|
সাহিদুজ্জামান
|
|
সাইদ ও অয়ন্তিকার কাছে আসার গল্প....!
18 February 2015, Wednesday
টিকিট কাউন্টার
প্যাসেঞ্জার নাম অথবা ইমেইল: *
টিকেট: *
ভুলোনা আমায় ;)
নতুন টিকেট কাটুন
টিকেট আনতে ভুলে গেছেন?
শিডিউল
ভূখা পেটে প্রকৃত জ্ঞান বিতরণ সম্ভব নয়
দুঃস্বপ্ন
ভবনতান্ত্রিক আন্দোলন
বেগম জিয়া, "ফুলন দেবী" ।।
একজন নাস্তিকের মোনাজাত
সম্পর্কঃ অণুগল্প
আলোর মিছিলে কবি লাবিদ!
দেখেন দেখেন আবাল ছেলেটা বলে কি?
সাপোর্ট বাংলাদেশ
রাজনৈতিক সমস্যা রাজনইতিকভাবে সমাধান হতে হবে
আরো
ওয়েটিং রুম
এইমূহুর্তে 10 জন যাত্রী প্লাটফরমে আছেন
যাত্রীরা হচ্ছেন:
মধ্যরাতের ট্রেন
রাজু আহমেদ
আনিস রায়হান
ডাঃ আতিক
তাজউদ্দীন রাজু
ইকারাস
আলোকিত আধারে
বেকুব
বুনোগান
শঙ্খচিলের ডানা
fashion.karigor.com
ব্লগপ্ল্যাটফরম » ব্লগসমূহ » সাহিদুজ্জামান এর ব্লগ
সাইদ ও অয়ন্তিকার কাছে আসার গল্প....!
লিখেছেনঃ সাহিদুজ্জামান >> সময়: মঙ্গল, 17/02/2015 - 11:35অপরাহ্ন
আমি কবিতার ক 'ও জানিনা, তবে তুমি চাইলে একটা মহাকাব্য ঠিকই লিখতে পারবো। এরকম করে রোজ সাইদ অয়ন্তিকাকে চুপ করাতো।
অয়ন্তিকার ইচ্ছা সাইদ যেন তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখে। কিন্তু সাইদের লিখার হাত ওতোটা ভালো না তবুও সাইদ চেষ্টা করে। চেস্টা করতে করতে একদিন সাইদ ঠিকই লিখে ফেলে!
সাইদের ছন্দহীন কবিতা পড়ে অয়ন্তিকা না হাসলেও বকা কিন্তু ঠিকই দিয়েছিল।
সাইদের সাথে অয়ন্তিকার প্রথম দেখা হয়েছিল ২০১৪ এর জানুয়ারিতে। ঢাকা থেকে চিটাগাং আসার পথে ট্রেনেই তাদের দেখা। অয়ন্তিকা তখন উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর সাইদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স করছে।
কুমিল্লাতে যখন ট্রেন থামলো তখন সাইদ ট্রেন থেকে নেমে চা দোকানে গেলো। হঠাৎই এক মেয়ে সেই দোকানে এসে বলল,
'চা হবে? '
'হবে ', দোকানি তাকে বলল।
অয়ন্তিকা তখন সাইদের পাশে গিয়ে বসল। বিকেল এবং ঠান্ডা মিলিয়ে সুন্দর একটা পরিবেশ যা চা পান করার জন্য বেস্ট।
দোকানি চা বানিয়ে প্রথমে অয়ন্তিকাকে দিল। এতে সাইদ রাগান্বিত হয়ে দোকানিকে বলল,
'আমি আগে বলেছি, কিন্তু আপনি উনাকে আগে কেন দিলেন? "
অয়ন্তিকা মুচকি মুচকি হাসছে আর মনে মনে বলছে,
'আজকের দিনে এমন ছেলেও আছে দেখছি যে মেয়ে বিদ্বেষী! '
অয়ন্তিকার হাসি দেখে সাইদ একটু লজ্জা পেলো।
হঠাত্ করেই একটা লোক এসে অয়ন্তিকার ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে পালালো। এ দেখে সাইদ ও তার পিছনে পিছনে দৌড়াতে শুরু করল।
এদিকে ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে গেছে। অয়ন্তিকা তখন "মেয়ে বিদ্বেষী " ছেলেটির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু সাইদ তখনো ফিরে এলোনা।
কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সে ট্রেনে উঠে গেল।
ট্রেন চলছে তো চলছে।
কুমিল্লার পরে ফেনী স্টেশনে আবারও ট্রেন থামলো।
তবে এবার অনেকটা সময়ের জন্য। কারণ চিটাগাং থেকে আরেকটি ট্রেন এদিকে আসছে।
অয়ন্তিকা মনে মনে ভাবলো ছেলেটি হয়তো ট্রেনে ঠিকই উঠেছে কিন্তু তাকে খুজেঁ পাচ্ছেনা।
সে আরও ভাবলো তাদের যেহেতু প্রথম দেখা চা দোকানে সেহেতু সে এখানেও চা দোকানে যাবে। যদি ছেলেটি এখানে থেকে থাকে তবে অবশ্যই আসবে। টানা দেড় ঘন্টা বসে রইলো সে। কিন্তু ছেলেটির খোজ নেই।
এদিকে সাইদ পুরো ট্রেন খুঁজতে লাগলো যাতে করে মেয়েটির দেখা পায় এবং তার হাইজ্যাক হয়ে যাওয়া ব্যাগটি ফেরত দিতে পারে। কিন্তু দুইজন এখন দুই জায়গায়। কেউ কাউকে পাওয়ার পসিবিটিলিই নাই।
ট্রেন আবার চলা শুরু করলো। অয়ন্তিকার মনে হলো ছেলেটি হয়তো ট্রেনে কোথাও না কোথাও আছে। তাই সেও ট্রেনের এক বগি থেকে আরেক বগি খুজতে লাগলো। একই ভাবনা সাইদের মধ্যেও জাগলো এবং সেও ট্রেনের এক বগি থেকে আরেক বগি খুজতে লাগলো। যার ফলে কারও সাথে কারোরই দেখা হলোনা।
ট্রেন ছুটছে তার আপন গতিতে।
তারপর মিরসরাই, পাহাড়তলী এবং সর্বশেষ চট্রগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এসে নামল তারা।
ও হ্যাঁ অয়ন্তিকার পারিবারিক পরিচয় টা বলা হয়নি। সে চিটাগাং এর এক সনামধন্য ব্যাবসায়ীর একমাত্র মেয়ে। একটা বিশেষ কাজে ঢাকায় গিয়েছিল সে। বাবা মাকে বলেছিল বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছে কিন্তু গিয়েছিল ঢাকায়।
এদিকে অয়ন্তিকার সাথে ফেইসবুকে পরিচয় হয় একটা ছেলের। ফেইসবুকে ছেলেটা তার কোন ছবি দেয়নি। টানা দুই মাসের মেসেজিং এর এক পর্যায়ে তাদের দেখা করার ইচ্ছা জাগে। দেখা করার প্রোপোজাল টা অবশ্য ছেলেটিই দিয়েছিল।
'চলো আমরা দেখা করি। '
'আচ্ছা ঠিকাছে, তুমি তাহলে চিটাগাং এ আসো।'
ছেলেটির বাড়ি পুরনো ঢাকায়। অয়ন্তিকা ঢাকায় কেন গিয়েছিল তা জানিনা কিন্তু সে চাইলেই দেখা করতে পারতো ছেলেটির সাথে কিন্তু করেনি। কারণ সে চেয়েছিল ছেলেটিকে যদি তার পছন্দ হয় তাহলে সে তার বাবা -মার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে তাকে।
আজকের এই ট্রেনেই ছেলেটির আসার কথা। এই জন্য বোধহয় অয়ন্তিকা বার বার তাকে খুজছিলো। এদিকে সাইদ ট্রেন থেকে নেমেই কাকে যেন ফোন দিলো,
'হ্যাঁ, তুমি কোথায়? আমি এইমাত্র চিটাগাং এ এসে নামলাম। '
'আমি তো স্টেশন এ, তোমাকে রিসিভ করার জন্য এসেছি। তুমি কি ড্রেস পড়ে আছ? '
'আমি কাল শার্ট আর জিন্স, তুমি? '
'আমি সাদা রঙ্গের জামা '
এই বলতে তারা দুইজনই একে অন্যের সামনে গেলো! কিন্তু একি! এই সাইদ ই হলো অয়ন্তিকার সেই ফেইসবুক ফ্রেন্ড। অয়ন্তিকা বলল,
'তুমি ! '
'আমারও তো একই প্রশ্ন, তুমি ! '
এরপর অয়ন্তিকা সাইদ কে তাদের বাসায় নিয়ে গেলো। তার বাবা মার সাথে সাইদের পরিচয় করিয়ে দিল। অয়ন্তিকার পরিবার সাইদকে দেখে পছন্দ করলেন এবং তার বাবা -মার কাছে এই বিষয়ে বললেন।
গত বছরই সাইদের গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট হয়েছে এবং সে একটা ভালো চাকরি ও পেয়েছে।
দুই পরিবারের সম্মতি ক্রমেই সাইদ এবং অয়ন্তিকার বিয়ে ঠিক হলো।
উৎসঃ ইস্টিশন ব্লগ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন