কয়েক দিন আগে আমার আগের কর্মস্থলের এক সহকর্মী তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের একটি বই আমার হাতে দিয়ে বললেন, বইটি যেন আমি পড়ে দেখি। মনে হয়, বইটি লেখকের পিএইচডি থিসিসের মুদ্রিত সংস্করণ। নাম 'বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির তিন দশক' (১৯৭১-২০০০)। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের একটি মিছিলে হামলা করে প্রায় ৪০ জন শিক্ষককে যে ছাত্রসংগঠনটি রক্তাক্ত করেছিল, সেই হামলাকারীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই 'লেখক গবেষক'। সেই হামলায় ফারুকুজ্জামান ফারুক নামের একজন মেধাবী ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাকে ও তার সঙ্গে থাকা আরো দুই দুর্বৃত্তকে খালেদা জিয়ার শাসনামলে শিক্ষক পেটানোর পুরস্কার হিসেবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের চাকরি দেওয়া হয়েছিল। এই তিন ব্যক্তিকে চাকরি দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া কর্তৃক অবৈধভাবে নিয়োগকৃত উপাচার্য মহোদয়। সেই দুর্বৃত্তরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে ১২ দিন উপাচার্য ভবনের গ্যাস, বিদ্যুৎ আর পানি বন্ধ করে তাঁকে বন্দি করে রেখেছিল। সে সময় শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে উপাচার্যকে ছাত্র নামধারী এই দুর্বৃত্তদের দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বললে উপাচার্য তা করতে অস্বীকার করেন। এরপর খালেদা জিয়া ১৮৯৭ সালের ব্রিটিশ আমলের কালাকানুন প্রয়োগ করে নির্বাচিত উপাচার্যকে অপসারণ করেছিলেন। উপাচার্যের অপরাধ ছিল, তিনি এরশাদ পতন-পরবর্তীকালে গণতন্ত্রকামী মানুষকে একাত্তরের ঘাতকদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলেছিলেন। পাঠক ঠিকই ধরতে পেরেছেন, ওই সময়ের ঘটনাস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। কয়েক দিন আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামধারী একদল দুর্বৃত্ত শিক্ষকদের ওপর হামলা করলে দেশের সব মহল থেকে তার নিন্দা জানানো হয়। ১৯৯০ সালের ঘটনায় আওয়ামী লীগ আর কমিউনিস্ট পার্টি ছাড়া আর কেউ সেই নৃশংস ঘটনার নিন্দা করেনি। ঘটনার প্রতিবাদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংসদ অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করেছিল।
আলোচিত বইটি যদিও একটি একাডেমিক কাজ বলে ধরে নেওয়া যায়, তথাপি বইটির কিছু নির্জলা অসত্য বচন আলোচনার দাবি রাখে। তার আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার উল্লেখ করতে চাই। একজন গবেষক-অধ্যাপক বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভায় প্রস্তাব রাখেন, তিনি শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে বিভাগীয় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে 'বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ' বিষয়ে একটি সেমিনার দিতে চান। কোনো বিরোধিতা ছাড়া তা পাস হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার নামে আবর্জনা কেন সভা শেষে জামায়াত-বিএনপিপন্থী দুজন শিক্ষক সভাপতিকে এসে বললেন, তাঁরাও 'গোলাম আযম ও ইসলাম' এবং 'জিয়া ও গণতন্ত্র'-এর ওপর সেমিনার দিতে চান। সভাপতি কিছু না বলে তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া সমীচীন মনে করেন। একজন সভাপতি যদি এ রকমের ফন্দিসর্বস্ব চাপ সহ্য করতে না পারেন, তাহলে প্রথমেই তাঁদের ওই পদ গ্রহণ করা উচিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগের সভাপতি, অনুষদের ডিন বা উপাচার্য হতে হলে একটু সাহস ও নৈতিক মনোবলের প্রয়োজন। শুধু পাণ্ডিত্য দিয়ে উপমহাদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হয় না। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখার্জি যুগপৎ তাঁর পাণ্ডিত্য ও সাহসের কারণে অমর হয়ে আছেন। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক কঠিন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য আবুল ফজল অসাধারণ সাহসের পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
আলোচিত গ্রন্থটিতে ফিরে আসি। লেখক তাঁর গ্রন্থের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা (লেখক ভুলেও বঙ্গবন্ধু শব্দটি ব্যবহার করেননি, সব সময় শেখ মুজিব সম্বোধন করেছেন) আর বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে কটাক্ষ করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। বাঙালির সব আন্দোলনকে কটাক্ষ করেছেন। পাতায় পাতায় তিনি বাংলাদেশে পরোক্ষভাবে মওদুদিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য ওকালতি করেছেন। লিখেছেন 'মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হলেও পাকিস্তান কখনো পরিপূর্ণভাবে ইসলামী আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হয়নি।' বলতে বাকি রেখেছেন পাকিস্তান মোল্লা ওমরের আফগানিস্তানের মতো একটি অন্ধকার যুগের রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত হলে তিনি খুশি হতেন। আইয়ুব খানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে লিখেছেন, 'রাজনৈতিক নেতৃত্বের চরম ব্যর্থতার কারণে সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।' যে গবেষক পাকিস্তানের প্রাসাদ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন, তিনি নিজেকে আর যা-ই হোক, একজন নির্মোহ গবেষক বলে দাবি করতে পারেন না। তিনি এই সত্যটি এড়িয়ে গেছেন, আইয়ুব খান যখন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে, তখন পাকিস্তানে নতুন প্রণীত সংবিধানের অধীনে একটি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন হলে এবং নির্বাচিত সরকারের হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা গেলে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা অনেকটা খর্ব হয়, যা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কখনো চায় না। পাকিস্তানে সবচেয়ে সংগঠিত রাজনৈতিক দল হচ্ছে সেনাবাহিনী এবং পাকিস্তান বর্তমানে যে একটি পতিত রাষ্ট্র, তার অন্যতম কারণ শুরু থেকে পাকিস্তানের শাসনভার পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে সব সময় সেনাবাহিনীর হাতে ছিল। ১৯৬৯-এর ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন সম্পর্কে লিখতে গিয়ে লিখেছেন, 'পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, শোষণ, নির্যাতন, নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে এই ভূখণ্ডের জনগণ আন্দোলন অব্যাহত রাখে। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের কারণে সামরিক শাসক আইয়ুব খান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিতে বাধ্য হন।' বাঙালির ভাষার দাবিতে আন্দোলনের কথা লেখকের কোনো মন্তব্যে একেবারেই অনুপস্থিত। ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলন কাদের নেতৃত্বে হলো, প্রেক্ষাপট কী, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা কোথায় গেল, তা উল্লেখ না করে বাংলাদেশের কোনো আন্দোলন সম্পর্কে মন্তব্য করা একটি গুনাহর কাজ। ১৯৭০ সালের নির্বাচন সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য হচ্ছে, 'মোটামুটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ'। এর আগে এক গোলাম আযম-নিজামী গং ছাড়া সত্তরের নির্বাচন নিয়ে 'মোটামুটি' শব্দটি কোনো লেখক বা গবেষককে ব্যবহার করতে শুনিনি, এমনকি পাকিস্তানি লেখকরাও না। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের কথা লিখতে গিয়ে লেখক মন্তব্য করেছেন, 'বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির ফলে সৃষ্ট অস্থিরতা ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকলে ১৯৭৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সুপারিশক্রমে রাষ্ট্রপতি দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন।' যুদ্ধ-পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু সরকার দেশ পুনর্গঠনে কী ভূমিকা রেখেছিলেন, তা এই গবেষক বেমালুম ভুলে গেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার এক বছরের মাথায় বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতারা দেশকে যে একটি সংবিধান উপহার দিলেন, তা উল্লেখ করতে এত দ্বিধা কেন? দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতির পেছনে তাঁর নিজ দলের পলাতক আলবদর-রাজাকাররা কী পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তারও কোনো উল্লেখ নেই। কী পরিস্থিতিতে কারা ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছিল, তার উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও তাকে কেন গবেষণাকর্ম বলতে হবে?
বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক দল সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক প্রশ্ন রেখেছেন, অন্যান্য দেশে ধর্মভিত্তিক দল থাকলে বাংলাদেশে এমন দল থাকতে আপত্তি কেন? আপত্তি এ কারণেই যে অন্যান্য দেশের ধর্মভিত্তিক দলগুলো তাদের দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি অথবা গণহত্যায় শামিল হয়নি। জার্মানির নাৎসি পার্টি অথবা ইতালির ফ্যাসিস্ট পার্টি যে কারণে নিষিদ্ধ, সেই একই কারণে বাংলাদেশে এ ধরনের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যা জিয়া ক্ষমতা দখল করে নতুন জীবন দিয়েছিলেন। সবচেয়ে হাস্যকর উক্তি এই পণ্ডিত গবেষকের বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে। তিনি লিখেছেন, 'সর্বোপরি ইসলামী আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।' ধর্মনিরপেক্ষতা কিভাবে ইসলামী আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা বোধগম্য নয়। বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধান 'মদিনা সনদ' ধর্মনিরপেক্ষতার একটি উৎকৃষ্ট দলিল। সমাজতন্ত্রের অর্থ ন্যায্যতা ও সাম্য। পবিত্র ইসলাম ধর্ম তো প্রতিষ্ঠিতই হয়েছিল এর ওপর ভিত্তি করে। লেখকের মতে, 'মুজিব সরকার ভারতীয় সংবিধানের অনুকরণে সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করে।' লেখক যদি এই সত্যটা না জানেন যে ভারতীয় সংবিধানে 'ধর্মনিরপেক্ষতা' ১৯৭৫ সালে যোগ করা হয়েছিল, তাহলে লেখক-গবেষককে 'অর্ধশিক্ষিত' বললে কি অত্যুক্তি হবে? একাত্তরের ২৬ মার্চ সম্পর্কে লিখতে গিয়ে লেখকের মন্তব্য, '২৫ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সাড়ে চার শতাধিক এমএনএ-এমপিএ এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতারা ঢাকায় ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করাই যদি ভুট্টো-টিক্কা গংয়ের লক্ষ্য থাকত, তাহলে তা তাঁরা অনায়াসেই করতে পারতেন। কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে একজনও মারা পড়লেন না বা গ্রেপ্তার হলেন না। অথচ নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হলো। এ থেকে এটা সুস্পষ্ট যে পাকিস্তানের হেফাজত করা পাকিস্তানি সামরিক অফিসারদের উদ্দেশ্য ছিল না। বরং উদ্দেশ্য ছিল শান্তিপূর্ণ পন্থার পরিবর্তে রক্তাক্ত পন্থায় পাকিস্তানের একটি অংশকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।' এটি একটি আবিষ্কার বটে। বইটির পরতে পরতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর শাসনকাল, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিস্তর বানোয়াট তথ্য দিয়ে লেখক পাঠকদের বিভ্রান্ত করতে চেয়েছেন। স্তুতি গাওয়া হয়েছে সামরিক শাসক জিয়া ও মৌলবাদী ইসলামী চিন্তাধারার।
তথাকথিত গবেষণালব্ধ আবর্জনাটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১৪ সালে, যখন দেশে একটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায়। এমনও হতে পারে, সেই পণ্ডিত গবেষক তাঁর পুস্তকটি পাঠ্য বই হিসেবে বিভাগের কোনো একটি কোর্সে চালুও করে দিতে পারেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ইসলামী চিন্তাবিদদের ইসলাম ধর্মে অবদান পড়াতে গিয়ে মওদুদিবাদ পড়ানো হতো। এখন হয় কি না জানি না। এই লেখা কোনো অবস্থায়ই গ্রন্থ সমালোচনা নয়। এটি এ জন্যই লেখা যে বাংলাদেশে কোনো কোনো 'গবেষক' গবেষণার নামে কী আবর্জনা পাঠকদের উপহার দিচ্ছেন, তার কিঞ্চিৎ নজির তুলে ধরা। এ ধরনের পুস্তক নিয়ে কেউ তেমন একটা মাথা ঘামাবেন, তা মনে করি না। লেখার উদ্দেশ্য, যাঁরা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করবেন বা জানতে চাইবেন, তাঁদের শুধু সতর্ক করা।
লেখক : গবেষক ও বিশ্লেষক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন