বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বনাশ `ঢাকার’ জন্য কাদের সাহেবরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
উপজেলা নির্বাচন বর্জনের দাবিতে বুধবার রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় লিফলেট বিতরণ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এক প্রচণ্ড পরিস্থিতির মধ্যে দেশ পতিত হয়েছে। আর্থিক অবস্থা চরম সংকটাপন্ন। বর্তমানে ন্যাশনাল রিজার্ভ এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৩ বিলিয়ন ডলারে। প্রয়োজনীয় খাদ্য কেনার টাকা আমাদের নেই।
ইসরায়েলের সঙ্গে বিএনপির গোপন সম্পর্ক রয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, আমরা তো যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিনির নির্যাতিতদের পক্ষে কথা বলে আসছি। কিন্তু আপনাদের কী পরিস্থিতি। ইসরায়েলের প্লেন বাংলাদেশে নেমে কী দিয়ে গেছে। এটা মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি প্রশ্ন রেখে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে কী হচ্ছে সেটি কি আপনি বলতে পারবেন?
পরে নিজেই বলেন, আপনারা সবই জানেন, আপনাদের ভিতরে যে অনাচার, ভিতরে যে চক্রান্ত চলছে, যে লুটপাট চলছে তা আড়াল করতে বিভ্রান্তমূলক কথা বলে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে দিতে চান। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার অন্য দেশে চলে গেছে। আজকে অন্য দেশের একটি পত্রিকায় এসেছে।
সম্প্রতি বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে বড় ধরনের কোনো ঘটনা হয়ত ঘটছে সেটি আজ প্রতিদিন ফুটে উঠেছে।
রিজভীর মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকার আমানত যেখানে থাকে, সঞ্চয়ের আমানতের গ্যারান্টি যেখানে থাকে সেই বাংলাদেশ ব্যাংকে কী পরিমাণ চুরি এবং ডাকাতি হয়েছে সেটি যাতে না জানতে পারে সেজন্য সাংবাদিকদের জন্য বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। আর এখন আস্তে আস্তে বুঝা যাচ্ছে কী পরিমাণ লুটপাট চুরি করে কত বড় দেশের সর্বনাশ করা হয়েছে। এখন আস্তে আস্তে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে। এগুলো ঢাকার জন্য হাছান মাহমুদ এবং ওবায়দুল কাদের সাহেবরা বিভিন্ন ধরনের কথা বলে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করছেন।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ডোনাল্ড লু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তাকে নিয়ে কতই না কথা বললেন ওবায়দুল কাদেররা। এবারে বিএনপিকে নাকি ক্ষমতায় নিয়ে আসবে অথচ বিএনপির কোনো নেতা এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। পরে দেখলাম সরকারের এক উপদেষ্টার বাসায় ডোনাল্ড লু বৈঠক করলেন। সরকারের লোকজন গোপনে গোপনে তার হাত-পা ধরলেন কি না? কারণ জানতে পারলাম মার্কিন কোম্পানিগুলোর দেনা পরিশোধের জন্য ডোনাল্ড লু চাপ দিয়েছেন। ডোনাল্ড লু র কাছে হাত-পা ধরছে, অনুনয়-বিনিময় করছে এ সরকারের লোকজন। তারা মুখে বলছে একটা করছে আরেকটা। এমন দ্বিচারিতা ও ভণ্ডামি করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে এরা। সুতরাং এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন এ দেশের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, এদের ক্ষমতাচ্যুত করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হলে জনগণের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে। আগামী ২১ তারিখ যে উপজেলা নির্বাচন হবে তাও জনগণ বর্জন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও মিডিয়া সেলের সদস্য শাম্মী আক্তার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুর রহমান, সাদরেজ জামান, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তারেক উজ জামান তারেক, ওমর ফারুক কাওসার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক হাসান, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ঢাকা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব সজীব রায়হান, তিতুমীরের যুগ্ম সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক পাটোয়ারি ও ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ পরানসহ দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন