রাজনীতিতে আদর্শ এবং কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। কোনো দল তা প্রয়োগে ভুল করলে এর পরিণতি দলকে অবশ্যই ভোগ করতে হয়, আবার দেশের রাজনীতি যদি সেই দলের আদর্শের ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল হয় তাহলে দলের কৌশলগত ভুলের মাশুল দেশকেও দিতে হয়। এটি ইতিহাসের শিক্ষা। রাজনৈতিক দলকে সে কারণে যথেষ্ট সচেতনভাবে আন্দোলন-সংগ্রাম ও কর্মপদ্ধতির প্রয়োগ ঘটাতে হয়। এ ক্ষেত্রে আদর্শ হচ্ছে দলের চূড়ান্ত লক্ষ্যÑ যা অনেকটাই বিমূর্ত থাকে, কিন্তু কৌশল হচ্ছে অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে বা লক্ষ্যে পৌঁছতে গৃহীত কর্মপদ্ধতিÑ যা বাস্তব অবস্থাকে গভীরভাবে মূল্যায়ন এবং পর্যবেক্ষণ করে নেওয়া হয়। ফলে কৌশল গ্রহণে বাস্তবতা বোধের মুন্সিয়ানা বা দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা দলের নেতৃত্বের মধ্যে থাকতে হয়। আমাদের জাতীয় রাজনীতি থেকে এর ভূরি ভূরি প্রমাণ তুলে ধরা যেতে পারে। আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুর হাতে অর্পিত হওয়ার পর দলের আদর্শ হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভাবাদর্শে তিনি দলকে, দলীয় রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন, পূর্ববাংলার জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে স্বায়ত্তশাসন এবং চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি গভীরে নির্ধারিত ছিল। আওয়ামী লীগ একটি জাতিতাত্ত্বিক গঠনের দর্শন ধারণ করে। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনে বঙ্গবন্ধু নিয়মতান্ত্রিক ধারাকে মনেপ্রাণে অনুসরণ করেন। তবে একদিকে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, অন্যদিকে পাকিস্তানের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার কৌশল হাতে নিয়েই ৬ দফার ঘোষণা, জনগণকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা ইত্যাদি কর্মপদ্ধতি তিনি দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করেন। পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে তিনি যেমন গণ-অভ্যুত্থানের বাস্তবতা তৈরি করলেন, একই সঙ্গে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অধিকার আদায় করলেন, তাতে অংশগ্রহণ, বিজয়লাভ ও পরবর্তী প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল বঙ্গবন্ধুর রণকৌশলÑ যা পাকিস্তানি বাহিনীর গৃহীত ও সম্ভাব্য সব অপকৌশলকে দুর্বল করতে কিংবা প্রতিহত করতে কাজে লাগে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার খুব বেশি বাকি রাখেননি, আবার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হওয়ার দায় কাঁধে নেননি, তিনি বাঙালি জাতিকে আক্রমণকারী নয়, বরং আক্রান্ত হিসেবে তুলে ধরার কৌশল নিলেন, পাকিস্তানি জান্তা বঙ্গবন্ধুর কৌশলের মর্মার্থ না বুঝে আক্রমণকারীরূপে চিহ্নিত হলেন, বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন নিজের অবস্থানকেও পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রে। তিনি এসব কৌশল গ্রহণে বড় ধরনের কোনো ভুল করলে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হতো না, স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা পোষণকারী মানুষ হয়তো অস্ত্র হাতে নিতই না, ভারতে যাওয়া তো দূরে থাক। বঙ্গবন্ধু তার চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনে কখনো হঠকারী কোনো কৌশল গ্রহণ করেননি বলেই শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, সেই যুদ্ধে আমরা সফল হয়েছি, বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পেরেছে। কেমন বাংলাদেশ তিনি চেয়েছিলেন, সেটি তিনি স্বাধীনতা-উত্তরকালে তৈরি করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন, সংবিধান রচনা, মৌলনীতি গ্রহণ, রাষ্ট্রব্যবস্থায় আদর্শিক তথা জনগণতান্ত্রিক কল্যাণবাদী চিন্তাধারা তার মধ্যে ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছিল, তবে কৌশল নির্ধারণে তিনি তার প্রতিপক্ষের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্তের ব্যাপারে ততটা সচেতন ছিলেন না, যতটা অবশ্যই তার থাকা প্রয়োজন ছিল। এ ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে একটু আবেগ ও বিশ্বাসপ্রবণ ছিলেন, যা রাষ্ট্র নির্মাণের কালে থাকা উচিত নয়, এমন রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তির অপতৎপরতা, অর্থবিত্ত, প্রচার-প্রচারণা কত গভীর, তীক্ষè, নির্মম ও নিষ্ঠুর হতে পারে তা তিনি বুঝতে চাননি, বিশ্বাস করতে চাননি। এ ক্ষেত্রে আবেগ প্রবণতা তাকে যে সহজ-সরল ও নিরাপত্তাহীন জীবনব্যবস্থায় অভ্যস্ত হওয়ার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা দিয়েছিল তার সুযোগ করে দিয়েছে তার রাজনৈতিক দেশীয় ও বিদেশি শক্তিকে, তারা ১৫ আগস্টের মতো নিষ্ঠুর ও পৈশাচিকতা ঘটাতে সুযোগ করে দিয়েছে। এখানে অপশক্তির অপকৌশল ক্ষমতা দখলের রক্তাক্ত অধ্যায় তৈরির নজির সৃষ্টি করল। এখানেই মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র-রাজনীতিতে কোন শক্তির আদর্শ কী হতে পারে, ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে কোন শক্তি কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে। এসবই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির বিরুদ্ধ অপশক্তির রাজনীতিÑ যা ১৯৭৫-এর পর বাংলাদেশে অতি স্বল্পসময়ের মধ্যেই স্বমূর্তিতে আবির্র্ভূত হলো। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে কৌশলগতভাবে সচেতন থেকে যখন তিনি দলকে পরিচালিত করেছেন, তখন জাতীয় জীবনে আমাদের অর্জনগুলো কঠিন হলেও মহৎ ছিল; কিন্তু যখন তিনি অপশক্তির অপকৌশলকে অবমূল্যায়ন করে রাষ্ট্র-রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে গিয়ে শুধু প্রাণই হারাননি, নিজের প্রিয়জন, নিকট-রাজনৈতিক নেতৃত্বকে হারাতে হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেই সময়ে রোমান্টিকতা, হঠকারিতা, ক্যু, হত্যা, প্রতিশোধ নেওয়ার শেষে সাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শের যে রাষ্ট্র-রাজনীতির উন্মেষ ঘটানো হলো তা থেকে বাংলাদেশ আদৌ মুক্ত হতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।
বাংলাদেশে বেশ কিছু আদর্শবাদী রাজনৈতিক দল এবং নেতৃবৃন্দ পাকিস্তান আমলে মাঠে তৎপর ছিলেন। তারা শোষণহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মন্ত্র বেদবাক্যের মতো আত্মস্থ করেছিলেন, কিন্তু বিপ্লববাদে আপ্লুত রণকৌশল নির্ধারণে বাস্তবতাবিবর্জিত অবস্থান গ্রহণ করায় জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে থাকেন। মহৎ আদর্শের বেশ কিছু দল মতবিরোধে জড়িয়ে পড়ে, ভেঙে তছনছ হতে থাকে, কোনো অবদানই দলগুলো শেষ পর্যন্ত রাখতে পারেনিÑ এমনকি মুক্তিযুদ্ধেও কোনো কোনো দল আন্তরিকভাবে অংশ নেয়নি, কেউ কেউ বিরোধিতা করেছিল। স্বাধীনতা-উত্তরকালে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মূল দলগুলো আন্তরিক ছিল। কিন্তু বাস্তবতাবিবর্জিত কৌশল নির্ধারণের ফলে চড়া মূল্য শুধু দলগুলোকেই নয়, বাংলাদেশকেও দিতে হয়েছে। এখন ওইসব দল প্রায় জনসমর্থনশূন্য হয়ে পড়েছে। এসব দলের আদর্শ মহৎ এ কথা সবাই স্বীকার করেন, কিন্তু বাস্তবতাবিবর্জিত কৌশল নিয়ে রাজনীতি করার কারণে জনগণের কাছে এসব দলের আবেদন হারিয়ে যেতে বসেছে, বিশেষত ভোটের বাজারে এদের মূল্য প্রায় নেই, অথচ সৎ মানুষের দল হিসেবে তাদের স্বীকৃতি ঈর্ষণীয়। এসবের উত্তর আমরা কতটা খোঁজার চেষ্টা করছিÑ তা তলিয়ে দেখা দরকার।
এবার বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রসঙ্গটি দেখা যেতে পারে। দল দুটির আদর্শ ডানপন্থার, বিএনপি কিছুটা মধ্যডানেরও, জামায়াত সর্বদক্ষিণের। তবে জামায়াত কৌশলগতভাবে বেশ এগিয়ে গিয়েছিল। দেশে তাদের একটি মৌলবাদী শক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি নিয়ে রাজনীতির মাঠে প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছে, ব্যাংক, বীমা, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবহন, নানা স্থাপনা গড়ে তোলার মাধ্যমে দলটি তাদের রাজনৈতিক ভিত্তিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বিএনপি জামায়াতের এই শক্তিতে আস্থাশীল থেকেই ১৯৯৯ সালে চারদলীয় জোট গঠন করে একসঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের বাস্তবতা তৈরি করেছে। ২০০১ সালের নির্বাচনে এই জোট যখন অংশ নেয়, তখন আওয়ামী লীগসহ অসাম্প্রদায়িক দলগুলো এই জোটের উত্থানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যতটা প্রয়োজন ছিল ততটা সচেতনতার পরিচয় দিতে পারেনি। ফলে চারদলীয় জোট ২০০১ সালের নির্বাচনে কৌশলে রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে শুধু হারিয়ে দেয়নি, বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক-বাহকদের নির্মূল করার কৌশল বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল। জঙ্গিবাদী সব অপশক্তিকে মাঠে নামিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের দল ও শক্তিকে একের পর এক আঘাত শুরু করে, ২০০৭ সালের নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করার ইঞ্জিনিয়ারিংও প্রকাশ্যে করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত জামায়াত-বিএনপির কৌশল সফল হয়নি, বরং গঠিত মহাজোটের কৌশল সফল হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটকে জনগণের প্রত্যাখ্যান করার অন্যতম কারণ হচ্ছিল ২০০১-২০০৮ সালের রাজনৈতিক পথপরিক্রমার অভিজ্ঞতা। বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক কৌশল অপকৌশল হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় চারদলীয় জোট বড় ধরনের হোঁচট খায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ২০০৮-এর দিকে নতুন উপলব্ধিতে দলের আদর্শ, কর্মকৌশলকে ঢেলে সাজায়, মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে কাছে টেনে নতুনভাবে নাড়া দেয়, ২০০৮ সালের নির্বাচনে এর ফলও পাওয়া যায়। মহাজোট সরকার একদিকে অর্থনৈতিক ব্যাপক কর্মযজ্ঞ নিয়ে অগ্রসর হয়, অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে শক্ত হাতে ধরা হয়। এ ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত শেখ হাসিনার সরকারকে অবমূল্যায়ন করে একের পর এক সরকার হটানোর অপকৌশল সাজাতে থাকে, কিন্তু শেখ হাসিনা প্রতিপক্ষের সব অপকৌশলকে বিচক্ষণতা দিয়ে মোকাবিলা করতে থাকেন। ২০ দলীয় জোট ভেবেছিল নির্বাচন প্রতিহত করতে সক্ষম হলে শেখ হাসিনার সরকার পড়ে যেতে বাধ্য হবে। তবে যে পন্থায় ২০ দলীয় জোট নির্বাচন করতে মাঠে নেমেছিল তা ছিল হিংসাত্মক, জনবিরোধী, হঠকারী, রোমান্টিক, অনেকটা প্রতি বিপ্লবাত্মক। ফলে শেষ পর্যন্ত ২০ দলীয় জোট পরাস্ত হলো। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও পরিণতি লাভ করে। জামায়াত হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। রাজনীতিতে তাদের প্রয়োগকৃত সব কৌশলই ব্যর্থ হয়, এর সঙ্গী হতে গিয়ে বিএনপিও দলগতভাবে শক্তি হারিয়েছে, পথহারা নাবিকের মতো কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় পড়ে। জামায়াত এখন কতটা বিএনপির পাশে আছে, কতটা দূরে আছে তা স্পষ্ট নয়। তবে জামায়াত নতুন করে প্রস্তুতি নিচ্ছে না, বিএনপি নিচ্ছে নাÑ তা কিন্তু বলা যাবে না। এ দুটি ডানপন্থার দলে অনেক ‘অভিজ্ঞ’ নেতা রয়েছেন, দুই দলের সমর্থকের সংখ্যা একেবারে কম নয়, গোটা বাংলাদেশের সমাজে এখন তিনটি ধারা বেশ ক্রিয়াশীল। এক. মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কাছাকাছি থাকার মতো একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। তবে দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ এদেরকে কাছে টানা বা ধারণ করার কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করেনি। দুই. দেশের অভ্যন্তরে সাম্প্রদায়িক এবং রক্ষণশীল শক্তিগুলো ভেতরে ভেতরে নৈকট্য স্থাপন করছে, বিএনপি-জামায়াত মোহ এদের এখনো কেটে যায়নি, সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় এরা রয়েছে। তিন. আওয়ামী লীগের প্রতি সমালোচনা, তবে শেখ হাসিনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, দৃঢ়তা ইত্যাদি স্বীকার করেন, কিন্তু নানা ধরনের আস্থা-অনাস্থার দোলাচলে দুলছেন এমন মানুষের সংখ্যা মোটেও কম নয়। বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় এসব রূপান্তরিত শক্তির অবস্থানটি আগামী নির্বাচনের আগে কোনদিকে হেলে পড়বে তা এখন বলা মুশকিল। গেল বছর কয়েকজন বিশ্বাস করতে পেরেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প জয়লাভ করবে? শেষ পর্যন্ত রক্ষণশীলতার দিকেই ভোটারদের বড় অংশ হেলে পড়ে। বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতাকে আওয়ামী লীগ যদি এখন ধরতে, বুঝতে, কথাবার্তা বলতে ভুল করে, কোনো ধরনের বাড়াবাড়ির প্রমাণ রাখে, মূলখোর বলে পরিচিতদের নিবৃত্ত না করে, বিএনপি নেতাদের প্রয়োজনীয়ভাবে কথার মাধ্যমে আক্রমণ করে তাহলে সহানুভূতির পাল্লা সেদিকেই ভারী হতে পারে। আওয়ামী লীগকে এখনই কৌশল নির্ধারণে অনেক বেশি সতর্কতার পরিচয় দিতে হবে। আচরণ ও কথাবার্তায় কৌশল এবং সংযত থাকাই বাঞ্ছনীয়। দল ও জোটগতভাবে বিএনপি-জামায়াত দৃশ্যমান নয়Ñ এটি হয়তো তাদের কৌশল অবস্থান, কিন্তু ভোটের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান এখনো অটুট, এর সঙ্গে নতুনভাবে কোনো কোনো গোষ্ঠী যুক্ত হলে শেষ পর্যন্ত লাভবান হবে বিএনপি ও জামায়াতÑ যারা পুনর্জন্ম লাভ করলে দেশের পরিস্থিতি ২০০১-০৬ সময়ের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে, সেই আতঙ্কই অনেকে প্রকাশ করছে। এমন পরিস্থিতি কারো কাম্য নয়, তবে কৌশলগত ভুলের কারণে জাতীয় জীবনে কত সব বিপর্যয় ঘটতে পারে তা বোধহয় ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে, এখন সতর্ক থাকতে হবে, কোনো কৌশলগত ভুল যেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ থেকে না হয়। সে জন্য তাদেরই বেশি বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
য় মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী, অধ্যাপক
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলাম লেখক
উৎসঃ আমাদের সময়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন