|
চিরতার রস
|
|
রম্যঃ তখন যদি ফেসবুক থাকতো ? !!!
01 January 2015, Thursday
ফেসবুকের আগমন হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি। আর এর মধ্যেই এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। সকালে বাথরুমে যাওয়া থেকে শুরু করে রাতে বাথরুম সেরে আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত যাবতীয় ঘটনাবলী আমরা ইদানিং ফেসবুকে আপডেট দিয়ে থাকি। কিন্তু যদি আরো কয়েকশ বছর আগেই ফেসবুকের আবির্ভাব হতো তাহলে ব্যাপারটা কেমন হতো?!
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ
ফেসবুক হতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা লেখার খাতা। প্রতিদিনই অসংখ্য কবিতার পোস্ট দিয়ে সবাইকে ট্যাগ দিতেন। তার সাথে নতুন নতুন কবিতার পেজ খুলে বন্ধুদের এড দিতেন। এতে করে তার ফেসবুক বন্ধুরা বিরক্ত হয়ে তাকে ব্লক করা শুরু করতো। এক সময় তার কবিতায় লাইকের সংখ্যা চক্রবৃদ্ধিহারে হ্রাস পেত। এটি তাকে ভীষণ পীড়া দিতো এবং দিনে দিনে তার হতাশা বাড়তে থাকায় এক সময় তিনি কবিতা লেখা ছেড়েই দিতেন। ফলাফল হিসেবে আমরা আজ একজন বিশ্ব কবিকে হারাতাম।
সম্রাট শাহজাহানঃ
সম্রাট শাহজাহান কন্যা রাশি হওয়ায় এবং বিপুল অর্থ প্রতিপত্তির কর্ণধার হওয়াতে তার প্রফাইলে নারী ফেসবুকাররা কিলবিল করতো। ফেসবুক সম্রাট শাহজাহানকে অগণীত প্রণয় এবং ততোধিক বিবাহ সম্পাদন করার সুযোগ তৈরি করে দিতো। সারাদিন ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত থাকার ফলে বেগম মমতাজকে তিনি তেমন একটা সময় দিতে পারতেন না। আর বেগমের প্রতি তার ভালবাসাটাও তেমন ভারী হওয়ার সুযোগ হতো না। এতে করে তার মনে কখনোই তাজমহল তৈরি করার কথা জন্ম হতো না। ফলাফল হিসেবে আমরা আজ আর তাজমহল দেখতে পেতাম না।
স্যার আইজ্যাক নিউটনঃ
ক্যান্ডি ক্রাশ তার অত্যন্ত প্রিয় একটা খেলা হতো। তিনি প্রায়ই আপেল গাছের নিচে বসে আইপ্যাডে ক্যান্ডি ক্রাশ খেলতেন। কিন্তু মাঝেমাঝেই গাছ থেকে আপেল পড়ে তার খেলায় বারোটা বাজতো। তাই বাধ্য হয়েই তিনি আর কখনো আপেল গাছের নিচে বসতে যেতেন না। বরং বালিশে হেলান দিয়েই গেমটি খেলায় তিনি সাচ্ছন্দ বোধ করতে শুরু করতেন। এতে করে তার মাথায় আর মাধ্যকর্ষণ শক্তি আবিষ্কারের কথা ভুলেও আসতো না।
সক্রেটিসঃ
অন্যের মাঝে স্বেচ্ছায় জ্ঞান বিতরণ করা ছিল সক্রেটিস সাহেবের হবি। নিজে কিছু শিখে তা অন্যকে না শেখানো পর্যন্ত তার ভাল ঘুম হতো না। ফেসবুকে তিনি যেদিন প্রথম আইডি ওপেন করলেন, সেদিন থেকেই তিনি অন্যকে ফেসবুক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা শুরু করলেন। আশেপাশের সবাইকে তিনি ডেকে ডেকে ফেসবুকের নানান ফিচার এবং এ্যাপস্ সম্পর্কে নানান চমকপ্রদ কথা বলা শুরু করলেন। তিনি এতোই ভাল বক্তা ছিলেন যে, তার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ধীরে ধীরে রাজ্যের সবাই ফেসবুকে আইডি ওপেন করা শুরু করলো। এতে তার প্রফাইলে ফ্রেন্ড আর ফলোয়ারের সংখ্যা চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তে লাগলো যা রাজা মশাইয়ের ইর্ষার কারণ হয়ে দাড়ালো। তাই বাধ্য হয়ে রাজ পরিবার সক্রেটিসের হাত থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষার অজুহাত দেখিয়ে তাকে শুলে চড়িয়ে দিল।
উৎসঃ সামহোয়ারইনব্লগ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন