সৌদি নাগরিকের ভিসা বাতিল করেছেন। এর বাইরে আরো বাড়তি পদক্ষেপ নেয়া হবে। অন্য দিকে, ট্রাম্প সুর পরিবর্তন করে বলেছেন, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন। শুরু থেকেই এ ঘটনায় যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলেও হত্যাকাণ্ডে ঊর্ধ্বতন সৌদি নেতৃত্বের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রথমবারের মতো যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার সম্ভাব্যতা প্রসঙ্গে একমত হয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে তুরস্কের গোয়েন্দা কার্যক্রমের সক্ষমতা এবং পশ্চিমা মানস সম্পর্কে দেশটির অভিজ্ঞতাকে খাটো করে দেখেছে সৌদি আরব। সম্ভবত সৌদি কন্স্যুলেটের ভেতরে তুরস্কের গোয়েন্দা নজরদারি ছিল। ঘটনার পুরো বিবরণ তুর্কি গোয়েন্দাদের হাতে আছে। এ কারণে তুরস্কের কর্মকর্তারা কখনো এ ঘটনা নিয়ে সরাসরি সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেননি। কারণ, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী দূতাবাসে গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানো যায় না। বিতর্ক এড়িয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোকে ধীরে ধীরে এই হত্যাকাণ্ডের তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। তা বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত জামাল খাশোগি ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রেও সংবাদপত্রটির অনেক পাঠকের কাছে তিনি পরিচিত। তার হত্যাকাণ্ডের খবর মানুষকে ভীষণভাবে মর্মাহত করেছে। ফলে শুধু সৌদি আরব নয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছেন।
এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, এ ঘটনা থেকে তুরস্ক কী চায়? অবশ্যই তুরস্কের লক্ষ্য হলো, ক্রাউন প্রিন্সকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা। এর মাধ্যমে তুরস্ক দু’টি লক্ষ্য অর্জন করতে চায়- তুরস্কের বন্ধু দেশ কাতারের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং আরব অঞ্চলে তুরস্কে ক্ষমতাসীন একে পার্টির রাজনৈতিক মিত্র মুসলিম ব্রাদারহুডের কার্যক্রম স্বাভাবিক করা। আরব বসন্তের পর উপসাগরীয় দেশগুলোতে মুসলিম ব্রাদারহুডের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দলটির শত শত নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তুরস্কের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে আরব আমিরাতের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে মনে করা হয়। এরদোগানকে উৎখাতের সামরিক অভ্যুত্থানের পেছনে আমিরাত অর্থ সরবরাহ করেছে। মোহাম্মদ বিন সালমানও এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন বলে তুরস্কের সন্দেহ। কারণ জায়েদ এখন বিন সালমানের প্রধান পরামর্শদাতা। এ ক্ষেত্রে বিন সালমান যদি ক্রাউন প্রিন্সের পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হন, তাহলে তুরস্কের শুধু বিজয় হবে না, ভবিষ্যতে এ ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরির সম্ভাবনাও নস্যাৎ হয়ে যাবে।
লক্ষণীয় দিক হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যাপারে আরো কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছেন। সৌদি আরবে গ্রেফতার হওয়া সন্দেহভাজন ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করার আহ্বান জানিয়েছেন। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের এ দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। এরদোগান হুঁশিয়ার করেছেন, এই ঘটনা সম্পর্কে তুরস্ক যতটুকু তথ্য-প্রমাণ সরবরাহ করেছে, তার চেয়ে আরো বেশি তথ্য তাদের হাতে আছে। একই সাথে, তিনি খাশোগির লাশেরও সন্ধান দাবি করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা কে তাও জানতে চেয়েছেন। এরদোগানের ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট। এরপর সৌদি আরবের চিফ প্রসিকিউটর ইস্তাম্বুল এসেছেন তদন্তের জন্য।
আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য, সৌদি আরবে বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হোক- তা কখনো তুরস্ক চাইবে না। বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের নেতৃত্বের প্রতি তুরস্ক কখনো অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেনি। কিন্তু ক্রাউন প্রিন্সের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে দেশটি। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ক ও কাতারের প্রভাব খর্ব করার জন্য সৌদি-আমিরাতি ও মিসরীয় প্রভাব বলয় ভাঙতে চায় তুরস্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি প্রভাবাধীন, আমিরাতের শক্তিশালী লবিস্ট গ্রুপ রয়েছে। এর বিপরীতে গণমাধ্যমে এবং কংগ্রেসে রয়েছে কাতারের লবিস্ট।
খাশোগি হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছেন এক মার্কিন সিনেটর। সিনেটের বৈদেশিক কমিটির চেয়ারম্যান, রিপাবলিকান সিনেটর বব কর্কার হত্যাকাণ্ডের দায়ে যুবরাজের শাস্তিও দাবি করেছেন। অন্য দিকে, সৌদি আরব বলতে চাইছে, ‘এটি কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার স্বেচ্ছামূলক ও নীতিবিবর্জিত কর্মকাণ্ড। এবং সৌদি যুবরাজ এ ব্যাপারে অবগত নন।’ কিন্তু এই দাবি গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। ফলে ক্রাউন প্রিন্সের ওপর চাপ আগামী দিনে আরো বাড়বে।
অন্য দিকে আরেক সিনেটর, লিন্ডসে গ্রাহাম সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছেন। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপীয় দেশগুলো সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে অনেকটা একমত হয়েছে। জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সৌদি আরবের বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভাবমর্যাদা দারুণভাবে ক্ষুন্ন করেছে। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করা এখন অনেকটা অসম্ভব ব্যাপার। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি রাজপরিবারের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্সের পদে রেখে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অথবা তাকে সরিয়ে দিয়ে সৌদি পররাষ্ট্রনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা। একই সাথে আরব বিশ্বে ইসলামপন্থী রাজনীতির স্বীকৃতি দিয়ে তুরস্ক ও কাতারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। সৌদি আরবের পরিবর্তিত নীতির ওপর তুরস্ক-সৌদি আরব সম্পর্ক শুধু নয়, মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা অনেকাংশে নির্ভর করবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন