সত্যিই, করোনা সবকিছু উলট-পালট করে দিয়েছে। তবে করোনার কারণে একটা বিষয় স্পষ্ট হলো, কার কত যোগ্যতা-দক্ষতা তা বোঝা গেল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চরম ব্যর্থতা এর আগে এতটা প্রকট হয়ে ফুটে ওঠেনি। ৩৭ লাখ টাকায় পর্দা কিনেও তারা কোনো জবাবদিহি করেনি, কারও কোনো বিচার-আচার হয়েছে কিনা তাও জানি না। করোনা নিয়ে আইইডিসিআর যে তামাশা করছে, তা অভাবনীয়! আজ পর্যন্ত ৯ হাজার আক্রান্তের কথা বলছে। ৯ হাজারের জায়গায় ৯০ হাজার যদি কেউ বলে কারও কিছু বলার আছে? ৯০ হাজার না হয়ে যদি ৯ লাখ হয় তাহলেই-বা কে কী বলবে? পরীক্ষা করা হচ্ছে ১০০-২০০-৫০০-১০০০- এভাবে পরীক্ষা করে কতজনের করোনা হয়েছে তার কী করে হিসাব হবে- এখানেই শুভঙ্করের ফাঁকি। ভদ্রলোকেরা দয়া করে যে কজনকে পরীক্ষা করছেন, তাদের মধ্যে যে কজন আক্রান্ত তা তারা গর্ব করে বলছেন- এ তো করোনার প্রকৃত হিসাব হতে পারে না। কদিন থেকেই শুনছি, লোকজন করোনার কথা লুকিয়ে হাসপাতাল ও ডাক্তারকে অসুবিধায় ফেলছেন। কেউ করোনা লুকাবে কী করে? সে যে করোনায় আক্রান্ত তা তো তার বোঝার বা জানার কথা নয়। অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যাবে, হাসপাতালে গেলে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলবে করোনা হয়েছে কি হয়নি। সেদিন শুনলাম, কোনো মা প্রসব বেদনায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি নাকি করোনা লুকিয়েছেন। আরেক হার্টের রোগী, তারও নাকি একই অবস্থা। তারা কী করে লুকাল, তাদের কি করোনা নিরূপণের যন্ত্র আছে যে, তা দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে করোনা সংক্রমণের কথা জেনেশুনেও লুকাবে? করোনা হয়েছে কি হয়নি তা সম্পূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপার। মানুষকে শ্রদ্ধা করা দরকার। যে দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা-বিশ্বাস থাকে না, সে দেশ কোনোক্রমেই সভ্য দেশ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না।
শেষ পর্যন্ত করোনায় এত আক্রান্ত হয়েও ডাক্তাররা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন- এ যে কত বড় গৌরবের, কত প্রশংসার কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। এটা সম্পূর্ণই হৃদয় দিয়ে অনুধাবনের ব্যাপার। এটা খুবই সত্য, করোনায় কারও কিছু করার নেই, যা করার নিজেকেই করতে হবে, তার পরিবার-পরিজনকে করতে হবে। হাসপাতালের চাইতে করোনা থেকে মুক্তির জন্য পরিবার-পরিজন এবং নিজের বাড়িই সর্বোত্তম। করোনার চিকিৎসা কী, ওষুধপত্র কী, কেউ জানে না। তবে করোনার চিকিৎসা না থাকলেও করোনা আক্রান্ত যে কোনো রোগী উপযুক্ত সেবা-শুশ্রুষা পেলে, পুষ্টিকর খাবার-দাবার পেলে আপনা-আপনিই সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। করোনার আক্রমণ থেকে বাঁচার সব থেকে বড় উপায় একজন আরেকজন থেকে দূরে থাকা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা- সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বরে আমরা যা করি তাই করা। গরম পানিতে লবণ দিয়ে কুলকুচা করা, কালিজিরা-আদা খাওয়া, মধু থাকলে নিয়মিত এক-দুই চামচ মধু খাওয়া যাতে শরীরে শক্তি থাকে। করোনার সব থেকে বড় প্রতিষেধক বারবার ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া। আমরা যারা মুসলমান, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পাঁচবার অজু করতে হয়- এ ছাড়া গোসল করা, সব মিলিয়ে হাত-পা-মুখ পরিষ্কারে ইসলামের বিধিবিধান কত কার্যকর এখন তা বোঝা যাচ্ছে। এমনিতেই যে কোনো মানুষ দিনে দু-তিন বার হাত-মুখ ধোয়। আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ প্রস্রাব-পায়খানা করে হাত-মুখ ধোয় এবং অনেকেই সাবান দিয়েও ধোয়। করোনা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি সারা বিশ্বের সমস্যা। মোকাবিলাও করতে হবে বিশ্ববাসী সবাইকে মিলে। এখানে কারও ক্ষমতা দেখানোর কিছু নেই, বহু ক্ষমতাবান অসহায়, এতিম-মিসকিনেরও অধম।
কেউ কেউ সরকারকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলছেন। সবাই সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েই আছেন যা আগে কেউ কখনো ভাবতেও পারেনি। আমাদের সবার ষোল আনা সমর্থন সরকার কতটা কীভাবে কাজে লাগাবে সেটা তার ব্যাপার। তবে এখন পর্যন্ত সরকার কারও কোনো সহযোগিতা নেওয়ার চিন্তা করেনি, চেষ্টাও করেনি। সরকার সরকারের মতোই চলছে। পর্বতপ্রমাণ ভুলত্রুটি নজরেই আনছে না। সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনগুলো যা খুশি তাই করছে। চাল-ডাল-তেল চুরি তো আছেই, তার ওপর আবার জনপ্রতিনিধি নামে কিছু দানব কৃষকের কাঁচা ধানে মই দিচ্ছে। ধান খেতে নেমে সেলফি তুলছে। এখন সেলফি তোলার সময়? তবু তুলছে। এসব সহ্য করা যায় না। তবু করতে হয়। আমার এলাকায় রাজাকারের ছেলে স্বাধীনতাবিরোধীরা এখন জনপ্রতিনিধি হয়ে সে যে কি লীলাখেলা করছে- সরকার যদি এসব সামাল দিতে না পারে পরিণতি ভয়াবহ হবে। গার্মেন্ট খুলল, রেল চলল, রেস্টুরেন্ট খুলল, কিন্তু মসজিদ খোলার নাম নেই। কি দুর্ভাগ্য! তারাবি পড়তে পারছি না। আবার রোজা পাব সে কথাই-বা কী করে বলি? কিন্তু তারাবি পড়ার সুযোগ নেই। ’৭৫-এর প্রতিরোধ সংগ্রামী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজালের নামে না হয় নানা দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। কিন্তু নতুন ডিজির ফতোয়াও তো ভালো না। আমি তো কোরআনের হাফেজ নই। তাহলে আমি কী করে খতম তারাবি পড়ব? সূরা তারাবি ছাড়া আমার উপায় কী? বাজারঘাট চলছে, দোকানপাট খুলছে, কিন্তু মসজিদে যেতে পারব না, আল্লাহ-রসুলের নাম নেওয়া যাবে না। মিষ্টির দোকানও খুলল, কিন্তু মসজিদ খুলল না। প্রকৃত মুসলমানের কাছে আল্লাহ-রসুল রসগোল্লা চমচমের চাইতে মিষ্টি- এটা কেমন করে বোঝাই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আমার এক শ্রদ্ধেয় প্রবীণ শিক্ষক আপনাকে অনুরোধ করতে বলেছেন সব দল-মতের দু-এক জন করে প্রতিনিধি নিয়ে জাতীয়ভাবে করোনা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করতে। আপনি তো কত ভিডিও কনফারেন্স করছেন, পাঁচ-ছয় ফুট দূরে দূরে কর্মকর্তাদের বসাচ্ছেন। নেতৃবৃন্দও না হয় ছয় ফুট দূরে দূরে বসবেন। তাতে যে কজন নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা যায় করুন। তাতে আল্লাহর দয়া পেলেও পেতে পারি। বললে আপনি কীভাবে নেবেন জানি না, ’৭১-এর সেপ্টেম্বরে আমি যখন সম্পূর্ণ দিশাহারা, আক্রমণে আক্রমণে ছিন্নভিন্ন। মাত্র ১০-১৫ জন সাথী নিয়ে ঘুরছি, কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই, শুধুই অন্ধকার আর অন্ধকার। সে সময় ঝাউয়াইলে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলাম। আমরা ২০ জনের বেশি ছিলাম না, এক হতশ্রী মাওলানা দোয়া করছিলেন। তার চেহারা দেখার মতো না হলেও কণ্ঠ ছিল অসাধারণ। আমি তন্ময় হয়ে গিয়েছিলাম। কিছু সময় কোথায় ছিলাম নিজেই জানি না। দোয়া মাহফিল ছিল বাদ-জোহর, মাগরিবের আগেই ফল পেয়েছিলাম। আমরা নলিন পৌঁছাতে পৌঁছাতে কোম্পানি কমান্ডার হুমায়ুন বাঙাল, কমান্ডার আবদুল হাকিম, কমান্ডার আঙ্গুর তালুকদার আরও কজনের খবর পেয়েছিলাম। নলিনের চেয়ারম্যান মজিবর খাঁ আমাদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করেছিলেন। দোয়া মাহফিলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত বাহিনীর খবরাখবর চলে এসেছিল। চরম হতাশা থেকে আলোর মুখ দেখেছিলাম। ’৭১-এর ৭ অক্টোবর ছিল পবিত্র শবেবরাত। জোগাড়চরের কাছে শবেবরাতে আবার একটি দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে যে মাওলানা দোয়া-মিলাদ পরিচালনা করছিলেন তিনি জানতেন না আমরা কে বা কারা। তাই আমাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হওয়ার জন্য যেমন দোয়া করেছিলেন, তেমনি পাকিস্তান রক্ষার জন্যও কেঁদে আকুল হয়েছিলেন। সে রাতেই আমরা ফুলতলা ব্রিজে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলাম। যে বিস্ফোরণের আওয়াজ ৩০ মাইল দূরে হেডকোয়ার্টার থেকে শোনা গিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে আর পিছু ফিরতে হয়নি। আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনার কাছে সবিনয় নিবেদন- দেশের সব মত-পথের, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে করোনার এই বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে একটি জাতীয় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করুন। আজ কিছু দিন বিশেষ করে ইফতারের আগে চ্যানেল আই ধরি। আজান শুনে ইফতার করি। ইফতারের পরপরই দেখছি ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’, উপস্থাপন করছেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। এখন বঙ্গবন্ধুর সব থেকে বড় সমর্থক। কিন্তু কিছু দিন আগেও বঙ্গবন্ধুর নিন্দায় তার মুখের কাছে কাছানো যেত না। সাগর চ্যানেল আই করেছেন। সেখানে অনেক রকমের অনুষ্ঠান হয়। এখন তো চ্যানেল আই বলতে গেলে সরকারেরই চ্যানেল। সাগর একসময় ছোটবোন শুশুর সঙ্গে পড়ত। যে কারণে সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন আর অভিনেতা আফজাল আমাকে খুব ভালোবাসে, সম্মান করে। সেজন্য আমিও ওদের ভীষণ ভালোবাসি, যত্ন করি। নাসিরউদ্দিন বাচ্চু ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ নামে অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলছেন। একসময় গোলাম আযমের ফাঁসির দাবিতে আয়োজিত আন্দোলনে দৌড়াদৌড়ি-ছোটাছুটি করেছেন। সে সময়ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে খুব একটা আগ্রহ দেখিনি। বরং তখনো বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানা নিন্দা করতে দেখেছি। বিশেষ করে বিএনপি আমলে সেলিম আল দীন যখন মারা যান তখন এই নাসিরউদ্দিন বাচ্চু কী এক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। শহীদ মিনারে বলা হচ্ছিল তারা সেলিম আল দীনকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে চিকিৎসা করার জন্য ৬০ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছেন; শুনে বিস্মিত হয়েছিলাম। সেলিম আল দীনের জন্য এত অল্প সময়ে ৬০ লাখ, আমার জন্য ৬ লাখ হবে কিনা সন্দেহ। সেলিম আল দীন করটিয়া সাদত কলেজে পড়ত। সেই সুবাদে সম্পর্ক ছিল, পরিচয় ছিল। বামপন্থিদের কাছে কখনো জীবিত মুজিব প্রিয় হতে পারেনি। অনেকে বলেন, কিছু বামপন্থি বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন দিয়ে তাঁর মৃত্যুর রাস্তা প্রশস্ত করেছিল। যারা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসেন তারা কী করে মতিয়া চৌধুরীকে সহ্য করেন, ভেবে পাই না। রাশেদ খান মেনন, ভদ্রলোক হেলেদুলে চলেন। জীবিত মুজিবকে এক দিনের জন্যও সুস্থির থাকতে দেননি। শেখ মুজিব যখন বঙ্গবন্ধু হয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন তখনো বামপন্থিরা বঙ্গবন্ধুকে মেনে নেয়নি, তাঁকে নানাভাবে জ্বালাতন করেছে। ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিব জেল থেকে বেরিয়েছিলেন। লাখ লাখ মানুষের সামনে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদ দেশবাসীর পক্ষ থেকে তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ফেব্রুয়ারির এক সপ্তাহ, মার্চের সাড়ে তিন সপ্তাহ। মানে ২৪ মার্চ ’৬৯ ইয়াহিয়া খান আইয়ুব খানের হাত থেকে ক্ষমতা নিয়ে সামরিক আইন জারি করেছিলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ কদিন? এরই মধ্যে পল্টনে বামপন্থিদের সভায় নূহ-উল-আলম লেনিন বঙ্গবন্ধুর নামে লিফলেট ছিঁড়তে গিয়ে তার স্বরে বলেছিলেন, ‘এই যে তোফায়েল আহমেদ, তোদের বঙ্গবন্ধু চঙ্গবন্ধুকে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করলাম।’ এই বলে লিফলেট টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। যা আমি নিজ কানে শুনেছিলাম এবং নিজের চোখে দেখেছিলাম। তিনিও কী করে আমার বোনের আওয়ামী লীগে সভাপতিম-লীর সদস্য? এখন টিভিতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নানা কথা বলে মুখে ফেনা তোলেন। মতিয়া চৌধুরী, রাশেদ খান মেনন এসব পন্ডিত বঙ্গবন্ধুকে সিআইএর দালাল, ভারতের লেলিয়ে দেওয়া কুকুর, ছয় দফা সিআইএর প্রণীত এসব বলে হাততালি পাওয়ার চেষ্টা করতেন। তারা যখন আওয়ামী রাজনীতিতে দাপিয়ে বেড়ান তখন কষ্ট না পেয়ে পারি না। এখন কষ্ট পেলে মুখ বুজে সহ্য করতে ইচ্ছা করে না, যদি আর সময় না পাই। সেদিন চ্যানেল আইয়ে নাসিরউদ্দিন বাচ্চুর উপস্থাপিত ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার আমর-উল ইসলাম যা বললেন তার কথা আর অধ্যাপক মান্নান অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের কথা এক নয়, বিশ্বাসযোগ্যও নয়। কারণ আমর-উল ইসলাম ছাড়া এদের কারও সঙ্গেই বঙ্গবন্ধুর দেখা-সাক্ষাৎ খুব একটা হয়নি। ছোট মানুষ বড় হলে তলে দেখে না বেইজ কোথায়, অরিজিন কী, তা সব সময় লুকাতে চায়। হঠাৎই আতিউর রহমান কিছু দিন আগে টিভিতে এক মন্তব্য করেছিলেন। দুর্ভাগ্য! কী করে যেন আমি শুনেছিলাম বা দেখেছিলাম। বঙ্গবন্ধুর দেশের মানুষদের নিয়ে অহংকার ছিল, ভালোবাসা ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বেকুব ছিলেন না। হঠাৎই আতিউর রহমান কী করে যেন বলে বসলেন বঙ্গবন্ধু নাকি বলেছিলেন, ‘আমার গাছপালা আছে, মাটি আছে, মানুষ আছে, আমি শত বছর ঘাস খেয়ে থাকব তাও কারও কাছে হাত পাতব না।’ বঙ্গবন্ধু কখনো ঘাস খেতে চাননি। তিনি জানতেন ঘাস পশুর খাদ্য। মানুষ ভাত খায়, রুটি, ফল-ফলারি খায়, রান্না করা মাছ-মাংস খায় আর জীবজন্তু লতাপাতা-ঘাস খায়। জুলফিকার আলি ভুট্টো মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে বলেছিলেন, আমরা ঘাস খেয়ে হলেও হাজার বছর যুদ্ধ করব। ভুট্টোর জাতিসংঘের এই ভাষণের পরদিন অথবা তার পরদিন তার যুদ্ধের স্বাদ মিটে গিয়েছিল। বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদাররা নতজানু হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। তাই পন্ডিতদের বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পন্ডিতি বড় কষ্ট লাগে। দুর্ভাগ্য! বঙ্গবন্ধুর সব বিরোধী কী করে যে আমার বোনের আঁচলে ঠাঁই পেল; ভাবতে পারি না। এটা সত্য, দুর্জনের বাহানার অভাব নেই। সুই হয়ে ঢুকে তারা ফাল হয়ে বেরোতে পারে। জানি না, কী জাদু তারা জানে, যে জাদুর কাছে সব লাচার। তবে জানি, এই অভিশপ্ত লোকজন আর খুব বেশি দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশপাশে ঘুরঘুর করতে পারবে না। দেশ ও জাতির জন্য জাতির কল্যাণে এদের বিদায় করতেই হবে। আল্লাহ সহায় হোন।
লেখক : রাজনীতিক।
উৎসঃ বিডি প্রতিদিন
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন