|
দর্পণ
|
|
কবি ও নারী এবং এক বিকেলের গল্প
02 January 2015, Friday
কবি: কাল বাড়ি ফিরে কি করলেন?
নারী: কাঁদলাম। আপনি কি করলেন।
কবি: একটা কবিতা লিখেছি।
নারী: আপনাকে আমার ঠিক শুভঙ্করের মতন মনে হয়।
কবি: শুভঙ্কর? মানে ফাঁকি দেবার মত কেউ নাকি?
নারী: আরে না, ফাঁকি হবে কেনো!
কবি: মানে সেই যে যাদব বুড়োর শুভঙ্করের ফাঁকির কথা বলছি আর কি ।
নারী: ধ্যাৎ কি যে বলেন! কোথায় আমি পূর্নেন্দু পত্রীর কথপোকথনের শুভঙ্করের কথা বলছি আর এর মধ্যে আবার টেনে আনলেন কাঠখোট্টা গনিত।
কবি: হা হা হা আচ্ছা বলুন। কি বলছিলেন শুভঙ্করের কথা!
নারী: বলছিলাম আপনি ঠিক শুভঙ্করের মতন কথা বলেন।
কবি: ভুল বললেন, আমি আমার মত করেই কথা বলি। আমি শুভঙ্কর টর চিনিনা। সে কি প্রেমিক টাইপ কেউ?
নারী: আপনি একজন কবি হয়েও শুভঙ্কর চেনেন না! মোটেই বিশ্বাস করতে পারছি না আর বড় দুঃখ পেলাম। মানতে পারলাম না।
কবি: সবাইকে সব চিনতে হবে এমন কোনো কথা নেই....
নারী: সে যাহোক আমার কাছে আপনাকে মনে হয় ঠিক যেন বই এর পাতা থেকে কবিতার শুভঙ্করই উঠে এসেছেন আপনি।
কবি: আমি অন্যের মতন হয়ে কারো আবেগের কাছে বাঁধা থাকতে চাইনা।
নারী: আপনার চাওয়া না চাওয়ায় কি যায় আসে? আমার যেটা মনে হল সেটাই বলেছি।
নারী: জানেন? আপনাকে নিয়ে আমিও লিখছি কথপোকথন।
কবি: কি! আমাকে নিয়ে! হাসালেন।
নারী: হাসলে হাসেন আমার কি? আমার যা ভালো লাগে আমি সেটাই করবো।
কবি: ঠিক আছে নন্দিনী। তাই করুন।
নারী: এ্যাই ! এইযে বললেন আপনি শুভঙ্কর চেনেন না। কথপোকথনের নামও শোনেননি। আপনি যে এত মিথ্যুক জানতাম না।
কবি: হা হা হা নন্দিনী। আজ থেকে আপনাকে নন্দিনী নামেই ডাকবো।
নারী: আর আপনাকে শুভঙ্কর?
কবি: না । আমি শুভঙ্কর হতে চাইনা।আমি আমি হয়েই থাকতে চাই। সে যাই হোক এবার একটা গান শুনান।
নারি: গান!
কবি: হুম। জলতরঙ্গের মত সূর আপনার গলায়। শুনতে খুব ভালো লাগে।
নারী: ধ্যাৎ! কি যে বলেন না।
কবি: লজ্জা পেলেন?
নারী: হুম।
নারী: নয় নয় নয় এ মধুর খেলা--
তোমায় আমায় সারাজীবন সকাল-সন্ধ্যাবেলা
নয় নয় নয় এ মধুর খেলা ॥
কতবার যে নিবল বাতি, গর্জে এল ঝড়ের রাতি--
সংসারের এই দোলায় দিলে সংশয়েরই ঠেলা ॥
নয় নয় নয় এ মধুর খেলা--
বারে বারে বাঁধ ভাঙিয়া বন্যা ছুটেছে।
দারুণ দিনে দিকে দিকে কান্না উঠেছে।
ওগো রুদ্র, দুঃখে সুখে এই কথাটি বাজল বুকে--
তোমার প্রেমে আঘাত আছে, নাইকো অবহেলা ॥
নারী: কিছু বলছেন না যে...
কবি: নাহ মানে ডুবে আছি।
নারী: ডুবে আছেন?
কবি: হুম।কত সহজেই গানে গানে বলে দিলেন মনের কথাগুলো।
নারী: ধ্যাৎ। মনের কথা আবার কি? এটা গান। রবিঠাকুরের গান।
কবি: জানেন মাঝে মাঝে না এই মানুষটার ওপর আমার ভীষন রাগ হয়।
নারী: রাগ হয়!আরে কি বলছেন এইসব ? রাগ কেনো!
কবি: রাগ মানে কিছুটা দুঃখ। কি করে বলে দিয়েছেন তিনি আমাদের মনের কথাগুলো।
নারী: হা হা হা তাই বলুন।
কবি: তবে আজকের গানটা আপনার মনের কথা।
নারী: বলেছে আপনাকে।
কবি: হ্যাঁ বলেছে তো। আপনার সাথে যেদিন থেকে আমার পরিচয় সেদিন থেকেই বুঝতে পেরেছি?
নারী: কি বুঝেছেন? বুঝেছেন ছাই।জানেন আমি সবার সাথে মন খুলে কথা বলিনা।
কবি: জানি।
নারী: কি জানেন?
কবি: জানি যে আপনি সবার সাথে সব কথা বলেন না। কিন্তু আপনার মনের গোপন কুঠুরীতে অনেক কথা জমা রয়েছে। আর মজার ব্যাপার হলো সেই গোপন কুঠুরীর দরজার সামেন দাঁড়িয়ে রয়েছি আমি।
নারী: ইশ!
কবি: ইশ না। যেদিন থেকে মন খুলেছেন সেদিন থেকেই লজ্জা পাচ্ছেন আমাকে।
নারী: আহা লজ্জা পাই না?
কবি: হুম। পান।
কবি:আপনার গোপন কুঠুরের দরজা খুলে গেছে নন্দিনী। এখন আমি ভেতরে প্রবেশ করবো কিনা বুঝতে পারছিনা।
উৎসঃ সামহোয়ারইনব্লগ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন