বাংলাদেশে একটি মহল দিন রাত্রি ২৪ ঘণ্টা অসাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজা উড়িয়ে রেখেছে। রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে এদের পুরো ভাগে রয়েছে আওয়ামী লীগ। ডাল পালা হিসেবে রয়েছে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন। সব মিলিয়ে অসাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারীরা একটি ঘরানা বা শিবির। এদের সাথে আদর্শিকভাবে যুক্ত আছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। এই ঐক্য পরিষদ নিজেকে অসাম্প্রদায়িক বলে দাবি করে। কার্যত মোটেই অসাম্প্রদায়িক নয়। প্রথমত তার নামটাই সাম্প্রদায়িক। মুসলিম লীগ যদি তার ভাষায় সাম্প্রদায়িক সংগঠন হয়ে থাকে তাহলে এই পরিষদ সাম্প্রদায়িক হবে না কেন? যে দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান, তাদের বাদ দিয়ে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষের সংগঠন অসাম্প্রদায়িক হয় কি করে? তার ব্যানারে রয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান। অর্থাৎ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে ৩টি জনগোষ্ঠী। সংগঠনটিতে মুসলমানদের নেয়া হলো না কেন? হয়তো বলা হবে, বাংলাদেশে হিন্দুরা বর্তমানে বঞ্চিত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তারা তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছে না। এই রকম অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু একটি স্বাধীন দেশে কি এই নামের কোনো সংগঠন থাকা উচিৎ? আমি এ কথা বলব না যে, স্বাধীন দেশে এই ধরনের সংগঠন থাকতে পারে না। কারণ, গণতন্ত্র বলে যে, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সব ধরনের মতামত এবং সংগঠন থাকতে পারে। এমনকি সেগুলো যদি সাম্প্রদায়িকও হয়। অবিভক্ত ভারতে মুসলিম লীগ নামে রাজনৈতিক দল ছিল। পরাধীনতার পটভূমিতে সেটি অস্বাভাবিক ছিল না। তখন ভারতবর্ষে সমস্ত মুসলমান একটি বিষয়ে একমত ছিল যে, সম্প্রদায়গতভাবেই ইংরেজ সরকার মুসলমানদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। আর সেটি করতে গিয়ে ভারত বর্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায় অর্থাৎ হিন্দুদের ফেভার করছে। এই বক্তব্য যে যুক্তিসঙ্গত এবং ন্যায্য ছিল সেটি প্রমাণিত হয়েছে ভারত বিভক্তির মাধ্যমে। কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর রাজনৈতিক দল হিসেবে মুসলিম লীগ তার প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছিল। কথাটিকে ইংরেজিতে বললে সঠিক স্পিরিটটি বোঝা যায়। সেটি হলো, ভারত বিভক্তি তথা স্বাধীনতার পর মুসলিম লীগ Out lived its utility. . সেজন্য তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে মুসলিম লীগ ধীরে ধীরে Redundant হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ কায়েম হওয়ার পর সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এবং আওয়ামী লীগ যখন সব সময় অসাম্প্রদায়িকতার মুখর প্রবক্তা, এখন হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান এই ৩টি সম্প্রদায়ের নাম দিয়ে কোনো সংগঠন থাকার প্রয়োজন দেখা যায় না। এছাড়াও দেশে রয়েছে জাসদ, কম্যুনিস্ট পার্টি প্রভৃতি রাজনৈতিক সংগঠন যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক স্বার্থের সার্বক্ষণিক প্রবক্তা। তারপরেও দেখা যায় যে, এই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ১৯৭৫ সালে ঢাকায় গঠিত হয়। এর প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত। গঠনের সময় সংগঠনটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, বাংলাদেশের ধর্মীয় এবং নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের মানবিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য এই সংগঠনটি গঠিত হয়েছে। ১৯৮৮ সালের ৯ জুন একটি সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বাংলাদেশে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম করেন। আর ঠিক সেই দিনই বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত (সংক্ষেপে সি.আর. দত্ত) এই হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। শুধু তাই নয়, ৯ জুন যেহেতু ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম করা হয় তাই ঐ দিনকে এই ঐক্য পরিষদ ‘কৃষ্ণ দিবস’ বা ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে। ১৯৯০ সালে আমেরিকায় এই পরিষদের শাখা গঠিত হয়। ২০০৫ সালে কানাডার টরোন্টোতে এই পরিষদের অপর একটি শাখা গঠিত হয়। ইউরোপের ফ্রান্সসহ একাধিক দেশে এই পরিষদের শাখা রয়েছে। ॥ দুই ॥হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক হলেন অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী। গত ১৬ অগাস্ট রবিবার দৈনিক প্রথম আলোতে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। রানা দাশ গুপ্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন চরমপন্থী নেতা। বাংলায় বিষয়টি আমি সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারলাম কিনা জানিনা। তবে ইংরেজিতে এভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িক অধিকার রক্ষায় তিনি একজন Hard liner. প্রথম আলোর সাক্ষাৎকারটি অনেক বড়। আমরা শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট অংশগুলো নিচে তুলে দিলাম। পত্রিকাটি তাকে প্রশ্ন করেছিল, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বলে পরিচিত আওয়ামী ওলামা লীগ সমাবেশ করে বলেছে, পুলিশসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আনুপাতিক হারের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় সংখ্যালঘুদের পদায়ন করা হয়েছে। এতে সংখ্যাগুরু মুসলমানরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? রানা দাশ গুপ্ত উত্তরে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজনকে প্রধান বিচারপতি পদে বসানো হয়েছে। অথচ ভারতে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি থেকে অনেক উচ্চপদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকরা আসীন ছিলেন এবং আছেন। প্রধান মন্ত্রীর ব্যক্তিগত আগ্রহে যেমন এটি হয়েছে, তেমনি প্রধান বিচারপতি যেদিন পদায়ন পেয়েছেন, সেদিনই ওলামা লীগ সমাবেশ করে এর বিরোধিতা করেছে। এখন তারা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। আবার এই সংগঠনের সভা-সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও যান। যে কথাগুলো মৌলবাদী ডানপন্থীরা বলতে পারছে না, ওলামা লীগ সেটিই বলছে। তাদের এসব তৎপরতা মৌলবাদীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পাঁচ দফা চুক্তির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যাতে শরিয়াহ আইন চালুর কথা বলা হয়েছিল। এখন আওয়ামী লীগকেই পরিষ্কার করতে হবে, তারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, না ওলামা লীগের দাবি অনুযায়ী ধর্মরাষ্ট্র? দুটো তো একসঙ্গে চলে না। ৬৮ বছর ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা বঞ্চিত। মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাদের উপযুক্ত পদ দেয়া হয়নি। তাই বর্তমান সরকারের আমলে যখন যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে কিছু ক্ষেত্রে (সব ক্ষেত্রে নয়) সংখ্যালঘুদের পদায়ন করা হচ্ছে, তখনই অন্ধকারের শক্তি শোরগোল তুলছে।অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে যখন নির্বাচন হয়, তখন দেখা যায়, নতুন ভোটারদের ৭০-৮০ শতাংশই সংখ্যালঘু। ভারতের বিজেপি, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সম্পর্কে তিনি বলেন, আসলে বিএনপি-জামায়াত শুরু থেকেই পলিটিকস অব এক্সক্লুশন (বাইরে রাখার রাজনীতি) করে এসেছে। অনেকে বিএনপি ও ভারতের বিজেপির রাজনীতিকে এক করে দেখছেন। কিন্তু বিজেপি তাদের মুখপাত্র করেছে একজন সংখ্যালঘুকে (এম জে আকবর)। বিএনপি কি তা করবে?তিনি জানান যে, সংখ্যালঘুদের দাবিদাওয়া নিয়ে তারা আগামী ২৭ নভেম্বর বেলা একটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক লাখ লোকের মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই সমাবেশ থেকে তারা কেবল প্রতিবাদই জানাবেন না, সংখ্যালঘুদের পক্ষে জাতীয় ঐকমত্যের দাবিও পেশ করবেন।সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯৫৪ সালে ৩শ’ আসনের ৭২টি ছিল সংখ্যালঘুদের। সত্তরের নির্বাচনেও সংখ্যালঘুদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে সংসদে ও দলীয় কাঠামোয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব কমতে থাকে। তাই আমরা সংখ্যালঘুদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দাবিকে সামনে নিয়ে আসব। জনসংখ্যার ভিত্তিতে সংসদে সংখ্যালঘুদের আসন সংরক্ষিত থাকতে হবে। তবে সেটি পৃথক নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, যুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেভাবে নারী কমিশনারদের ভোট নেওয়া হয়, সেভাবেই সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা যায়।হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংক, এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা কোনো দলের ভোটব্যাংক হতে চাই না। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের পলিটিকস অব এক্সক্লুশনই আমাদের ওদিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, এটি দুর্ভাগ্যজনক যে, এই সরকারে একজনও পূর্ণ মন্ত্রী নেই। যদি আড়াই কোটি মানুষকে বিবেচনায় নেওয়া হয়, তাহলে অন্তত পাঁচজন পূর্ণ মন্ত্রী থাকার কথা। এটি হচ্ছে সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্য। এ প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মন্ত্রিত্ব হারানোকে ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করি। তিনি একজন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান। শেয়ারবাজারসহ নানা কেলেঙ্কারি ও দলের বিচ্যুতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। যাদের বিরুদ্ধে এসব কথা গিয়েছে, তারাই তাকে সরানোর জন্য কল্পকাহিনী সাজিয়েছেন। ॥ তিন ॥হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্তের উক্তির কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অংশ ওপরে তুলে ধরা হলো। এক কথায় বলা যায় যে, রানা দাশ গুপ্ত চরম সাম্প্রদায়িক উক্তি করেছেন। তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে ভারত প্রেম ধরা পড়ে। আমি ঢালাও ভাবে এসব মন্তব্য করছি না। তার ইন্টারভিউয়ের কয়েকটি অংশ নিয়ে আমি এখানে আলোচনা করছি। রানা বাবু একথা কোথায় পেলেন যে, মি. এসকে সিনহা প্রধান বিচারপতি হওয়ায় কেউ কেউ নাকি শোরগোল তুলেছে? পত্র-পত্রিকার পাতায় প্রধান বিচারপতি পদে এসকে সিনহার নিয়োগের বিরুদ্ধে আমি কোথাও কোনো মন্তব্য দেখিনি। বরং বার সমিতি তাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, মেধা ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপযুক্ত পদ দেওয়া হয়নি। এ তথ্যই বা তিনি কোথায় পেলেন? বরং আমি মনে করি, সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে শুধু সরকারই নয়, বাংলাদেশের মানুষও অত্যন্ত উদার। বাংলাদেশের সব শ্রেণীর মানুষ হিন্দু ভাইদেরকে ‘সংখ্যালঘু’ হিসেবে বিবেচনা করতে চায় না। বরং ১৬ কোটি বাংলাদেশীর মধ্যে তারাও রয়েছে বলে মানুষ বিবেচনা করে। বাবু রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, অনেকে বিএনপি ও ভারতের বিজেপির রাজনীতিকে এক করে দেখছেন। কিন্তু বিজেপি তাদের মুখপাত্র করেছে একজন সংখ্যালঘুকে (এম জে আকবর)। বিএনপি কি তা করবে? রানা বাবু, শুধুমাত্র এম জে আকবরকে দলীয় মুখপাত্র করেই কি ভারত এবং বিজেপি বাংলাদেশ বা বিএনপির চেয়ে বেশি অসাম্প্রদায়িক এবং উদার হয়ে গেল? বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার কথা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এত সকালেই ভুলে গেল? রানা বাবু, আপনি কি ভুলে গেছেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গুজরাটে বিজেপির নেতা থাকাকালীন তার নির্দেশে ২ হাজার মুসলমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে? বিজেপির এই রকম কীর্তি আরও অনেক আছে। বিএনপিকে ছোট করতে গিয়ে বিজেপিকে বড় করার চেষ্টা করবেন না। তাহলে থলির আরও অনেক বিড়াল বেরিয়ে আসবে। বাংলাদেশে আড়াই কোটি হিন্দু রয়েছে, এই তথ্যটি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা কোথায় পেলেন? আড়াই কোটি যদি হিন্দু হয় তাহলে তারা মোট জনসংখ্যার ১৫.৬ শতাংশ। অথচ প্রথম আলোর ঐ সাক্ষাৎকারেই বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা হলো ৯.৭ শতাংশ। এক ধাক্কাতেই রানা বাবু হিন্দুদের সংখ্যা ৫.৯ শতাংশ অর্থাৎ ৯৪ লক্ষ ৪০ হাজার বা প্রায় ১ কোটি বাড়িয়ে দিলেন?সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে মন্ত্রিসভা থেকে কেন বের করে দেওয়া হয়েছে সেটা কে না জানে? কালো বিড়ালের কাহিনী মানুষ কি এত সকালেই ভুলে গেছে? রানা বাবুরা কি শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারবেন? সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে নাকি ৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী নেওয়ার কথা। সেখানে নাকি ১ জনকেও নেওয়া হয়নি। কেন নেওয়া হয়নি সেটি প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেই তো পারেন। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে মারাত্মক সাম্প্রদায়িক দাবি করেছে, জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘুদের আসন প্রাপ্তি নিয়ে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে সংসদে সংখ্যালঘুদের আসন সংরক্ষিত রাখার দাবি করেছেন বাবু রানা দাশগুপ্ত। এর চেয়ে চরম সাম্প্রদায়িক দাবি আর কি হতে পারে? বাস করব বাংলাদেশী হিসেবে, আর সংসদে আসন চাইব ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে, এই ধরনের তথাকথিত প্রগতিবাদিতার ঝান্ডা আর কতদিন তারা ওড়াবেন?
Email:
[email protected]
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন