হঠাৎ করে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা উঠলো কেন? এর সূত্র কোথায়? বিষয়টি নিয়ে আমি অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু খুব নির্ভরযোগ্য মহল থেকে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাইনি। খুঁজতে খুঁজতে একটি দৈনিক পত্রিকার একটি কলামে কিছু তথ্য পেয়েছি। কিন্তু তথ্যগুলো সম্পূর্ণ নতুন। ইতিপূর্বে আর কেউ আমাকে এসব কথা বলেননি। অথবা অন্য কোনো পত্রিকায় দেখিনি। তৎসত্ত্বেও তথ্যগুলো সম্পূর্ণ নতুন বলে আমি পাঠকদের খেদমতে সেগুলো পেশ করছি এই আশায় যে, যারা এই লেখাটি পড়বেন তারা বিষয়টি নিয়ে আরো অনুসন্ধান করবেন এবং প্রকৃত সত্য বের করে আনবেন। তবে এ প্রসঙ্গে আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই যে, এসব তথ্য বা ব্যাখ্যার কোনো দায়-দায়িত্ব আমার বা দৈনিক ‘ইনকিলাবের’ নয়। তার আগে এ সম্পর্কে আমার কি ধারণা সেটি আমি প্রিয় পাঠকদের কাছে পরিষ্কার করে বলতে চাই। মধ্যবর্তী নির্বাচন সম্পর্কে যেসব জল্পনা-কল্পনা চলছে সেসব জল্পনা-কল্পনার কারণগুলো নিম্নরূপ-বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলোকে শুধুমাত্র সচলই করা হয়নি, সে গুলোতে গতি সঞ্চারও করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হল, মামলাগুলো তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলা এবং বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে শাস্তি দেয়া। আদালতে তারা যদি দ-িত হন তাহলে তারা নৈতিক স্খলনের দায়ে শাস্তি পাবেন। সেই শাস্তি যদি দুই বছরও হয় তাহলেও পরবর্তী ৩ বছরের জন্য তারা নির্বাচনের অযোগ্য হয়ে যাবেন। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে তারা কোনো নির্বাচন করতে পারবেন না। পরবর্তী নির্বাচন হবে ৪ বছর পর, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে। আর বেগম জিয়া এবং তারেক রহমান নির্বাচনের জন্য অযোগ্য থাকবেন ২০২০ সাল পর্যন্ত। সুতরাং মধ্যবর্তী নির্বাচন তো দূরের কথা, ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তারা দাঁড়াতে পারবেন না। যারা মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা ছড়াচ্ছেন তারা আরও বলছেন যে, বেগম জিয়া এবং তারেক রহমান নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষিত হলে সেই নির্বাচনে মূল ধারার বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। তখন আওয়ামী লীগ বিএনপি ভাঙ্গার চেষ্টা করবে। বিএনপির মধ্যে যারা সুবিধাবাদী, যারা মইনুদ্দিন ফখরুদ্দিনের জামানায় বিএনপি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল, ঐ ধরনের কিছু সুবিধাবাদী লোক এবারও বিএনপি থেকে বেরিয়ে যাবে এবং ইলেকশন করবে। তার অর্থ হল, সরকারের হাতে থাকবে একটি নয়, দুটি গৃহপালিত বিরোধী দল। একটি তো আছেই। সেটি হল জেনারেল এরশাদ এবং তার পতœী বেগম রওশন এরশাদের জাতীয় পার্টি। আরেকটি নতুন গজাবে, সেটি হবে মূল ধারার বিএনপির দলছুট অংশ। এভাবেই মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা ছড়ানো হচ্ছে এবং সেটা হওয়ার যে সম্ভাবনা রয়েছে তার পেছনে ওপরে উল্লেখিত যুক্তিগুলো দেয়া হচ্ছে। আমি লক্ষ্য করেছি যে, সধারণ এবং সহজ-সরল মানুষরাই নন, অনেক বুদ্ধিমান ব্যক্তি ও কিছু পলিটিক্যাল এলিমেন্টও এসব কথায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এই পটভূমিতে জল্পনা-কল্পনার মধ্যে যে পয়েন্টটি কমন সেটি হলো এই যে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় হলো আগামী বছরের নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাস অথবা ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস।॥ দুই ॥আমার ব্যক্তিগত ধারণা ভিন্ন। আমি চোখের সামনে পরিষ্কার দেখছি যে, দেশে এখন কোনো আন্দোলন নেই। নেই কোনো মিছিল-মিটিং। তাহলে সরকার মধ্যবর্তী নির্বাচন দেবে কেন? সেই নির্বাচন দেয়ার জন্য সরকারের তো কোনো গরজ নেই। তাহলে গায়ে পড়ে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে যাবে কেন? এই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বারবার বলছেন যে, ২০১৯ সালের আগে কোনো ইলেকশন নয়। আর সেই ইলেকশনও হবে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী। অর্থাৎ বর্তমান সরকারের অধীনেই ইলেকশন হবে। ২০১৪ সালের ইলেকশনের মতো এই সরকারই ক্ষমতায় থাকবে এবং বর্তমান পার্লামেন্টই বহাল থাকবে। এই পার্লামেন্ট বহাল থাকা অবস্থাতেই আরেকটি পার্লামেন্টের নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা যথা- তোফায়েল আহমেদ, আমীর হোসেন আমু প্রমুখ এই ধরনের কথা বলছেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ধৈর্য ধরার উপদেশ দিয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ একাধিক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতা কোনরূপ রাখঢাক না করে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার স্থান হবে কাশিমপুর কারাগারে। এখনও বেগম জিয়া আদালতে কিছুটা সম্মান পাচ্ছেন। এরপর তো তিনি সেই সম্মানটুকুও পাবেন না। এরপর তাকে আদালতের বারান্দায় রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। এখন প্রিয় পাঠক, আপনারাই বলুন, এর পরেও মধ্যবর্তী নির্বিাচনের কথা ভাবনায় আসে কি করে? মধ্যবর্তী নির্বাচন তখনই সম্ভব যখন সেটি সরকারের নিকট থেকে আদায় করা যাবে।॥ তিন ॥বিরোধী দল কি এখন মধ্যবর্তী নির্বাচন আদায় করার অবস্থায় আছে? বিরোধী দল বিএনপিকে এখন বলা যেতে পারে ভাঙ্গা হাট। অথচ কিছুদিন আগেও সেই হাটটি খুব জমজমাট ছিল। এই ভাঙ্গা হাট কবে আবার জমজমাট হবে সেটি অতি বড় রাজনৈতিক প-িতও বলতে পারেন না। বিএনপি তথা ২০ দল কেন এমন ছত্রখান হয়ে গেল, সেটি নিয়ে দেশে এখন চলছে তুমুল আলোচনা, নানা বিশ্লেষণ। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এই যে, এসব আলোচনার অধিকাংশই একপেশে এবং এক চক্ষু হরিণের মতো। তাদের আলোচনায় মনে হয়, যত দোষ তা সব ঐ নন্দ ঘোষের। বিএনপির সিনিয়র নেতারা ভীরু, কাপুরুষ, হরতাল ডেকে বিএনপির সিনিয়র নেতারা ঘরে বসে টেলিভিশন দ্যাখে, রাজধানীর সাথে মফস্বল জেলাগুলোর কোনো সংযোগ-সমন্বয় নেই, সাংগঠনিক ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল, এখন যারা দলে আছে তারা ভবিষ্যৎ হালুয়া রুটির লোভেই আছে, যারা সৎ এবং ত্যাগী কর্মী তাদের মূল্যায়ন করা হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব অভিযোগের যে আংশিক সত্যতা নেই, সে কথা আমরা বলছি না। কিন্তু এক শ্রেণীর পত্র-পত্রিকায় এবং টেলিভিশন টকশোতে শুধু এই দিকগুলোকে হাইলাইট করা হয়। মনে হচ্ছে, বিএনপির জন্য আর কোনো সমস্যা নেই।কিন্তু একথা কেউ বলেন না যে, বিএনপি নিজ থেকে ছত্রখান হয়নি, বিএনপিকে সরকারিভাবে এবং প্রশাসন যন্ত্র দিয়ে চুরমার করার চেষ্টা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে এক ইফতার মাহফিলে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন যে, বিএনপির ৫০ হাজার নেতা-কর্মী কারাগারে আছে। প্রিয় পাঠক, বলুন, বাংলাদেশে বিগত ৪০ বছরে কোনো সরকারের আমলে ৫০ হাজার তো দূরের কথা, তার অর্ধেক অর্থাৎ ২৫ হাজার বিরোধী নেতাকর্মীও কি জেলে ছিল? বিএনপির শীর্ষ নেত্রী বেগম জিয়া ছাড়া তার সমস্ত টপ নেতা জেলে ছিলেন বা আছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সরকারের আমলে ৬ বার জেল খাটছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে ৭৮টি। একই অবস্থা দ্বিতীয় বৃহত্তর দল জামায়াতে ইসলামীরও। তাদের দাবি অনুযায়ী এখনো তাদের ৪০ হাজার নেতাকর্মী জেলে। বিএনপি এবং জামায়াতের প্রায় ৫০ হাজার কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ঝুলছে। এসব মামলায় ২ লক্ষাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই দুটি রাজনৈতিক দলের হাজার হাজার কর্মী বিগত ৪ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের বাসায় চলছে নিয়মিত পুলিশী তল্লাশী। তথা কথিত প্রগতিবাদী বন্ধুদেরকে বলি, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত অর্ধলক্ষ মামলা, অর্ধলক্ষ রাজবন্দির কথা শুনেছেন? ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ, গুম, খুন ইত্যাদির কথা নাইবা বললাম। সোজা কথা, বিরোধী দলকে যেমন দাঁড়াতেই দেয়া হচ্ছে না তেমনি বিএনপি-জামায়াতের বাইরে অন্য কোন প্রগতিবাদী শক্তি বিরোধী দল হিসেবে উত্থিত হোক সেটিও সরকার বরদাস্ত করছে না। আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ডাকসুর দুই দুই বারের নির্বাচিত ভিপি নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। তিনি আজ প্রায় ৫ মাস বিনা বিচারে কারাগারে আছেন। এতক্ষণ ধরে যেসব কথা বলা হলো সেসব কথা তথাকথিত প্রগতিবাদী বন্ধুরা কাগজে লেখেন না, টিভি টকশোতে বলেন না এবং সেমিনার মানববন্ধন ও মিছিল-মিটিংয়ে উচ্চারণ করেন না। শুধুমাত্র বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করা হয়। শুধুমাত্র সেই দুর্বলতাকেই হাইলাইট করে বলা হয় যে, বিএনপি মুসলিম লীগের পরিণতি বরণ করছে। এই যেখানে অবস্থা সেখানে বিএনপি তথা ২০ দল সরকারের নিকট থেকে মধ্যবর্তী নির্বাচন ছিনিয়ে আনবে কিভাবে?॥ চার ॥তারপরেও মধ্যবর্তী নির্বাচনের জল্পনার ফানুস আকাশে উড়ছে। কেন উড়ছে? আমার কাছে সঠিক কোনো তথ্য নেই। কিন্তু এই কলামের শুরুতে একটি পত্রিকায় যে তথ্য পরিবেশনের কথা বলা হয়েছে সেটি এখন এখানে পরিবেশন করছি। গত ২ জুলাই ঢাকার একটি বাংলা দৈনিকে একটি উপ-সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নিবন্ধটির শিরোনাম, ‘অনিবার্য হয়ে উঠছে মধ্যবর্তী নির্বাচন?’ আমরা ঐ নিবন্ধের অংশ বিশেষ এখানে হুবহু তুলে দিলাম। এখানে পুনরায় উল্লেখ করতে চাই যে, এখানে আমার বা ‘ইনকিলাবের’ একটি শব্দও জুড়ে দেয়া হয়নি। যাই হোক, ঐ নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের এমন ধারণা দেয়া হচ্ছে যে, নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় পরিবর্তনের সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের ওপর চাপ যে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে সেটি ক্রমেই প্রকাশ্য হয়ে উঠছে। এতদিন এ চাপ ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে। এখন তার সাথে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের প্রভাবশালী কূটনৈতিক অংশীদার দেশ চীনও।’ ঐ নিবন্ধে আরো বলা হয়, ‘চীনা আস্থা অর্জনের জন্য বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এখানে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি গড়তে দেবে মর্মে গোপন চুক্তির ভুয়া দলিল করে তাদের সরবরাহ করা হয়। এসব প্রচেষ্টার ফলে চীন একপর্যায়ে বিএনপির ওপর আস্থা একেবারেই হারিয়ে বসে। তারা মনে করতে থাকে, আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন যোগালে শেষ পর্যন্ত তাদের মাধ্যমে স্বার্থ রক্ষিত হবে। সরকার চীনকে বিভিন্ন প্রকল্প দেয়ার ব্যাপারেও নানাভাবে আশ্বস্ত করে রাখে।’ নিবন্ধে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার চীন সফরের আগে তাদের ধারণা দেয়া হয় যে, প্রধানমন্ত্রী বেইজিং থাকতেই সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা চীনের সাথে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যাপারে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরিবর্তে ভারতীয় কোম্পানিসহ কনসোর্টিয়াম করে বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনার প্রস্তাব দেয়। এতে তারা প্রথম ধাক্কা খায়। কিন্তু এই প্রকল্প যে শেষ পর্যন্ত চীনকে দেয়া হবে না, এ রকম কোনো ধারণা তাদের দেয়া হয়নি। সর্বশেষ গভীর সমুদ্রবন্দরের স্থান সোনাদিয়ার পরিবর্তে পায়রা নিয়ে আসার পর চীন যে বন্দর নির্মাণের ব্যাপারে আর অগ্রাধিকার তালিকার মধ্যেই থাকছে না, তা স্পষ্ট হতে থাকে।’ এই নিবন্ধে আরও সব চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়া হয়েছে। যেমন, ‘ভারতের চাওয়া-পাওয়ার সব কিছু দিতে গিয়ে চীনের সাথে সৃষ্টি হয় দূরত্ব। ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার ব্যাপারে দুটি বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়েছিল চীনকে। প্রথমত, এই ট্রানজিট কোনোভাবেই প্রতিরক্ষা কাজে ব্যবহার করা হবে না। দ্বিতীয়ত, ট্রানজিট চুক্তির পর বিসিআইএম করিডোর চুক্তিও সম্পন্ন করবে ঢাকা। কিন্তু বাস্তবে ভারতের সাথে চট্টগ্রাম ও মংলাবন্দর ট্রানজিটের মালামাল আনা-নেয়ার ব্যাপারে যে চুক্তি হয় তাতে এমন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাতে ভারত ঘোষণা না দিয়ে সব ধরনের মালামাল বা সরঞ্জাম ট্রানজিটে আনা-নেয়া করতে পারবে। চুক্তির শর্তে বলা হয়, ভারতের মালবাহী কন্টেইনার চট্টগ্রাম বা মংলাবন্দরে পৌঁছার পর তা গ্রহণ করার সময় ভারতীয় ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও কাস্টমস কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু সিল মারা কন্টেইনার বাংলাদেশের কর্মকর্তারা খুলতে বা যাচাই করতে পারবেন না। সিল মারা অবস্থায় সেটি ট্রানজিট রুট দিয়ে সীমান্তের ওপার পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে। এর মধ্যে যদি কন্টেইনার খোলা হয় তার দায়দায়িত্ব বর্তাবে বাংলাদেশের ওপর। এই শর্তের কারণে অসত্য ঘোষণা দিয়ে সহজেই ভারত গোলা-বারুদ বা প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ট্রানজিট রুটে আনা-নেয়া করতে পারবে বলে চীন মনে করছে।’এরপর ঐ কলামে বলা হয়েছে, ‘চীনা দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তন সরকারের জন্য বড় রকমের চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রের আভাস অনুযায়ী, চীন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে গেলেও এখন মধ্যবর্তী নির্বাচনের ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করে যাবে। পদ্মা সেতুসহ ঢাকাকে দেয়া বিভিন্ন বিনিয়োগ-সুবিধার ওপর যেমন এই চাপের একটি প্রভাব পড়তে পারে, তেমনিভাবে ভারতে বিপুল বিনিয়োগ এবং যৌথভাবে ব্রিকস ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যে বিশেষ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, সেটি দিয়েও বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে নয়াদিল্লীর ওপর চাপ দিতে পারে চীন।’ প্রিয় পাঠক, আবার বলছি, এইগুলো আমাদের কথা নয় বা আমাদের রিপোর্টও নয়। নির্বাচন দেয়া না দেয়ার ব্যাপারে চীন বাংলাদেশকে চাপ দিতে পারে, এমন ট্র্যাক রেকর্ড চীনের নেই। ভারত একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলায়। আমেরিকা তো কোনো দেশকে বশে আনার জন্য প্রয়োজনে সেই দেশটির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানও চালায়। কিন্তু চীনের ট্র্যাক রেকর্ড তা বলে না। বরং এসব ব্যাপারে তারা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখে। জানিনা, আলোচ্য ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা কি।Email:
[email protected]
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন