|
শাহ আজিজ
|
|
তাজমহলে ঘুমিয়ে নিলাম দুপুরবেলাটা
27 December 2014, Saturday
তাজমহলের গেটে দাড়িয়ে মনে হল একটা বিশাল ক্যালেন্ডারের সামনে দাড়িয়ে আমরা। এপ্রিলের শুরুতে ১৯৮২ সালে আমরা দশজন ভারতের বিভিন্ন এলাকা সফর শেষে আগ্রা পৌঁছেছি আজ ভোরে। মুঘলদের নানা কীর্তি গাঁথা দেখে শেষ এই তাজে। ব্যাগ সাথেই ছিল সবার। আমরা পূর্ব প্লাজার ছায়াতে ব্যাগ রেখে ঠিক হল এক বা দুজন থাকবে ব্যাগ পাহারার জন্য , বাকিরা দেখা শেষ করলেই এরা শুরু করবে। অনেক মানুষ আমাদের কাছ দিয়ে যাতায়াত করছে । আমি থেকে গেলাম। শুয়ে পড়লাম একটা ব্যাগ মাথার নিচে দিয়ে। এতো ক্লান্ত লাগছে , সেই ভোর রাত ৪ টায় উঠে দিল্লী রেল স্টেশন । এক্সপ্রেস ট্রেনে আগ্রা। নিশ্চিন্তে ঘুমালাম । যখন ঘুম ভাংলো তখন সূর্য আরও পশ্চিমে হেলে গেছে আর পাশে আরও দুতিন জন শুয়ে আছে। আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে মাথা পেছনে নামিয়ে উলটো হয়ে তাজের পূর্ব দেওয়াল দেখতে লাগলাম । বেশ মজা লাগলো দেখতে। শরীরটা ঝর ঝর লাগছে। তাজের উপরের অংশ থেকে আকাশের নীল আর নিচের খাড়া সমান দেয়াল বেশ ভালো লাগছিল। একটু ডান বাম করে তাজের মুল ভবনের নকশা আর অন্যান্য সাজগোজ দেখলাম। এভাবে চিত হয়ে উলটো দেখার একটা আলাদা অনুভুতি আছে।একজন হাক দিল ওই তুই কি দেখবিনা? উঠে পড়লাম। শেষ হওয়া সিগারেট মেঝেতে ফেলিনি। ওটা নিয়ে পেছনের বারান্দা দিয়ে যমুনায় ফেললাম। ভিতরে বাইরে বাগানে নেমে নানা অ্যাঙ্গেলে তাজকে গিলে ফেললাম। অপূর্ব নকশা কাটা কাজ। মিনারের নিচে দাড়িয়ে ওটা বাকা কিনা মাথা উচিয়ে পরখ করলাম। বিকেলে তাজে লোক ভর্তি। আমি এবার পিছনে সেই যমুনার রেলিং ধরে নিচের শুকিয়ে যাওয়া পানি আর অপর পাড়ের লালমাটির বাহার দেখতে শুরু করলাম। আবার সিগারেট। এবার নজর দিলাম মুল ভবনের পেছনের অংশে। সামনের মতো প্রায় একই তবে ঝুল বারান্দা আছে। সম্ভবত ওখানে দাড়িয়ে বাদশারা যমুনা দেখতেন। জুন জুলাইয়ে পানির স্রোত , উচ্চতা বাড়ে। মাথা ঝুকিয়ে নিচু হয়ে তাজের গায়ে পানির সর্বোচ্চ দাগ দেখতে পেলাম । আবারো একপাক ঘুরে দেখে নিয়ে আমরা ব্যাগ নিয়ে রাত কাটানোর আস্তানা খোজার আশায় বেরিয়ে পড়লাম। তাজের গেটে আবারো মুখ ফিরিয়ে দেখলাম আর বললাম তোমায় আবারো দেখতে আসব প্রিয়ে।
উৎসঃ সামহোয়ারইনব্লগ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন