|
নেবুলা মোর্শেদ
|
|
রুপের দেবীকে পর্যবেক্ষন (প্রথম পর্ব)।
09 January 2015, Friday
রাতের মেঘ মুক্ত পরিস্কার আকাশে কত হাজার নক্ষত্র আমরা দেখতে পাই।এর কোনটি লাল,কোনটি নীল,কোনটা হলুদ এমনি নানা বর্নের উজ্জল নক্ষত্র দেখতে পাই।এর মধ্যে কিছু আছে বড় এবং অনেক উজ্জল আর এই উজ্জলতার কোন পরিবর্তন নেই,এদের আলোও মিটমিট করে না।নক্ষত্র গুলোকে আমরা মিটমিট করে আলো দিতে দেখি,এর কারন এরা এতটাই দূরে যে এদের আলো পৃথিবীর বায়ূমন্ডল ভেদ করে আসার সময় এদের আলো বাধাপ্রাপ্ত হয়।আর বড় এবং উজ্জল যে বস্তু আমরা দেখতে পাই,এরা আসলে নক্ষত্র নয়,এগুলো হলো গ্রহ।
এরা তূলানামুলক আমাদের অনেক কাছে,যার কারনে এদেরকে এত উজ্জল দেখা যায়।এদের নিজের কোন আলো নেই সূর্যের আলোয় এরা আলোকিত হয়।আসুন যারা গ্রহ নিয়ে পর্যবেক্ষন করতে চান বা দুরবীন দিয়ে দেখতে চান তাদের জন্য।পৃথিবী থেকে পাচটি গ্রহকে খালী চোখে দেখা যায়,এর মধ্যে বুধ,শুক্র,মগ্নল,বৃহস্পতি এবং শনি।আজ আমি শুক্র গ্রহ নিয়ে আলোচনা করবো।শুক্র সৌরজগতের ২য় গ্রহ।এবং আকাশে চাঁদের পড়ে সবচেয়ে উজ্জলতম বস্তু।
বস্তু।এর ভর 4,867,320,000,000,000 বিলিয়ন কেজি ( পৃথিবীর চেয়ে 0.815 x ).
এর নিরক্ষীয় ব্যাসার্ধ- 12,104 কিঃমিঃ।
মেরু ব্যাসার্ধ- 12,104 কিঃমিঃ।
নিরক্ষীয় পরিধি- 38,025 কিঃমিঃ।
কক্ষপথ দূরত্ত- 108,209,475 কিঃমিঃ (o.73 AU)।
কক্ষপথ সময়কাল- 224,70 পৃথিবীর দিনে।
পৃস্ট তাপ- 462 ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড।
এর নিজের কোন উপগ্রহ (চাঁদ) নেই।
শুক্রের একদিন পৃথিবীর 243 দিনের সমান।
অন্য গ্রহ গুলি সূর্যকে যে দিক থেকে প্রদক্ষিন করে শুক্র তার উল্টা দিক থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিন করে।আমরা বছরের কিছু সময় সূর্য অস্ত যাবার পড়ে পশ্চিম আকাশে একে দেখতে পাই,যাকে আমরা সন্ধ্যাতারা বলি।আবার বছরের কিছু সময় একে সূর্য উঠার আগে পূর্ব আকাশে দেখি আমরা একে শুকতারা বলি,আসলে এটি হলো শুক্র গ্রহ।গ্রিক পুরানে একে রুপের এবং প্রেমের দেবী বলা হয়।একে পৃথিবীর ভগ্নি বলা হয়।
এই গ্রহটিকে সবসময় দেখা যাবে না।বহিঃসংযোগের সময় (Superior Conjunction) যখন এটি সূর্যের পিছনে থাকে এবং অন্তসংযোগের সময় যখন সূর্যের সামনে থাকে-সে সময় গুলোতে শুক্রকে দেখা যায় না।শুক্র গ্রহ সূর্য থেকে সর্বোচ্চ 47 ডিগ্রী পর্যন্ত (পূর্ব বা পশ্চিম) কৌনিক দূরত্তে থাকতে পারে।ফলে একে সন্ধ্যার পর প্রায় রাত 10 টা পর্যন্ত অথবা মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করা যেতে পারে।সাধারনত: বসন্তকালে যখন এটি সূর্যের পূর্বে থাকে তখনই এটি দিগন্ত থেকে সবথেকে উচুতে অবস্থান করে।বহিঃসংযোগের সময় সূর্য থেকে মাত্র 5 ডিগ্রী দূরে থাকা অবস্থায় একে খালী চোখে দেখা যেতে পারে।
পারে।তবে এজন্য তখন গ্রহটির অবস্থান জানা থাকতে হবে এবং অন্ততঃ একবার বাইনোকুলারের মাধ্যমে সনাক্ত করে নিতে হবে।সূর্য অবশ্যই তখন মাত্র অস্ত গিয়েছে।বহিঃসংযোগের 35 দিন পরে যখন সূর্য থেকে এর কৌনিক দূরত্ব হবে 9 ডিগ্রী তখন একে আবার খালী চোখে দেখা যাবে।শুক্র গ্রহ সর্বোচ্চ উজ্জলতা প্রাপ্ত হয় পূর্ব বিস্তারের (Eastern Clongation) 35 দিন পরে এবং পশ্চিমে বিস্তারের (Western elongation) 35 দিন পূর্বে।
শুক্র গ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘটনার মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান নিম্নরুপঃ-
ভোরের আকাশে অন্তঃসংযোগ 10 সপ্তাহ।
ভোরের আকাশে পশ্চিমে বিস্তার
বহিঃসংযোগ 31 সপ্তাহ।
সন্ধ্যার আকাশে পূর্বে বিস্তার 31 সপ্তাহ।
অন্তঃসংযোগ 10 সপ্তাহ।
শুক্র পর্যবেক্ষনঃ
একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারন বাইনোকুলারের সাহায্যেই শুক্র গ্রহের চাঁদের মতো বিভিন্ন কলা (Phase) এবং কলার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।তবে মগ্নল বা বৃহস্পতির মতো শুক্র গ্রহের বৈশিস্ট্য দূরবীনে এত ভালো দেখা যায় না।এর কারন গ্রহটির পৃস্টকে ঘিরে পুরু মেঘের আবরন রয়েছে।সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষন করলে হালকা ও অস্পস্ট কিছু বৈশিস্ট্য চোখে পড়বে।
পর্যবেক্ষন কিভাবেঃ শুক্র গ্রহের পৃস্টস্থ মেঘমালা ব্যতিরেকে পৃস্ট বৈশিস্ট্য পর্যবেক্ষনের জন্য কিছু পন্থা অবলম্ভন করা প্রয়োজন।
প্রথমতঃ আপাত কৌনিক আকার এবং কলার কলার পরিমান বড় হতে হবে।এ অবস্থা পাওয়া যাবে পশ্চিমে বিস্তার ও বহিঃসংযোগের মাঝামাঝি সময়ে এবং পুনরায় আবার পাওয়া যাবে বহিঃসংযোগ ও পূর্ব বিস্তারের মাঝামঝি সময়ে।(মাসের বিভিন্ন সময়ে আপাত) আকার গ্রহদের এফিমেরিস টেবিলে উল্লেখিত থাকে)।
দ্বিতীয়তঃ গ্রহটির প্রচুর উজ্জলতা কমাতে হবে।কেননা প্রচুর উজ্জলতার জন্য হালকা পৃস্ট বৈশিস্ট্যগুলো চোখে নাও ধরা পড়তে পারে।এক্ষত্রে (1) বিভিন্ন ঘনত্ববিশিস্ট পোলারইজিং ফিল্টার অথবা নিস্ক্রিয় ঘনত্বের ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে।অথবা (2) দূরবীনের মূল অ্যাপারচার কমাতে হবে ডায়াফ্রেম বা পর্দা ব্যবহার করে।সবচেয়ে ভাল পন্থা হলো (3) দিবাভাগে পর্যবেক্ষন।
শুক্র বর্তমানে ভোরের আকাশে অবস্থান করছে
এই সাইটে ঢুকুন সব তথ্য জানতে পারবেন।
চলবে............
উৎসঃ সামহোয়ারইনব্লগ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন