চমক হাসান
বুয়েটের চলমান ছাত্ররাজনীতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক শিক্ষার্থী, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গবেষক, লেখক, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও শিক্ষক চমক হাসান।
বুধবার রাতে দেওয়া ওই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
পোস্টের শুরুতে চমক হাসান লিখেছেন, ‘আমি বুয়েটের অ্যালামনাইদের একজন হিসেবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকা উচিত। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র শিবির- কিছুরই দরকার নাই।’
কারণ উল্লেখ করে চমক লিখেছেন, ‘কারণ দেখানো খুব সহজ। দুই কলামের একটা সারণি বানানো হোক। বামপাশে থাকুক ছাত্ররাজনীতির উপস্থিতি বুয়েটে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন উপহার দিয়েছে তার একটা তালিকা, আর ডানপাশে থাকুক ছাত্ররাজনীতির উপস্থিতির কারণে কী কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছে ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসন, তার একটা খতিয়ান। ডানপাশে আবরার, সনি এই নামগুলোর কোনো একটার যে ভার, সেটা বামপাশের সম্মিলিত ভারের চেয়েও বহুগুণে বেশি। এরপরেও ডানদিকের তালিকায় র্যাগিং, অত্যাচার, চাঁদাবাজি, ক্ষমতা প্রদর্শনী, অন্যায় সুবিধাভোগ– এসবের উপাখ্যান পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যাওয়া যাবে। তাহলে ছাত্ররাজনীতি কেন চাইবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা?’
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে চমক লিখেছেন, ‘ডিপার্টমেন্টের প্রিয় জুনিয়র আবরারকে যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল, মন থেকে সেই ক্ষত এখনও মুছে যায়নি। চেনা জুনিয়রদের সাথে যত আলাপ হয়েছে সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আবরার-হত্যার ঘটনার পর যখন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়, তারপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক শান্তিতে ছিল, আছে। কোনো যুক্তিতেই আবার ঐ নরক ফিরিয়ে আনার মানে হয় না।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ছাত্রলীগ না থাকলে শিবির মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে- এটাও মেনে নেওয়ার মতো যুক্তি না। সহজ কথা- ছাত্ররাজনীতি নেই মানে কোনো সংগঠনেরই কার্যক্রম নেই। ছাত্রলীগও না, শিবিরও না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাইকেই প্রতিহত করবে। গত কদিনে সবার সাহস আর ঐক্য দেখে তাদের প্রতি এই ভরসা আমার আছে।’
সবশেষ চমক লিখেছেন, ‘একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা যে ঐক্য দেখিয়েছে, সেটা অসাধারণ। মন থেকে ভালোবাসা আর টুপিখোলা সালাম! আমার পূর্ণ সমর্থন রইলো তোমাদের জন্য।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন