নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার রাতে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে তাদের নাম ও কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেবিষয়ে কিছু জানায়নি সংস্থাটি।
এক বার্তায় ডিএমপি জানিয়েছে, পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসী-গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) কাছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মিডিয়া ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নতুন গড়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠন। জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ-জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম ভেঙে এই সংগঠন গড়ে ওঠে। শারক্বীয়া তাদের সদস্যদের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ট্রেনিং দিয়ে ২০২২ সালে আলোচনায় আসে। কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া কিছু তরুণের খোঁজে নেমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংগঠনটির ব্যাপারে জানতে পারে।
জঙ্গি সংগঠনের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৫৫ তরুণ ঘর ছাড়েন। তাদের মধ্যে ৪৬ জনকে বিভিন্ন অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুজন পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণের সময় মারা গেছেন বলে খবর আছে। আর বাকি সাত তরুণ এখনো নিরুদ্দেশ। তাদের মধ্যে থেকে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো কি-না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিখোঁজ সাতজন হলেন- নেত্রকোনার মো. আল মামুন, কুমিল্লার আব্দুর রাজ্জাক খান, পটুয়াখালীর নুর মোহাম্মদ জুয়েল, ঝালকাঠির মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. নাজমুল আলম নাহিদ, সিলেটের শিব্বির আহমদ এবং কুমিল্লার নাহিদ।
২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর এলাকা থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। তাদের পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। নিখোঁজদের উদ্ধারে গিয়ে র্যাব ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে নতুন জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় থাকার তথ্য পায়।
র্যাব জানতে পারে, এই সংগঠনের সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের সহায়তায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ওই বছরের অক্টোবর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এখন পর্যন্ত জঙ্গি সংগঠনটির আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদসহ ৮২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ে অবস্থান, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য কার্যক্রমে জঙ্গিদের সহায়তার জন্য কেএনএফের ১৭ সদস্য গ্রেপ্তার হন। উদ্ধার করা হয় বিপুল বিস্ফোরক ও অস্ত্র।
দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। ২০২৩ সালের ৯ আগস্ট জঙ্গি সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ঢাকাটাইমস
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন