|
দর্পণ
|
|
কবি ও নারী এবং মেঘ, বৃষ্টি ও পাহাড়ের গল্প
29 December 2014, Monday
নারী:এই যা টিপটা হারিয়ে গেল...
কবি: হারিয়ে যাক । টিপ ছাড়াও আপনি খুব সুন্দর!অপূরুপা, মায়াময়!
নারী: কাব্য রাখুন। খোঁপাটাও ভেঙ্গে গ্যাছে। খোঁপার কাঁটাগুলো সব ঘাসের মাঝে ছড়িয়ে পড়লো। ছাড়ুন ছাড়ুন।
কবি: খোঁপা ভেঙ্গে যাক , কাঁটারা হারাক
হৃদয় ভাঙ্গুক আজ.......
নারী:আরে সবখানে কবিতা কিসের? মার খাবেন এইবার...
কবি: হা হা হা। আচ্ছা ছেড়ে দিলাম। চলুন ঐ উঁচু ঢিবিটাতে গিয়ে বসি কিছুক্ষন।
কবি:আচ্ছা আপনি না কবিতা বড্ড ভালোবাসেন?
নারী: বাসি কিন্তু সব সময় না?
কবি:কখন কখন? আর কোন কোন সময়?
নারী: চুপ করেন তো। আপনি যে এত বক বক করতে পারেন জানতাম না। মেয়েদের মত স্বভাব......
কবি: হাহাহাহা বকবক করাটা কি শুধুই মেয়েদের জন্য বরাদ্দকৃত?
নারী: জানিনা। যান....
কবি: জান? জান বললেন?
নারী:ধ্যাৎ আপনি তো আচ্ছা.......... পেটের ভেতর জীলাপির প্যাচ।
কবি: হা হা হা ওকে ঠিক আছে আর পেঁচাবোনা। আচ্ছা বলুন জীবনের কতবার প্রেমে পড়েছেন?
নারী: বলবোনা। আগে আপনারটা বলেন।
কবি: আমি? বহুবার।
নারী: বহুবার!
কবি: হুম । বহু বহু বহুবার......প্রথম ৮ বছর বয়েসে.........
নারী: ৮ বছর! হা হা হা সেটাকে কি প্রেম বলে? পাগল আপনি একটা। সত্যিই..
কবি: না সেটা প্রেমই ছিলো।
নারী: তো কি হলো আপনার সেই বাল্য প্রেমের?
কবি:তারা বাসা বদল করে চলে গেলো। আর খুঁজে পাইনি।
নারী: আরে আপনি বড় হয়ে খুঁজলেন না কেনো? সিনেমায় যেমন হয় আর কি । মানে বাংলা ম্যুভিতে। আপনি বড় হবার পর তাকে গান গেয়ে গেয়ে খুঁজে বের করলেই পারতেন।
কবি: নাহ ৮ বছরের বালকের সেই ইচ্ছেটা আর হয়নি।
নারী: খুবই ভুল করেছেন উচিৎ ছিলো বড় হবার পর তাকে খুঁজে বের করা। ধ্যাৎ এতদিন তাহলে কি বাংলা সিনেমা দেখলেন?
কবি: হুম। বুঝলাম। খুব বাংলা ম্যুভি দেখা হয় তাইনা?
নারী: হুম শ্বাসুড়ির সাথে দেখতে মাঝে মাঝে। তো এরপরের প্রেমগুলির কি অবস্থা?
কবি: এরপরে হাজারবার প্রেম এলো কিন্তু ২৮ বছর বয়সে যে প্রেমে পড়েছিলাম সেই প্রেম থেকে আর উঠে দাঁড়াতে পারিনি।
নারী: তার মানে ? এখনও পড়েই আছেন?
কবি: কেনো কষ্ট পেলেন?
নারী: না কষ্ট পাবো কেনো? আপনার প্রেম আপনি পড়েছেন আমার কি?
কবি: হা হা হা তাই তো আপনার কি?
নারী:সেই প্রেমিকার কি হলো? মানে ২৮ বছরের প্রেমিকার?
কবি: সরিয়ে দিয়েছি।
নারী: কেনো?
কবি: কারণ সেটাই তার জন্য ভালো ছিলো।
নারী: আহা মহৎ প্রেমী। ঢং
কবি: ঢং জানিনা আমি। আমি বড় সোজা।সোজা মানে সহজ সরল নই। বরং ভয়ংকর!!!
নারী: কি বলছেন এই সব!!
কবি: হা হা ভয় পাচ্ছেন? মানে ভয়ংকর রকম সোজা সাপ্টা কথা বলে ফেলি। মনের মাঝে কিছুই লুকাই না। ভয় পাবেন না।
নারী: না । পাচ্ছিনা। চলুন ফিরে যাই।
কবি: আরও কিছুক্ষন থাকুন না।
নারী: না আমার আর ভাল্লাগছেনা।
কবি: দেখুন আমাদের জীবনে সুন্দর মুহুর্তগুলো বড় ক্ষনিকের। খুব তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়।
নারী: হুম
কবি: একটা গান শোনাবেন?
নারী: গান? আরে সিনেমা পেয়েছেন?বাংলা সিনেমা?
কবি: না সিনেমা কেনো হবে? আচ্ছা আপনি কি খুবই সিনেমা পাগল?বাংলা সিনেমার?
নারী: মোটেও না। কেনো আপনি ম্যুভি দেখেন না?
কবি: খুব দেখি। আমি সর্বভুক। বাংলা , হিন্দী, ইংলিশ, মালে, রেড , গ্রীন, ব্লু, পার্পেল সবই গো্গ্রাসে গিলি আমি। আরে চোখ বড় বড় করে কি দেখছেন? হা হা হা । আজকের পর মনে হয় আপনি আর কখনও আমার সাথে কথাই বলবেন না, আমার এমনই মনে হচ্ছে।
নারী: হুম। আমারও ঠিক সেটিই মনে হচ্ছে। ধীরে ধীরে মুখোশ খুলছে আপনার।
কবি: হা হা হা সত্যি কথা কেউ পছন্দ করেনা। বললাম আমার এত বাছ বিচার নেই। যা সামনে পাই তাই দেখি। যা পাই তাই পড়ি।সেই ১৭-১৮ বছর বয়সে এত আজে বাজে বই পড়ে সময় নষ্ট করেছি। এখন অবশ্য আমার রুচির বেশ উন্নতি হয়েছে।
নারী: আপনার প্রিয় বই কি?
কবি: বলে শেষ করা যাবেনা।
নারী: প্রিয় কবিতা? নিজের লেখা?
কবি: নিজের লেখা সব কবিতাই তো প্রিয় আমার।
নারী: প্রিয় মানুষ কে?
কবি: অনেক অনেক..
নারী: সবচেয়ে প্রিয় ?
কবি: এই মুহুর্তে আপনি।
নারী: ধ্যাৎ কি যে বলেন।
কবি: বিশ্বাস করলেন না! এই মুহুর্তে আপনি, আপনার বাঁধ ভাঙ্গা চুলের সৌন্দর্য্য, আপনার মুছে যাওয়া ঠোঁটের রঙ, আপনার বিস্মিত অপলক চোখ, ভাঁজ ভেঙ্গে যাওয়া শাড়ির আঁচল, এই সবুজ ঘাসের গালিচা, উপরে অবারিত নিলাকাশ, শুয়ে শুয়ে দেখতে ভীষন ভালো লাগছে আমার। আপনাকে পৃথিবীর সবচাইতে প্রিয় মানুষ মনে হচ্ছে। কাছের মানুষ।
নারী: ঠিক আছে এখন চলুন। সুন্দর মুহুর্তের শেষ হোক এবার। শখ মিটে গেছে আমার পানসী করে বেড়াবার। বাড়িতে মনে হয় এতক্ষনে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়েছে। চলুন চলুন। উঠুন এখুনি।
কবি: হে বঙ্গ রমনী,
শান্তি পেলেনা তুমি,
পেলেনা সুখ, কেবলি দুঃখ
কেবলি শ্রান্তি, কেবলি অন্তরাল.......
কবি:নীলান্তিকা রয়। কিছু সময়ের জন্য দুঃখ ভুলুন। ভুলুন এ জীবনের সকল অপ্রাপ্তি, ব্যাথা, বেদনা বা প্রতারণার ইতিহাস। এ জীবনে কারো কাছে আশা করতে নেই, আশা অপূরণীয়,মানুষের সাধ্য কি তা পূরণ করে? মানুষকে ভালো থাকতে হয়। জানতে হয় ভালো থাকবার মন্ত্র। নিজেকে সুখী করতে গেলে স্বার্থপরের মত শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবে মানুষ। ভাবতে হয় এমনি........দেখুন পৃথিবী কত সুন্দর। ফুল পাখি, হাওয়া সবকিছু কত ভালো লাগার। মানুষের সাধ্য কি তাদের মত আনন্দ ছড়ায়?
কাঁদবেন না নীলান্তী। কার জন্য কাঁদছেন? কার উপর এ অভিমান?
অভিমান ভুলুন। সবুজ এ তৃনশজ্জায় শুয়ে আকাশ দেখুন। ভয় পাবেন না । আপনাকে আমি ছোঁবনা শুধু আপনার দুঃখটুকু ছুঁয়ে দিতে চাই। খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও বাস্প হয়ে উড়ে যাক তারা ওই আকাশের মেঘে।
জমে থাকুক তারা, মেঘ হয়ে,,,,,,,,,,,,,,,
পাখিদের সাথে উড়ে যাক তারা দূর দূর দেশে
মেঘালয় পাহাড় ছুঁয়ে নীলাচল পার হয়ে ফিরে আসুক নাহয় আবার........
কোনো তাপ দগ্ধরাতে গলে যাক সেই মেঘমালা
ঝরে পড়ুক কান্নাগুলো
আমার বুকের পরে
আমি কান পেতে শুনবো সেই কান্নার সুর
আর তাই কিছু খুব অল্প কিছু সময়ের জন্য হলেও দুঃখ ভুলুন নীলান্তিকা..........
ভুলুন সব দুঃখ, কষ্ট ব্যাথা, বেদনা বা অভিমানের ইতিহাস ........
উৎসঃ সামহোয়ারইনব্লগ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন