একটা অর্থহীন বিতর্ক বহুদিন যাবৎ চলে আসছে। আগে উন্নয়ন, না গণতন্ত্র? এই তর্কাতকি নিরর্থক। কারণ মানুষ চায় দুটোই। উন্নয়ন ছাড়া চলে না। আবার গণতন্ত্র ব্যতিরেকে হয় না মানুষের। তাই বিতর্কটা জিইয়ে রাখা উদ্দেশ্যমূলক। সে উদ্দেশ্যকে ‘সৎ’ বলা যায় না।
সৃষ্টির সেরা, মানুষের জন্য দুটোই চাই : উন্নয়ন ও গণতন্ত্র। কেবল উন্নয়নে প্রাণীর পেট ভরতে পারে; কিন্তু ‘মানুষ’ বলে কথা; তাই সাথে চাই গণতন্ত্রও। তা না হলে মানুষের মন ভরবে না। কর্তৃত্ববাদ কোন উন্নয়ন চায়? তা-ও সাধারণত বাহ্যিক বা অবকাঠামোর উন্নয়ন। আজকের দুনিয়ায় চলছে বেশির ভাগ দেশের ক্ষেত্রে কর্তৃত্ববাদী শাসন, যা নির্বাচনের পোশাকে মোড়া এক রকম স্বৈরতন্ত্র। এটাকে কিন্তু ‘স্বৈরতন্ত্র’ বলায় বিপদ আছে। আবার গণতন্ত্র বলতেও বিবেকে বাধা দেয়। কেউ ক্ষোভে বলেন, বিকৃত গণতন্ত্র; কেউবা বলেন, হাইব্রিড ডেমোক্র্যাসি। গরিব দেশের আসলেই উন্নয়ন চাই। তবে গণতন্ত্রকে বলি দিয়ে নয়। গণতন্ত্র রেখেই গরিবরা উন্নয়নশীল দেশ হতে পারে, যা একদিন হবে উন্নত রাষ্ট্র। গণতন্ত্রের ভিতকে নড়বড়ে করা যাবে না। উন্নয়নও বাদ দিয়ে সম্ভব নয় এগিয়ে যাওয়া। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন পরস্পর সাংঘর্ষিক নয়। মানুষই তাদের স্বার্থে কুতর্ক জিইয়ে রাখে।
বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন, উন্নতি ও উন্নয়ন পরস্পর পৃথক। একটা সমুন্নতি, আর একটা পরিব্যাপ্তি। একটার মানে উপরে ওঠা, সেটি প্রকৃতপক্ষে অগ্রসর হওয়া; অন্যটির পরিসর বাড়লেও প্রকৃত উন্নতি তেমন হয় না। আমাদের দেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন, উভয়ই প্রয়োজন জনগণের জন্য। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন, উভয়ই প্রয়োজন জনগণের জন্য। এটিই বাস্তবতা; এটিই অনস্বীকার্য।
একটা কথা আছে, গণতন্ত্রে উন্নয়ন দেরিতে হয়ে থাকে তবুও ধৈর্য ধরতে হবে। মানুষের সমাজ ও রাষ্ট্রের গণতন্ত্র সর্বোত্তমরূপে একান্ত অপরিহার্য। আইয়ুবি কালো দশকের মতো স্বৈরশাসনকালে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছিল। সে জন্য কি গণতন্ত্র বা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থার বদলে স্বৈরতন্ত্র বাছাই করে নিতে হবে?
আমাদের জাতি নিশ্চয়ই অতীতের পাকিস্তানি আমলের ষাট দশকের স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের সময়ের কুশাসন তথা কালো যুগের কথা ভুলে যায়নি। তখন জেনারেল আইয়ুবের Handmade বিশেষ ব্র্যান্ডের গণতন্ত্র চালু করা হয়েছিল যার নাম ছিল ‘বেসিক ডেমোক্র্যাসি’ বা ‘মৌলিক গণতন্ত্র’। আসলে এটা ‘মৌলিক’ কিছু নয়; লোকে ঠাট্টা করে বলতো, মুলা দেখানোর গণতন্ত্র। ‘গণতন্ত্রের মানসপুত্র’ মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন, It is the democracy of the base অর্থাৎ ‘সর্বনিকৃষ্ট স্তরের গণতন্ত্র’ বলে বোঝাতে চেয়েছেন তিনি। চরম দুর্নীতি এর সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত বলে এই তথাকথিত গণতন্ত্রের নাম দেয়া হয়েছিল ‘বেচিকিনি গণতন্ত্র।’ ১৯৬৯ সালের প্রথম দিকে ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান আইয়ুব খানের সাথে তার স্বৈরাচার, কথিত গণতন্ত্র, উন্নয়নের কালো জোয়ার - সব কিছুকে বিদায় করে দিয়েছে। এ দেশে যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য জনগণকে সর্বদাই সজাগ থাকতে হবে। ভ্লাদিমির পুতিন, নরেন্দ্র মোদি ও ডোনাল্ড ট্রাম্পরা আমাদের আদর্শ নন। তারা তাদের ‘উন্নয়ন’ নিয়ে থাকুন। অন্যকে উপদেশ দেয়া তাদের অনুচিত।
বলছিলাম উন্নয়নের কথা। উন্নয়ন জাতির জন্য অবশ্যই দরকার। বিশেষত আমাদের মতো দারিদ্র্যক্লিষ্ট, দুর্যোগপীড়িত, জনসংখ্যাবহুল পশ্চাৎপদ দেশে। তবে কথিত যে ‘উন্নয়ন’ দেশে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তপনা বাড়াবে, তা না হওয়াই সমীচীন। উন্নয়ন মানে কেবল অবকাঠামো নয়; আবার উন্নয়ন অবকাঠামো বাদ দিয়েও হয় না। উন্নয়নের জন্য নানা ধরনের প্রকল্প লাগে - ছোট, মাঝারি ও বৃহৎ (মেগা)। অবশ্য এসব প্রজেক্ট মেগা হলে সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিটার বহরও সাধারণত মেগা বা বৃহৎ হয়ে যায়। ‘উন্নয়নের জোয়ার’ কথাটা শুনতে মন্দ নয়; তবে এতে যেন দেশের সবাই ভাসে; কেউ হাবুডুবু খেয়ে না মরে। এ দেশে তা কতটা হচ্ছে?
বাংলাদেশে কয়েকটি মেগা প্রজেক্ট বা মহাপ্রকল্পের নির্মাণকাজ চলছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এ রকম বৃহৎ প্রকল্প থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে যখন দেখা যায়, মহাপ্রকল্পের মেয়াদ ও পক্ষপাত বারবার বাড়ে, আর নির্মাণ ব্যয় বরাদ্দও বৃদ্ধি পায় লাফিয়ে লাফিয়ে, তখন অবাক হতে হয়। বর্তমানে রাজধানীতে মেট্রোরেলওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঈশ্বরদীর রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প, সুন্দরবনের কাছে রামপাল কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র, পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, কক্সবাজারের অদূরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ নির্মাণ প্রভৃতি বিশাল প্রকল্পের কাজ চলছে। আর বিস্তীর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের মহাযজ্ঞ তো আছেই। এগুলোর ব্যয়িত অর্থ প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি এবং দুর্নীতির পরিমাণ বেশি বলেই জনগণ মনে করে। আর কে না জানে, অতিরিক্ত অর্থ যেখানে, সেখানেই দুর্নীতির মওকা? লুণ্ঠনের মহাসুযোগ। রাষ্ট্রীয় অর্থ হাতে পেলে যেন কারো হুঁশ থাকে না। যেন ‘সরকার কা মাল দরিয়ামে ঢাল; যত লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন’ - এ নীতির বাস্তবায়ন চলছে। অথচ এ টাকায় দেশের দীন দরিদ্র, দুস্থ-ছিন্নমূল মানুষের বিরাট অধিকার আছে। তারা তো কোনো সরকারি সহায়তা পাচ্ছে না।
বিনা কারণেই একজন হতদরিদ্র নবজাতক শিশুকে ঋণের বোঝা ঘাড়ে চেপে জন্ম নিতে হয়। সর্বোপরি দুর্নীতি দলীয়করণ-দুর্বৃত্তপনা ইত্যাদি না থাকলে সে নবজাতকের ওপর ঋণের বোঝা অহেতুক চাপাতে হতো না। অথচ বিত্তহীন, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তসমেত দেশের অসংখ্য নাগরিক আজো মৌলিক অধিকারহীন। তাদের মৌলিক প্রয়োজন কোনো সময়ে পূরণ করা হয় না। অথচ তা সরকারের মৌলিক দায়িত্ব। বেলাগাম উন্নয়নের লাগাম টেনে ধরাই উত্তম। কারণ এর সুফল গণমানুষের তুলনায় গণশত্রুরা বেশি পায়। ওরা আম ও ছালা দুটিই ভোগ করে থাকে। আর সাধারণ কিছু লোক ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো লাফায়। বাদবাকি সবাই কেবল কাতর নয়নে অসহায়ভাবে চেয়ে চেয়ে দেখে। তাদের কেউ কেউ হয়তো শুকনো হাতের তেলো চাটে। ভুখানাঙ্গা মানুষ গণতন্ত্রের মতো উন্নয়নেও অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। তা না হলে এটা যথাযথ গণতন্ত্র বা উন্নয়ন নয়। আমরা যতই ‘ভদ্দরলোক’ সাজি না কেন, দেশের মানুষের বিরাট অংশই এখনো ভুখা। তাদের অভাব ও দারিদ্র্যের কথা অন্যরা ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না।
আসলে ‘গণতন্ত্র বনাম উন্নয়ন’ বিতর্ক করে আমরা এই উভয় বিষয়ের অবমূল্যায়ন করছি। অথচ দুটোই সংশ্লিষ্ট দেশের পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকেন, তাদের বড় কাজ। উন্নত দেশে এসব বিষয়ে তর্ক হয় না। অনুন্নত দেশে এসব নিয়ে তর্কবিতর্কে সময় নষ্ট করা হচ্ছে। সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে উন্নয়ন হবে - এটা অনিবার্য। হয়তো এর গতি একটু শ্লথ হয়ে থাকে। তবে উন্নয়ন এমন হয় না যে, জনগণ অতিষ্ঠ, হয়রান বা বিরক্ত হয়ে গালগাল করবে। জনজীবন বিঘ্নিত হলেও জনগণ উন্নয়নের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি। তবে অহেতুক তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে না ওঠে উন্নয়নের নামে। যদি প্রত্যহ জাতির হাজার হাজার কর্মঘণ্টা বিনষ্ট হয়; ধুলার অন্ধকারে প্রতিদিন পরিবেশ হয়ে পড়ে জঘন্যভাবে দূষিত, তা হলে তো মানুষ ক্ষেপে উঠবেই। তারপরও অবশ্য বোঝা উচিত যে, উন্নয়ন জনগণের জন্যই। ধৈর্য ধরলে আখেরে সুফল মিলবে। এর অর্থ, সবুরে মেওয়া ফলে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে নয়; মানুষ বাঁচিয়ে সবাই দেশের উন্নয়নে মন দিলেই মঙ্গল।
মানুষ নিছক প্রাণী নয় বিধায় তার জন্য গণতন্ত্র আবশ্যক। অন্যথায়, তাকে ‘বনতন্ত্র’-এর অধীনে থাকতে হয়। তেমনি সে মানুষ বলেই তার জন্য ভিন্নমাত্রার উন্নয়নের দরকার হয়ে থাকে। এ উন্নয়ন শুধু প্রাণীর নয়; ‘সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণীদের স্বার্থেই। শুধু উন্নয়নে তার পেট ভরলেও মন ভরে না বলেই গণতন্ত্র লাগে। না হয়, মানুষ আর পশু-পাখি-সরীসৃপ-মৎস্যের মধ্যে কোনো প্রভেদ থাকে না। মানুষকে কেবল ভালোভাবে জীবিত থাকলে চলে না। তাকে ভালোভাবে জীবনযাপনও করতে হয় বৈকি। এ জন্যই শুধু অবকাঠামোনির্ভরতা নয়, পূর্ণাঙ্গ উন্নয়ন আর প্রকৃত গণতন্ত্র তার অভীষ্ট। এ ছাড়া মানবসমাজ, মানবজাতি, মানবিক রাষ্ট্র প্রভৃতি কথা মূল্যহীন।
গণতন্ত্র যারা সত্যিকারভাবে চান, তারা উন্নয়ন নিয়ে বিতর্ক না করে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যেই কাজ করে যাওয়া উচিত। আর যারা দেশ-জাতির প্রকৃত উন্নয়নের আকাক্সক্ষী, তারা গণতন্ত্রের প্রশ্নে মানুষকে বিভ্রান্ত না করে সততার পরিচয় দেয়া দায়িত্ব। তাহলে জনগণ অপচয় ও দুর্নীতি থেকে রক্ষা পাবে। অন্যথায়, কু-তর্কটা হবে ‘মুরগি আগে জন্মেছে না ডিম?’ তাই অপ্রয়োজনীয় কাজে শ্রম, সময় ও মেধার অপচয় না করে একসাথে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন কিভাবে পাওয়া যায়, সে উদ্দেশ্যে কাজ করা দরকার। তখনই দেশের জন্য দরদ এবং মানুষের জন্য ভালোবাসা প্রমাণিত হবে।
অনুন্নত দেশগুলোর জন্য উন্নয়ন বড়ই দরকার। তবে তা কিছুতেই গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে নয়। আর যেখানে গণতন্ত্র নেই, অন্য ‘তন্ত্র’ জেঁকে বসেছে, তাদের জন্য অবশ্যই স্থায়ী গণতন্ত্র চাই। কিন্তু গণতন্ত্র যদি দেশ ও জাতির উন্নয়ন আনতে না পারে, তা হলে স্বৈরতন্ত্রের সমর্থকরাই বগল বাজাবেন। তাই গণতন্ত্রকে দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে আর উন্নয়ন ও গণতন্ত্র চলবে হাত ধরাধরি করে। উন্নয়ন ছাড়া গণতন্ত্র অর্থহীন; আবার গণতন্ত্র ব্যতীত উন্নয়নের কোনো মানে হয় না। সে উন্নয়ন টেকসই নয় এবং এর সুফল সাধারণ মানুষের অধরাই থেকে যায়। গণতন্ত্রের অভাবে উন্নয়ন হয়ে যায় দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের অপর নাম। এই উন্নয়নের ‘লাভের গুড় শয়তানের পিঁপড়ায় খায়’। অর্থাৎ সাধারণ জনগণ এর সুফল পায় না অথবা খুব কমই পেয়ে থাকে। কিন্তু মহলবিশেষ সব সুবিধা ভোগ করে অন্যায়ভাবে।
দেশে দেশে এখন গণতন্ত্রের বিকৃতি, ‘গণতন্ত্র’ নামে বিভ্রান্তি ও গোষ্ঠীবিশেষের অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত আধিপত্যের অবাধ বিস্তার। এসব দেশের শাসকরা উন্নয়ন করলেও তা হয়ে থাকে মূলত নিজ স্বার্থে, তবে জনগণের অর্থে। এই শাসকরা ছড়িয়ে আছেন আমাদের দক্ষিণ এশিয়া হতে ইউরোপ-আমেরিকায়ও। তারা জনতুষ্টিবাদকে প্রশ্রয় দেন আর সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে আশ্রয় করে থাকেন। কিন্তু Populism বা জনতুষ্টিবাদ এবং Majoritarianism বা গরিষ্ঠতাবাদ তো আসলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, চেতনাকে ধারণা করে না। কারণ গণতন্ত্র মানে brute majority কিংবা নির্মম গরিষ্ঠতা নয়; বরং সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। এ জন্য একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর মতে, গণতন্ত্রে শতকরা মাত্র ৩০-৪০ ভাগ ভোট পাওয়া সংখ্যালঘিষ্ঠ সরকারও ক্ষমতাসীন হতে পারে যদিও তা মূলত কাম্য নয়। কেননা এতে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে।
‘উন্নয়ন’ বলতে যেমন শুধু অবকাঠামো নয়, তেমনি ‘গণতন্ত্র’ বলতেই কেবল নির্বাচনকে বোঝায় না। উন্নয়ন ও গণতন্ত্র অনেক ব্যাপক অর্থবোধক। তাই এসব কিছুর সামগ্রিক ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন প্রয়োজন। জাতির পথ চলার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের পাশাপাশি কার্যকর উন্নয়ন থাকতে হবে। এ জন্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যেমন দরকার, তেমনি দরকার স্থায়ী ও কার্যকর উন্নয়ন কার্যক্রম।
পাদটিকা : একবার মফস্বলে পৈতৃক বাসায় গিয়ে দেখি, পাশের ‘গরিব’দেরও বিল্ডিং হয়েছে প্রবাসী আয়ের সুবাদে। তবে ওদের দোতলার ময়লা পানি পড়ছে আমাদের জায়গায়। তারা একেবারে দীন দরিদ্র ছিল। তবে এখনো মানসিকতায় গরিবিয়ানা রয়ে গেছে। তাই অন্যের জায়গায় ওদের ময়লা পানি পড়া নিয়ে চিন্তা নেই।
তেমনি আমাদের দেশের উন্নয়ন প্রকল্পেও বহু ক্ষেত্রে দারিদ্র্য-মানসের ছাপ থাকে বলে অনেকের অভিমত। এ কারণে পরিবেশ ও প্রকৃতি হয় উপেক্ষিত এবং কর্মীদের ও জনগণের কারোই নিরাপত্তা ও কল্যাণ গুরুত্ব পায় না। আর একসাথে একাধিক মেগা প্রকল্পের তাড়াহুড়া তো আছেই। উন্নত দেশে এসব করা হয় না। সেখানে উন্নয়নের নামে চোখ ধাঁধানো ও লোক দেখানোর চেয়ে সরকারের দায়িত্বশীলতাই অধিক পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। অথচ এ দেশে একত্রে একাধিক মহাপ্রকল্পে জনগণের মহাদুর্ভোগ ঘটে এবং সবকিছু যেন লেজে গোবরে দশা হয়ে যায়।
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন