‘হ্যারল্ড’টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটির (টিএসইউ) দুটো ক্যাম্পাস। একটি ছোট, অন্যটি বড়। ছোটটি ডাউন টাউনে এবং এখানেই আমাদের কলেজ অব বিজনেস। বড়টা মাইল দুয়েক দূরে, যাকে বলা হয় মেইন ক্যাম্পাস। আমার অফিস ডাউন টাউনে। এটি একটি বড় চারতলা বিল্ডিং। এই দালানটি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে প্রায় ২০০ লোকের কর্মস্থল। তার ওপর ক্লাসরুম ও ল্যাব তো আছেই। আরো আছে ছোট্ট একটি পোস্ট অফিস, কপি করার রুম, সিকিউরিটি বক্স, বুকস্টোর, কনভিনিয়েন্স স্টোর, ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি, মিডিয়া সেন্টার, টেস্টিং সেন্টার, স্টক ট্রেডিং রুম ইত্যাদি। উইক ডেতে এই স্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বিরতিহীন ক্লাস চলে।
তিনতলায় ওপেন টু বিলো একটি প্রশস্ত লবি এরিয়া আছে। লবির একপাশে আছে বড় অডিটোরিয়াম- যেখানে সব সময় সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, বক্তৃতা ইত্যাদি লেগেই থাকে। অন্য পাশে চারতলা বরাবর লবির ওপর দিয়ে চলে গেছে একটি লম্বা হলওয়ে। অডিটোরিয়াম ও হলওয়ের মাঝখানে উন্মুক্ত লবি-চত্বরে হয় সেমিনারে অংশগ্রহণকারী আগত অতিথিদের আপ্যায়ন। এখানে সহজেই একসাথে দুই-আড়াই শ’ লোকের স্থানসঙ্কুলান হয়। এই লবি কখনো বা বিয়ে ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকে। লবিতে আরো অনেক কর্মযজ্ঞ চলে, যেমন- বুক ফেয়ার, জব ফেয়ার, এক্সিবিশন, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান, সঙ্গীতানুষ্ঠান, ট্রেনিং ওয়ার্কশপ ইত্যাদি।
আমার অফিস থেকে ক্লাসরুমে যাওয়া-আসার সময় খোলা লবির গা ঘেঁষে ওই হলওয়ে দিয়েই চলাচল করতে হয়। আমার নিত্যদিনের চলার পথে প্রায়ই শোনা যায় হইচই আর বাসনকোসনের আওয়াজ। অনুষ্ঠান না থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের আনাগোনায় লবি ও হলওয়ে সব সময় সরব থাকে। তারুণ্যের আনন্দোচ্ছ্বাসই এ কোলাহলের নির্যাস। ছুটির দিনে অফিসে এলে কাজ হয় বটে, কিন্তু জীবনের সজীবতা ও প্রাণচাঞ্চল্যের ছোঁয়া পাওয়া যায় না।
যে মানুষটির সতেজ ও স্বতঃস্ফূর্ত পদচারণা ছাড়া টিএসইউর ডাউন টাউন ক্যাম্পাসের কর্মচাঞ্চল্যে গতি আসে না, যার অনুপস্থিতি গোটা পরিবেশ ম্রিয়মাণ করে তোলে, সকালে এসে যার সদাহাস্য মুখ না দেখলে দিনটি সুন্দরভাবে শুরু হয় না, সে আর কেউ নয়, আমাদেরই প্রিয় হ্যারল্ড! তার একটা অফিস আছে, কিন্তু কদাচিৎ সেখানে সে বসে। সারা দিন সে বিল্ডিংব্যাপী চক্কর মারতে থাকে। আপনি বিল্ডিংয়ে চলাফেরা করতে গেলে কোথাও না কোথাও হ্যারল্ডের দেখা পেয়ে যাবেন। তার মাথায় ক্যাপ, গায়ে সোয়েটার, আর হাতে কিছু না কিছু থাকবেই। তাকে কখনো কোথাও অলস বসে থাকতে দেখবেন না। সব সময় সে কাজে ব্যস্ত, কাউকে না কাউকে সাহায্য করছে।
হ্যারল্ড টিএসইউর ডাউন টাউন ক্যাম্পাসের ‘চিফ জ্যানিটার’। তাকে শুধু জ্যানিটার বললে কম বলা হয় বৈকি। এ তো তার মামুলি পোশাকি পরিচয়। তার আসল পরিচয় তার কাজে। সে যে কত কাজ করে এবং কী কী করে, শুনলে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন! সরাসরি তার অধীনে ছয়জন জ্যানিটার আছে। এদের কাজ তাকে সার্বক্ষণিক তদারকি করতে হয়। শিক্ষক-কর্মচারীদের কেউ বাড়িতে অফিসের চাবি ফেলে গেলে হ্যারল্ড দৌড়ে এসে দরজা খুলে দেবে, কেউ অফিসে লকডআউট হয়ে গেলে সবার আগে হ্যারল্ডের ডাক পড়ে। ভিজিটর এলে কে কোথায় কার কাছে যাবে, হ্যারল্ড পথ দেখিয়ে দেবে, গন্তব্যে পৌঁছে দেবে, সেমিস্টারের শুরুতে নতুন ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসরুম খুঁজে না পেলে হ্যারল্ড দেখিয়ে দেবে, সাথে করে নিয়ে রুমে ঢুকিয়ে দিয়ে আসবে। চারতলা এই বিল্ডিংয়ে এত মানুষ বসে, কার অফিস কোথায়, কে কী করে মোটামুটি সবই হ্যারল্ডের মুখস্থ। বেশির ভাগ শিক্ষক-কর্মচারীর নামও তার জানা। সে ছাত্রছাত্রীদের সাথে একান্তে কথা বলে। কী কথা, তা শুনে তো আমি হতবাক! শিক্ষক হিসেবে আমাদের যা করা কথা, সেই কাজের কিছুটা হলেও হ্যারল্ড আমাদের হয়ে সেরে ফেলে। এর সাথে তার নিজের জন্য আরো একটি কাজ করে, যার মূল্য আরো বেশি, অনেক বেশি। সে ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সেলিং করে, তাদের বোঝায় ভালো করে একজন ভালো মানুষ হতে, মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতে, অযথা আজেবাজে কাজে সময় নষ্ট না করতে। তাদের সে আরো বলে, এটা জীবন গড়ার উপযুক্ত সময়, সময়ের কাজ সময়ে না করলে পরে পস্তাতে হবে। চার বছরের প্রোগ্রাম সাড়ে তিন বছরে শেষ করার জন্য সে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেয়, উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করে।
বিদেশী শিক্ষার্থী, বিশেষ করে আফ্রিকানদের সাথে তার কথা হয় অন্য মাত্রায়। যে যে দেশ থেকেই আসুক না কেন, প্রতিটি আফ্রিকান ছাত্রছাত্রীর সাথে তার অন্য রকম সম্পর্ক, তাদের প্রতি সে বাড়তি একটা নাড়ির টান অনুভব করে। এদের মতো সেও কৃষ্ণাঙ্গ, তারও আদিপুরুষ আফ্রিকা থেকেই মার্কিন মুল্লুকে এসেছিল। সে জানে না, কবে, কত পুরুষ আগে, কিভাবে তার বংশধরেরা আফ্রিকা থেকে আমেরিকায় এসে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়েছিল। বাপ-দাদারা আফ্রিকার কোন দেশের কোন অঞ্চল থেকে এসেছিল- এসবের কোনো হদিস জানা নেই হ্যারল্ডের। আফ্রিকান ছেলেমেয়েদের সে খোঁজখবর নেয়, তাদের সাথে আন্তরিকতার সাথে এ-কথা সে-কথা অনেক কথা বলে, আশায় আশায়, যদি কারো কাছ থেকে কোনো দিন কোনো যোগসূত্র (Clue) পায়, যা দিয়ে সে তার পূর্বপুরুষের নাম-ঠিকানাসহ না জানা সব রহস্যের জট খুলতে পারে! হ্যারল্ড দেশহারা হয়েছে যুগ যুগ আগে, কিন্তু এখনো আফ্রিকার সাথে তার নাড়ির টান অনুভব করে, ভীষণভাবে, গভীরভাবে, তীব্রভাবে! তার আশা, একদিন সে অ্যালেক্স হ্যাইলির মতোই সফল হবে, তার শিকড়ের সঠিক সন্ধান খুঁজে পাবে!
একদিন প্রশ্নপত্র ছাপাতে কপিরুমে গিয়েছি। লগইন করে দেখি মেশিনে স্ট্যাপ্ল শেষ হয়ে গেছে। আশপাশে সেক্রেটারিরা কেউ নেই, আমার কাছে মেশিন-রেডি স্ট্যাপল নেই এবং আমি মেশিন খুলে স্ট্যাপল বক্স রিপ্লেস করতেও জানি না। কাজটা একটু জটিল ও কঠিন। ট্রেতে কাগজ ভরা বা পেপারজ্যাম ক্লিয়ার করার মতো সহজ-সরল নয়। মন খারাপ করে আমি অফিসে ফিরে আসব, এমন সময় হঠাৎ দেখি কোথা থেকে হ্যারল্ড এসে হাজির। আমার সমস্যা কী, জানার আগেই সে বলে বসল, ‘Don't worry, I will fix it.’ হ্যারল্ড, স্টোররুম খুলে এক বক্স স্ট্যাপল বের করে আনল, মেশিনের ডালা খুলে অতি সহজেই স্ট্যাপল বক্স রিপ্লেস করে দিলো। আমি অবাক হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি এ কাজ কেমন করে শিখলে? সে কিছুই না বলে গালভরা হাসি দিয়ে চলে গেল। আমার অফিসে আমি একদিন লকডআউট হয়ে গেলে সে এসে দরজা খুলে দিলো। এরপর আমাকে দেখলেই বলে, ‘Are you alright? Do you need any help?’
তিনতলার লবিতে যখন অনুষ্ঠান হয়, তখন রুম সাজানো, চেয়ার-টেবিল গোছানো, মাইক্রোফোন লাগানো ইত্যাদির তদারকিতেও আজকাল হ্যারল্ডকে দেখা যায়। খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন যখন হয়, তখনও আছে হ্যারল্ডের সরব ও সক্রিয় উপস্থিতি। সব অনুষ্ঠানে হ্যারল্ডের জন্য এক প্লেট খাবার রিজার্ভ থাকে। বিয়েবাড়িতে কাজী সাহেবের খাওয়া যেমন নিশ্চিত, তেমনি টিএসইউর ডাউন টাউন ক্যাম্পাসের যেকোনো অনুষ্ঠানের ভোজপর্বে হ্যারল্ডের শরিক হওয়া প্রশ্নাতীতভাবে অবধারিত। এ যেন তার জন্মগত দাবি, পেশাগত অধিকার!
হঠাৎ একদিন দেখি হ্যারল্ডের বেশভূষায়, পোশাক-আশাকে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন। মাথায় নতুন ক্যাপ, সুন্দর ফুলহাতা সোয়েটার, পায়ে চকচকে জুতো ও কেতাদুরস্ত বেশভূষা। ভাবলাম, হয়তো বিশেষ কোনো কারণে আজ সেজেগুজে এসেছে। দেখলাম, না, আমার ধারণা ভুল। হ্যারল্ড এখন বদলে গেছে। সে এখন নতুন মানুষ, রোজ রোজ পরিষ্কার ছিমছাম কাপড় পরে ফিটফাট হয়ে কাজে আসে। ভাবলাম, হয়তো বা নতুন গার্লফ্রেন্ড জুটেছে, ডেটিং চলছে, শিগগির বিয়ে করবে। পরে বুঝলাম তাও নয়। সেদিন এলিভেটরে পেয়ে তাকে বললাম, হ্যারল্ড আজকাল তুমি খুব সেজেগুজে আসো, ব্যাপার কী? ‘আমি তো এখন ইভেন্টস কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বেও, তাই আমাকে জনসমক্ষে বেরোতে হয়, পাবলিক ফোর ফ্রন্টে থাকতে হয়, তাই’- হ্যারল্ড উত্তর দিলো। আমি তার কাছে অনুরোধ রেখে অফিসে চলে এলাম। বললাম, হ্যারল্ড, তুমি একদিন আমার রুমে এসো। তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
ঘণ্টা দুয়েক পরে দেখি হ্যারল্ড আমার অফিসে এসে হাজির। আমি ক্র্যাকারস (নোনতা বিস্কুট) খাচ্ছিলাম। তাকেও শরিক হতে বললাম। সে একটার বেশি নিলো না। বসতে বলায় খুশি হলো। আমি কিছু জানতে চাওয়ার আগেই সে আমার দিকে ছুড়ে দিলো এক প্রশ্ন- ‘সবাই তো আমাকে কাজের জন্য ডাকে, আমার সাথে কথা বলার জন্য তো কেউ কোনো দিন আমাকে ডাকেনি। তুমি আমাকে কেন ডাকলে?’ আমি বললাম, একটু ধৈর্য ধরো, আমার কথা শুনলেই তুমি বুঝতে পারবে আমি আজ কেন তোমাকে ডেকেছি। আমি তোমার ওপর একটা ‘শর্ট পিস’ লিখব। শুনেই হ্যারল্ড যেন খুশির ঢেউয়ে ভাসতে লাগল। তাকে নিয়ে কেউ কিছু লিখবে, এটা সে ভাবতেও পারেনি। কথোপকথনে তার কাছ থেকে যা পেলাম, সংক্ষেপে তা এ রকম।
হ্যারল্ডের বয়স ষাটের কোঠায়। সে টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে নার্সিংয়ে ডিগ্রি করেছে ঊনিশ শ’ আশির দশকের গোড়ার দিকে। তারপর ২৫ বছর বিভিন্ন জায়গায় নার্স হিসেবে কাজ করে আবার টিএসইউতে ফিরে এসে এই চাকরি নিয়েছে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরেছে, কিন্তু এত দিনে সে আর ছেলে থাকেনি, একজন বিজ্ঞ, পরিপক্ব, প্রৌঢ় মানুষে পরিণত হয়েছে। তার জব টাইটেল হলো বিল্ডিং অ্যাটেন্ডেন্ট অ্যান্ড ইভেন্টস কো-অর্ডিনেটর। বিল্ডিং অ্যাটেন্ডেন্টের কাজ হলো বিল্ডিংটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। এ ছাড়াও বিল্ডিংয়ের কোথাও মেরামতির কোনো দরকার পড়লে সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে আনা। ইভেন্টস কোওর্ডিনেটরের দায়িত্ব একটু অন্য রকম। এখানে যেসব সামাজিক, প্রশাসনিক ও একাডেমিক অনুষ্ঠান হয় তার সুষ্ঠু সমন্বয় করা।
বাংলাদেশের সামাজিক ও প্রশাসনিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধের সাথে তুলনা করলে এখানে কয়েকটি মজার বিষয় বেশ স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে। প্রথমত, আমাদের দেশে পুরুষেরা নার্সিং পড়তেই যাবে না। দ্বিতীয়ত, একজন প্রশিক্ষিত নার্স ২৫ বছর সফলভাবে নার্সিংয়ের কাজ করে কোথাও চিফ জ্যানিটারের চাকরিও নেবে না। বাংলাদেশে যেটা কল্পনা করা যায় না, সেটা পশ্চিমা দেশে হয়। কেন হয়, তারও কারণ আছে। এসব দেশে যে যে কাজই করুক না কেন, যে যত ছোট কাজই করুক না কেন, তার আত্মসম্মানবোধ অন্য যেকোনো চাকরির মতোই সমান। সে ছোট কাজ করে বলে তার বস কেন, কেউই তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে না, তার সাথে দুর্ব্যবহারের তো প্রশ্নই ওঠে না। এটা এ দেশের আইন এবং প্রচলিত সামাজিক রীতিনীতির একেবারেই বরখেলাপ। তৃতীয়ত, বাংলাদেশে হলে হ্যারল্ডের জব টাইটেল হতো, ঝাড়ুদারদের সরদার বা এজাতীয় কিছু, কিন্তু পশ্চিমা দেশে এটাকে ঝাড়ুদারদের সরদার তো বলছেই না, এমনকি চিফ জ্যানিটারও বলছে না, বলছে বিল্ডিং অ্যাটেন্ডেন্ট; কোনো কোনো জায়গায় এটাকে বিল্ডিং ম্যানেজারও বলে। চতুর্থত, বাংলাদেশে ঝাড়ুদারের সরদারকে কখনো কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হবে না এবং সেও এজাতীয় কাজ করবে না। এখানে যেহেতু তার যোগ্যতা আছে তাই তাকে একসাথে দুটো দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এতে তার যেমন সময়ের পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে, তেমনি দুই কাজ একজনকে দিয়ে করানোয় বিশ্ববিদ্যালয়েরও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।
হ্যারল্ডের কাছ থেকে আরো জানলাম, তার মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। ভাইবোন আছে বেশ ক’জন। সবাই যার যার মতো থাকে। সে কোনো দিন বিয়ে করেনি, সংসার করেনি, একা একা থাকে, তবে তার একটি পালিত ছেলে আছে। এখন ৩৫ বছর বয়স। ছেলে নিয়মিত পিতার খোঁজখবর রাখে। এ দেশে ব্যক্তিগত প্রশ্ন কেউ কাউকে করে না। আমি অনুমতি নিয়ে হ্যারল্ডের কাছে যখন জানতে চাইলাম, সে কেন বিয়ে করল না; তখন হ্যারল্ড একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল, তার চোখেমুখে একটি দুর্বোধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও অনুভূতি বিদ্যুতের মতো ঝিলিক মেরে উঠল! বুঝতে পারলাম না, সেটা সুখের না দুঃখের। আধা মিনিট নীরবতার পর সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললÑ ‘সে অনেক কথা, আমার মনের কথা শোনার যদি তোমার সময় হয়, ধৈর্য থাকে, তবে হবে আরেক দিন; কিন্তু সে গল্প এক দিনে শেষ হবে না।’
লেখক : অর্থনীতির অধ্যাপক, টেনিসি স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
উৎসঃ নয়াদিগন্ত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন