আমি কি পৃথিবীর কোনো মনুষ্যসমাজে বাস করছি? নাকি কোনো পশুজগতের জীব আমরা? দেহাবয়বে মানুষ দেখা গেলেও আসলে সবাই আমরা কি 'মানুষ' নামে পরিচিত হতে পারি? আমরা কি সত্যিই মানুষ হতে পেরেছি সবাই? কিন্তু এমন প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনেই দেখা দেয়। কিন্তু সে প্রশ্ন মনুষ্যত্বকে ধিক্কার দেয়। হায়েনা পিশাচ-হিংস্র জন্তু-জানোয়ারদের আমরা কখনো কখনো হারিয়ে দি মানুষ নামে অকস্মাৎ জন্ম নেয়া কুৎসিত, নিষ্ঠুর, নারকীয়, পৈশাচিক, বীভৎসতায়। কি করে মানুষ মানুষকে মারতে পারে? তাও গরিব জনগণই স্বীকার হয় এদের নির্মমতার। নিষ্পাপ শিশুকে বেধড়ক পিটিয়ে মারার যে হত্যা সিলেটে ঘটেছে, সেই স্ফুলিঙ্গ দাবানল হয়ে জ্বলে উঠুক। কিংবা ধর্মকর্মের নামে মানুষ হত্যার নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ময়মনসিংহের এক জর্দাওয়ালা। বিত্ত আসে কোনো না কোনো অবৈধ পথে, তার একটি পদ্ধতি হলো ব্যবসা। কজন সৎপথে ব্যবসা করে, তার হিসেব প্রয়োজন নেই কারণ কেউ করে না। হয়তো ব্যতিক্রম থাকতে পারে তবে চোখে পড়ে না। এদের কৈফিয়ত আছে, ওরা বলে ঘাটে ঘাটে পয়সা দিতে হয় (ঘুষ নাই বললাম), তারা সস্তা দামে উৎপাদক চাষিদের কাছ থেকে পণ্য কেনে কিন্তু রাস্তা-ঘাটে পুলিশবাহিনী, ক্যাডার-মাস্তানদের বেড়া পার হয়ে আসতে যে খরচ তা পুশিয়ে নিতে দাম বাড়ে। বিপদে সংকটে পৃথিবীর কোনো দেশে এভাবে হঠাৎ করে দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের মাথায় বাড়ি দেয় কিনা জানি না। তবে আমাদের দেশে ধর্মীয় উৎসবে কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যবসায়ীরা সব জিনিসেরই দাম বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, পরিধেয়, অলঙ্কার, প্রসাধনী ইত্যাদি। এতে বেশ চড়া লাভে ব্যবসা জমজমাট থাকে। সামর্থ্য যাদের আছে তাদের তো সাধের সীমা নেই। কিন্তু যারা গরিব, তাদের আহ্লাদের জায়গা কোথায়? হাত পাততে হয় বিত্তবানদের কাছে। দেখবেন, ঈদ জামাতে আপনি যখন সেজে-গুজে যান আল্লাহর এবাদতে, পানাহ চাইতে, সেই সময় মাঠে ঢোকার পথের দুই ধারে ছিন্নবসনা মানুষ করুণা প্রার্থনা করে। আল্লার নামে খয়রাত চায় তারা। ... কি সব আয়ের দেশ নাকি হয়েছি আমরা। এই দৃশ্য কি প্রতিনিয়ত দেখতেই হবে? উপরতলায় অর্জনের ঝুড়ি ভর্তি হচ্ছে পুরস্কারে তিরস্কারেও কিন্তু নিচু মহলের আমবাসিন্দা খয়রাত প্রার্থী বেড়ে যাচ্ছে কেন? তাই তো এমন মৃত্যুর খবর প্রতিদিন পড়তে হয়, শুনতেও হয়।
আয়কর দিতে গিয়ে কেউ পদদলিত হয়েছেন শুনিনি। আয়কর আদায়ের জন্য বরং মেলা হয়, উৎসবের আয়োজন করা হয়। তো অর্থগ্রাসী শিল্পপতি, ব্যবসায়ী মহান পুরুষেরা যখন আয়ের বাড়তি পরিমাণ অর্থ দিয়ে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী 'জাকাত' দেয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ধর্মীয় আচারে যেভাবে জাকাত গরিবের ঘরে ঘরে পেঁৗছে দেয়ার কথা, তাকি আদৌ হয়? ধর্মীয় বিধান না মেনে নিজের বিত্তবৈভবের ঢেরা পেটানোর জন্য হয় নিজের বিশাল অট্টালিকার প্রাঙ্গণে, না হয় প্রাঙ্গণে যদি বাগান থাকে তবে সরকারি রাস্তায় জমায়েতের মাধ্যমে জাকাত দেয়ার ব্যবস্থা নিয়ে কর্মচারীরা অন্য কারো হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া হয়। ফলে অব্যবস্থাপনার শিকার হন গরিব জনগণ। 'যারা হাত পেতে জাকাত নেন' তাদের মৃত্যু হয় নেয়ার আগেই। এ মৃত্যু মৃত্যু নয়, অবিবেচকের হত্যা। এ জন্য হত্যাকারী এবং তার সহযোগী ও সহকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত।
পুলিশ কেবল 'তাদের জানানো হয়নি' বলে ঘরে বসে জনগণের জানমাল রক্ষা করার বড় বড় বুলি আউড়ালেই হবে না। করে দেখাতে হবে। পাহারা, দেখভাল এবং জনগণের নানান সেবা দেয়াটাই তো তাদের কাজ। এ কাজ কি ঘটনা ঘটে গেলে গিয়ে হাজির হয়ে খবরদারি বা মাতব্বরি করবে? নাকি জনসাধারণের নিরাপত্তা বিধান করবে এবং শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখবে। তা না হলে ভিড় ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে অকারণে লোকজনকে লাঠিপেটা করা, ঘটনা ঘটে গেলেও কোনো অভিযোগকারীকে পাত্তা না দিয়ে অফিসে বসে থাকাই কি তাদের কাজ?
ময়মনসিংহে নূরানী জর্দা ফ্যাক্টরির এই নিষ্ঠুর দুর্ভাগ্যজনক এবং অবিবেচক ঘটনায় ২৭ জন গরিব মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর জবাব মিলবে কার কাছ থেকে? ফ্যাক্টরির মালিক ও তার পুত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভালো কথা, তারা জাকাত দেয়ার জন্য ব্যবস্থা করছেন ভালো কথা, কিন্তু সে জন্য যে প্রচুর লোকের ভিড় হবে অসংখ্য গরিব মানুষ জমা হবেন। তাদের মধ্যে যে কোনো ধরনের সহনশীলতা থাকে না অভাবের কারণে, সেটা কি মালিক জানতেন না। তার আয়োজন তো বিশাল, মানুষের মৃতের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়। এটুকু মানবিক বোধটুকুও নেই কেন? তারা কি মানুষ নন, কেবল ব্যবসায়ী?
ইতোপূর্বেও এমন নৃশংস দান-খয়রাতের ঘটনায় মর্মান্তিক পরিণতির ইতিহাস আছে। ১৯৯০ সালে ৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এই জাকাত নিতে গিয়ে। তারও পরে ২০০২ সালে ৪২ জন জাকাত নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা গেছেন। এবারে ২৭ জন একই কারণে জীবন দিলেন। এরও আগে তেমন কোনো বড় ঘটনা সম্ভবত ঘটেনি। ঘটলেও একেবারে অনুল্লেখ্য। এত বড় বড় ঘটনার পর ২৫ বছর কিংবা ১৩ বছর পার হয়ে গেছে। কেন সরকার বা প্রশাসন থেকে জাকাত দেয়ার সময় এলে কোনো সুচারু ব্যবস্থা করে না? রাষ্ট্র এত আইনের শাসন প্রসঙ্গে আমাদের হেদায়েত করে অথচ এই ধর্মীয় পর্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় কেন? তারা কি জানে না, জাকাত কখন দেয়ার সময়? ২৫ বছরের মধ্যে শত ব্যক্তির প্রাণ যে সাধারণ অব্যবস্থার কারণে ঘটল, তাকে কি আমলে নেয়া উচিত ছিল না? শুনেছি, ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী গরিব মানুষের তালিকা প্রণয়ন করে জাকাতের মাল বাড়ি বাড়ি পেঁৗছে দেয়ার কথা হজরত মোহাম্মদ (স.) বলে গেছেন অগুণতি বছর আগে। তাহলে কি সেই মহানবীর নির্দেশ কেউ মানছেন না? কেন মানছেন না। এরা তো কথায় কথায় ধর্মের কথা বলেন, ধর্মের বিধান-বিশ্লেষণ করেন, দেশে ধর্মচর্চা করা মানুষের অভাব নেই। প্রতিবেশী মানুষ যারা, তারাও কি বোঝেননি এমন হয়, হতে পারে, তাহলে মানুষ হিসেবে সমাজে বাস করা কেন? মানুষে মানুষে সম্প্রীতি সহমর্মিতা সে একেবারে তা বলব না, তবু কেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং নিরীহ, সরল ও গরিব জনসাধারণকে জীবন দিতে হয়?
সরকার, প্রশাসন ও সর্বোপরি রাষ্ট্রের দায়িত্ব তো থাকার কথা। জাকাত বোর্ড বলেও তো একটি প্রতিষ্ঠান ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের নিয়ে গঠিত হয়। এদের মনে করা হয় দায়িত্বশীল বলে, তারাই বা কি করেন? রাষ্ট্রকে তারা কি জাকাতের সময় আসার আগে পরামর্শ দিতে পারেন না, কী করা উচিত বা যে বিধান আছে, তাকে বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। আমরা জনগণ কেন মাঝেমধ্যেই এই 'মরণ ফাদ'-এ পড়ি? এর জন্য দায়ী কি তিনি, যিনি জাকাত দেন? নাকি জাকাত বোর্ড যদি থেকে থাকে, কিংবা প্রশাসন তথা সরকার, পুলিশ সর্বোপরি রাষ্ট্রের কি কোনো দায়িত্ব নেই? মানুষ কি জিম্মি হবে এখানেও। যারা জাকাত দেন তাদের মধ্যেও রকমফের আছে। অনেকেই নিঃস্ব গরিবানা জীবন থেকে নিজের সাধ্যকে কাজে লাগিয়ে যেভাবেই হোক ব্যবসায়ী হয়েছেন। ভালো করেছেন। লাভ করেছেন প্রচুর। এদের মধ্যে হয়তো বিলাসবৈভবে জীবন ভাসিয়ে দেয়ার পথেই সামাজিকতায় ধার না ধেরে বেপরোয়া ভোগবিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হতে চান এবং হয়েও যান। সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণ করেও অনেকে ভ্রমণ-জ্ঞান অর্জনেও যান। সন্তানরা হয়তো উপভোগ করে আনন্দ নতুন নতুন দর্শনীয় ইতিহাসখ্যাত বিষয় লক্ষ্য করে। এরই ফাঁকে পরিবারের কর্তাব্যক্তি যদি শিল্পপতি বড় ব্যবসায়ী, মিলমালিক-শ্রমিক খাটানো ও শোষণে অর্জিত টাকার মালিক হন, তবে পরিবারের অপরাপর সদস্যের মতন উপভোগ করার বিষয়টি দীর্ঘ করার জন্য ব্যবসাপতির ফাঁক-ফোকর খোঁজেন। ওদের জাকাত দেয়ার মানসিকতা থাকে না। এই শ্রেণির মধ্যে যাদের জাকাত দেয়ার কথা ভাবেন, তারা নিজেদের কর্মচারী এবং প্রহরীদের দিয়ে ভিড় ভাট্টা কন্ট্রোল করে ধর্মকর্ম অর্থাৎ জাকাত বিতরণ শেষ করেন। কে পেল, কার পাওয়া উচিত তার ধার তারা ধারেন না।
কিন্তু কিছু 'হঠাৎ পয়সাওয়ালা' যারা তাদের মধ্যে নিজেদের অপরাধবোধ থেকে 'পাপ' স্খলনের প্রয়োজনে যারা ধর্মের দ্বারস্থ হয়, অবৈধ উপায়ে অথবা সাধারণ মানুষের মাথায় বাড়ি মেরে লাখ লাখ তো এখন আর নেই কোটি কোটি টাকা আয় উপার্জন করে পরে তারা ওই ধার্মিক হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় এবং মনে মনে পয়সাওয়ালার রোয়াব দেখানোর জন্য দান-খয়রাত করতে থাকেন। এদের বিবেচনা বলে কোনো জিনিস কাজই করে না। তারাই এভাবে জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে আর মানুষকে পাত্তাই দেয় না। কুকুর-বেড়ালের চেয়েও জঘন্য ব্যবহার করে এই হঠাৎ গজিয়ে ওঠা পয়সাওয়ালারাও। আর ধনিক শ্রেণির বিত্তশালীরা তা তোয়াক্কাই করে না এদের মানুষ বলে। উঁচু-নিচুর যে ফারাক দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর দূর হওয়ার কথা ছিল তা তো হয়নিই বরঞ্চ পাকিস্তান আমলের পরাধীনতার চেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ওই ফারাকটা প্রচ-ভাবে বিশাল হয়ে গেছে।
হতেই পারে। মুক্তিযুদ্ধের আগে আমাদের দেশের সব সম্পদ পাকিস্তানিরা লুটে নিয়ে পশ্চিমের নানান উন্নতি সাধনে ব্যয় করছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ সেই সম্পদ তো আছে বরঞ্চ আরো প্রভুত পরিমাণে বেড়েছে। সেসব যাবে কোথায়? এ দেশেরই ধনিক লুটেরা যে শ্রেণির নতুন উদ্ভব হয়েছে, তারাই এ সম্পদ অর্থবিত্ত ভোগ করছে। তাই বিত্তের বিপুল বৈভব সাধারণ মানুষ সব দিশাহারা। ... এই যে পরিবর্তিত শোষণমুখী ব্যবস্থা আজ দেশের উঁচু-নিচু বা ধনী দরিদ্র্যের ফারাকটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মধ্যবিত্ত চিঁড়ে চ্যাপ্টা। যদি সমাজব্যবস্থা পাল্টানো না যায় তবে এমন চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা প্রতিদিন করতে হবে। তার মধ্যে রাজনীতিতে হয়ে গেছে নোংরা এবং নষ্ট। ফলে রাজনৈতিক আন্দোলন বলে কিছু নেই। গড়ে তোলার কোনো চেষ্টা-প্রচেষ্টাও নেই। ফলে অপচেষ্টায় দেশব্যাপী হিংস্রতা বেড়েছে এবং সহিংসতা, যৌন হয়রানি, শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা ক্রমে বেড়েই চলেছে। সরকার সিসিটিভি লাগাচ্ছেন তাতেও তো ড. অভিজিৎ রায়ের চিহ্নিত হত্যাকারীকে ধরা যাচ্ছে না। এজাতীয় হত্যার ঘটনায় প্রায়ই এমন হচ্ছে। প্রতিভাদীপ্ত কিশোর ত্বকীর খুনিদের চিহ্নিত করেও ধরা হচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের অবৈধ অর্থবিত্তের সংঘাতে প্রাণ দিলেন সাতজন, সেই খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনকে আজও ঢাকা আনা হয়নি। কেন? ওকে আনলে কাদের বিপদ হতে পারে? ওই চিহ্নিত চক্র তো দেশের নির্বাহী প্রধানেরই সহযোগিতা সহমর্মিতা পেয়ে গেছে, ভয় কি তাদের? তারা সদর্পে চলছে। আশ্বাস পেয়েছে ভবিষ্যতেও চলার।
এতসব বিবেকহীন কর্মকা- বিচারহীন পড়ে আছে, এরপরে ৪২ জন, ৩৫ জন, ২৭ জন ভেসে যাবে অবহেলায় (?) এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা ঠিক হবে না তবে বলতে দ্বিধা নেই যে এ ধরনের হত্যাকা- সরকারের বিচারিক সফলতা নেই বলে ঢেরাও পেটায় না প্রশাসন। কি হবে এই ২৭ জনের? এরা তো চলেই গেছেন_ পরিবার সারাজীবন এদের অভাববোধ করবেন কারণ এরাই তো সংসার চালাতেন। সরকারকে অনুরোধ করব রাষ্ট্রীয় বিধানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান হিসেবে যে ব্যবস্থা নেয়ার কথা তা কঠিনভাবে ঘুষমুক্ত বাস্তবায়নের সুব্যবস্থা করুন। জাকাত নিতে গিয়ে যেন আর মানুষ হত্যা না হয়। একে দুর্ঘটনা বলবেন না। এ হত্যাকা-।
কামাল লোহানী: সাংবাদিক ও কলাম লেখক। বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন